আত্মার কাছাকাছি যে বসবাস করে, সে আত্মার আত্মীয়; বন্ধু বা স্বজন। `বন্ধু’ দুটি অরের একটি শব্দ। এই শব্দের মাঝে মিশে আছে যেনও পৃথিবীর সকল প্রশান্তির ছায়া, নির্ভরতার বিশ্বস্ত নাম। বন্ধু আর বন্ধন একই মূদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। পাকাপোক্ত বন্ধনের ভিত্তিই বন্ধুত্ব।
মানুষ একা বাস করতে পারে না। সমাজে বাস করতে হলে, প্রতিদিন কারো না কারো মুখাপেক্ষী হতে হয়। কাউকে আপন করতে হয় আবার কাউকে পর করতে হয়। এ সবই প্রয়োজনের তাগিদে। তবে বন্ধুত্ব এমন একটি বন্ধন, এতে থাকে শর্ত ও স্বার্থহীন ভালোবাসা। বয়েসের অবস্থান, পরিবেশ, সাধ ও সাধ্যের সমন্বয়ে বন্ধুত্বের ধরণও হয় ভিন্ন ভিন্ন।
`সুসময়ে বন্ধু বটে অনেকেই হয়, অসময়ে হায় হায় কেউ কারো নয়’- এই বাস্তবতাকে উপেক্ষা করতে পারলেই প্রকৃত বন্ধুত্ব গড়ে তোলা সম্ভব। যুগ পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বন্ধুত্বের ধরণ পাল্টে গেছে বহুলাংশে। যুগ পাল্টালেও বন্ধুত্বের বন্ধন আদি ও অকৃত্রিম। প্রকৃতির চিরন্তণ নিয়মে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে; মানুষে-মানুষে, ছেলে-মেয়েতে, ছাত্র-শিক্ষকে, বাবা-মায়ে, পাড়া-প্রতিবেশীতে।
জীবনের পথ পরিক্রমায় শৈশব, কৈশর, ছাত্রজীবন, কর্মক্ষেত্রে, সংসার ও সমাজ জীবনে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে অনেকের সঙ্গে। প্রকৃত ও যোগ্য বন্ধু নির্বাচন একটি সঠিক সিদ্ধান্ত জীবনের জন্য প্রয়োজন। বন্ধু নির্বাচনে ভুল করলে জীবনে ছন্দ পতন ঘটে। ছেলে মেয়ে প্রত্যেকেরই উচিৎ সঠিক ও যোগ্য বন্ধু নির্বাচন করা। যে যতটুকু ভার বহন করতে পারে, তার ততটুকু বোঝা উত্তলন করা উচিৎ।
ডিজিটাল শতাব্দীতে এসে পুরো পৃখিবীটা একটা সমাজে পরিণত হয়ে যাচ্ছে। বন্ধুত্ব ছড়িয়ে পরছে দেশের সীমানা ছাড়িয়ে দূর তেপান্তরের রাজ্যে। গোটা বিশ্ব হাতের মুঠোয় চলে এসেছে প্রযুক্তির কল্যাণে। পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে বসে ইন্টারনেটের মাধ্যমে যেকোনো দেশের মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব করা যায় অনায়াসে।
বন্ধুত্বের পরিধী আজ বিশ্বময়। বন্ধুত্ব এমন এক আত্মিক সম্পর্ক; এ সম্পর্কের গাণিতিক বা জ্যামিতিক ব্যাখ্যা দাঁড় করানো সম্ভব নয়। সৃষ্টির শুরুতে বন্ধুত্ব ছিল, এখনও আছে, থাকবে অনন্তকাল। ওয়েবসাইট