বুধবার । জুলাই ১৬, ২০২৫
বাংলা টেলিগ্রাফ ডেস্ক শিক্ষা ২২ জুন ২০২৫, ১০:৪২ পূর্বাহ্ন
শেয়ার

অস্ট্রেলিয়ায় ব্যবহার হচ্ছে বাংলাদেশি তরুণের তৈরি ‘রোস্টারিং অ্যাপ’


arnobসামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কদিন ধরে ঘুরছে একটি ছবি—বাংলাদেশের পতাকা হাতে এক তরুণ দাঁড়িয়ে আছেন। তাঁর নাম অর্ণব বড়ুয়া। ছবির ক্যাপশনে লেখা, তিনি অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি অ্যাপ তৈরি করেছেন।

বর্তমানে অর্ণব পড়ছেন ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটির সিডনি ক্যাম্পাসে, তথ্যপ্রযুক্তি নিয়ে। তবে আগে তিনি ছিলেন ব্যবসায় শিক্ষার ছাত্র।  অর্ণব বলেন, ‘আমি কিন্তু ঢাকার নটর ডেম কলেজ থেকে কমার্স নিয়ে এইচএসসি পাস করেছি।’ প্রযুক্তির প্রতি টান থেকেই নিজে নিজেই শিখেছেন প্রোগ্রামিং ও ওয়েব ডেভেলপমেন্ট।

‘অ্যাভোকাডো’ নামে একটি উদ্যোগের অধীনে অর্ণব তৈরি করেছেন ৫০টিরও বেশি ওয়েবসাইট ও টুল। বর্তমানে আলোচনায় থাকা অ্যাপটির নাম SRG (Student Representative Group) Rostering App। এটি একটি স্বয়ংক্রিয় শিফট ব্যবস্থাপনা টুল, যা এখন ব্যবহার হচ্ছে ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটির সিডনি ক্যাম্পাসে।

‘প্রথমে ভাবিইনি এটা এত দূর যাবে,’ বলেন অর্ণব। ‘চেয়েছিলাম শুধু মাইক্রোসফট এক্সেলের বিকল্প তৈরি করতে—যাতে শিফট বণ্টন, অনুমোদন, পিডিএফ এক্সপোর্টসহ সবকিছু এক ক্লিকে সম্ভব হয়।’ তার দাবি, এই অ্যাপ ব্যবহারকারীদের কাজ ৮০ শতাংশ পর্যন্ত সহজ করেছে। ভবিষ্যতে তিনি এতে যুক্ত করতে চান কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, যাতে ব্যবহারকারীরা শুধুমাত্র প্রম্পট দিয়ে কাজ করাতে পারেন, কোনো কোডিং ছাড়াই।

অর্ণবের স্বপ্ন, তার অ্যাপ যেন শুধু বিশ্ববিদ্যালয়েই নয়, বরং ছোট ব্যবসা, হাসপাতাল কিংবা অলাভজনক সংস্থায়ও ব্যবহারযোগ্য হয়। প্রশ্ন করা হয়েছিল, ‘অ্যাপে কি বাংলাদেশের কোনো চিহ্ন আছে?’ উত্তরে তাঁর কণ্ঠে গর্ব ঝরে পড়ে, ‘অবশ্যই। ফুটারে লাল-সবুজ পতাকা দিয়েছি। এটা আমার অহংকার।’

তবে অর্ণব চান না, কেউ বিষয়টি নিয়ে অতিরিক্ত প্রশংসা করুক। বলেন, ‘আমি যখন পোস্ট করি, কেউ বলেন আমি এক্সেলকে হারিয়ে দিয়েছি, কেউ বলেন দেশি বিল গেটস। আমি তা মনে করি না। রোস্টারিং অ্যাপ অনেক আছে। তবে আমি গর্ব করি এই ভেবে যে, একজন বাংলাদেশি তরুণের বানানো একটি অ্যাপ এখন বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবহৃত হচ্ছে। আমি তো এখনো ফার্স্ট ইয়ারে পড়ি। কাজ করছি, দেখা যাক কোথায় যাই।’

সবশেষে এক প্রশ্ন করা হয়—অ্যাভোকাডো নামটাই বা এল কোথা থেকে? অর্ণব হেসে বলেন, ‘স্টিভ জবসের ভক্ত আমি। তিনি যেমন “অ্যাপল” দিয়েছিলেন, আমি চেয়েছি আমার ব্র্যান্ডের নামও যেন কোনো ফলের নামে হয়। অ্যাভোকাডো যেমন পুষ্টিকর ও ব্যতিক্রমী, আমি চাই প্রযুক্তিও তেমন উপকারী হোক।’