Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

ইসরাইলের সমালোচনা করায় চাকরি গেল সাংবাদিকের

ইসরাইলের সমালোচনা করে চাকরি হারালেন সাংবাদিক রুলা জেব্রেল। পশ্চিমা মিডিয়ায় ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর যে পরিমাণ কভারেজ দেয়া হয়, সেই একই রকম গুরুত্ব দেয়া হয় না ফিলিস্তিনিদের। এমন মন্তব্য করে তিনি পশ্চিমা মিডিয়ার তীব্র সমালোচনা করেছেন। ব্যস, তার নামে একটি ই-মেইল পাঠিয়ে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তাতে তাকে বলা হয়েছে, আপনাকে আর আমাদের কন্ট্রিবিউটর হিসেবে দেখা যাবে না। এ খবর দিয়েছে অনলাইন গালফ নিউজ।

এতে বলা হয়, রুলা জেব্রেল একজন ফিলিস্তিনি। তার জন্ম হাইফাতে। তিনি এখন ইসরাইলের নাগরিক। এমএসএনবিসির একজন কন্ট্রিবিউটর হিসেবে কাজ করেন। কিন্তু তা করতে গিয়ে তিনি পশ্চিমা মিডিয়ার পক্ষপাতিত্ব দেখতে পান। তাই তিনি আর চুপ করে থাকতে পারেননি।

chardike-ad

image_92291_0সাহস করে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের মিডিয়া পক্ষপাতদুষ্ট। রুলা জেব্রেল ফিলিস্তিনের হাইফায় জন্মগ্রহণ করলেও পরে তিনি বৃত্তি নিয়ে ইতালি চলে যান। তারপর থেকে ইতালি ও মিশরের রাজনীতি নিয়ে সাংবাদিকতায় একটি দীর্ঘ ও সফল ক্যারিয়ার গড়ে তোলেন। সর্বশেষ তিনি এমএসএনবিসি’র কন্ট্রিবিউটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।

তিনি রোনান ফারো ডেইলিতে এক সাক্ষাৎকার দিয়ে তোলপাড় করে দেন মিডিয়া। সঙ্গে সঙ্গে তার ক্যারিয়ারেও উত্তাপ লাগে। তিনি মার্কিন মিডিয়ার সমালোচনা করেন। সমালোচনা করেন নিজের নিউজ নেটওয়ার্কেরও।

বলেন, তার নেটওয়ার্কও ফিলিস্তিনি ইস্যুতে পক্ষপাতী মনোভাব দেখায়। তিনি বলেন, যখন ফিলিস্তিনি ইস্যু আসে তখন এ বিষয়ে পক্ষপাতিত্ব করা হয়। দেখুন প্রতিদিন কী পরিমাণ সময় দেয়া হয় বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে। তাকে কত বেশি সময় টেলিভিশনে কভার করা হয়। আমি দেখিনি কোনো চ্যানেল একজন ফিলিস্তিনির সাক্ষাৎকার নিয়েছে কখনও। এ সময় প্রশ্নকর্তা তাকে পাল্টা প্রশ্ন করেন, না। ফিলিস্তিনিদের বিষয়, তাদের কথা তো নেটওয়ার্কে উঠে আসছে।

জবাবে রুলা জেব্রেল বলেন, হতে পারে সেটা সত্য। তবে ফিলিস্তিনিদের জন্য সময় বরাদ্দ থাকে ৩০ সেকেন্ড। আর নেতানিয়াহুর জন্য ২৫ মিনিট, আধা ঘণ্টা থাকে বাফতালি বেনেট ও অন্যদের জন্য। আয়মান মোহিলদিন ফিলিস্তিনি পক্ষ কভার করছেন। আমরা আসলে হতাশ। এটা অতিরিক্ত ফিলিস্তিনি বিষয়। আমরা এমনটাও পছন্দ করি না। আমরা তাকে ফিরিয়ে আনবো। সামাজিক মিডিয়াকে ধন্যবাদ।

এ সাক্ষাৎকার দেয়ার পরই জেব্রেল একটি ই-মেইল পান। তাতে এমএসএনবিসি’তে তাকে ভবিষ্যতে আর দেখা যাবে না বলে জানিয়ে দেয়া হয়। তিনি এর কারণ জানতে চেয়েছেন। জানতে চেয়েছেন তিনি যে কথা বলেছেন তার জন্য কি তার বিরুদ্ধে এমন ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে? জবাবে কোনো কথাই বলেনি কর্তৃপক্ষ। রুলা

জেব্রেল বলেছেন, আমি মিশরে কাজ করেছি। কিন্তু সেখানে যখন নির্যাতন দেখতে পাই এবং সে বিষয়ে কথা বলতে শুরু করি তখন আমাকে সেখান থেকে প্রত্যাহার করা হয়। যখন আমি ইতালির সাবেক প্রধানমন্ত্রী সিলভিও বেরলুসকোনির দুর্নীতির কথা আমার টিভি শোতে তুলে ধরি তখন তা বন্ধ করে দেয়া হয়। আমি আমাদের কাছ থেকে, যুক্তরাষ্ট্রের উদার মিডিয়ার কাছ থেকে এমনটা আশা করিনি।

এ সময়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সুপরিচিত কিছু পণ্ডিতের গবেষণার রিপোর্ট তুলে ধরেন। তাতে দেখানো হয় যে যুক্তরাষ্ট্রের মিডিয়া পক্ষপাতী।

তিনি বলেন, শুধু সিএনএনে ২০১২ সালে ৪৫ ইসরাইলি কর্মকর্তার সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছে। এ সময়ে সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছে ১১ ফিলিস্তিনির। এ বছর ইসরাইলের ১৭ রাজনীতিকের সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছে। কিন্তু তার বিপরীতে মাত্র একজন ফিলিস্তিনির সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছে। সুতরাং এ ইস্যুতে আমরা পশ্চাৎদিকে ধাবিত হচ্ছি। – ওয়েবসাইট।