ফাইল ছবি
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতার পাশাপাশি অনেকেই দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে বা অন্য পেশায় যুক্ত ছিলেন। এত দিন এ বিষয়ে কোনো স্পষ্ট আইনি নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও, নতুন এমপিও নীতিমালায় এবার কঠোরভাবে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। বলা হয়েছে—এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা আর কোনোভাবেই অন্য চাকরি বা আর্থিক লাভজনক কোনো পেশায় নিয়োজিত থাকতে পারবেন না।
গতকাল রবিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ বেসরকারি স্কুল ও কলেজের জনবল কাঠামো এবং এমপিও নীতিমালা–২০২৫ প্রকাশ করে। এতে শিক্ষকদের আর্থিক লাভজনক পেশায় যুক্ত থাকা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
নীতিমালায় স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে—সাংবাদিকতা, আইন পেশা, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বা যে কোনো সংস্থায় বেতন/ভাতা/সম্মানীর বিনিময়ে কাজ করা যাবে না। এগুলোকে ‘আর্থিক লাভজনক’ পেশা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
নীতিমালার ১১.১৭-এর ‘ক’ ধারায় বলা হয়েছে, “এমপিওভুক্ত কোনো শিক্ষক-কর্মচারী একই সঙ্গে একাধিক পদে বা আর্থিক লাভজনক কোনো চাকরিতে নিয়োজিত থাকতে পারবে না।”
এ নিয়ম লঙ্ঘিত হলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক-কর্মচারীর এমপিও বাতিলসহ প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে সরকার।
‘খ’ বিধিতে ‘আর্থিক লাভজনক’ পদ বলতে সরকার প্রদত্ত যেকোনো বেতন/ভাতা/সম্মানী এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, সংস্থা, বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান, সাংবাদিকতা বা আইন পেশায় কর্মের বিনিময়ে পাওয়া যেকোনো আর্থিক সুবিধাকেই বোঝানো হয়েছে।
অন্যদিকে, নীতিমালার বেতন-ভাতার সরকারি অংশ পাওয়ার ক্ষেত্রে নতুন শর্ত যোগ করা হয়েছে। কোনো প্রতিষ্ঠানকে অবশ্যই নির্দিষ্ট সংখ্যক পরীক্ষার্থী ও ন্যূনতম পাসের হার বজায় রাখতে হবে।
পদোন্নতি সম্পর্কেও নীতিমালায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। এমপিওভুক্ত সহকারী শিক্ষকরা দশম গ্রেডে ১০ বছর চাকরি শেষে সন্তোষজনক কর্মসম্পাদনের ভিত্তিতে ‘সিনিয়র শিক্ষক’ পদে উন্নীত হবেন। তবে গ্রন্থাগার ও তথ্য বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী শিক্ষকরা উচ্চতর গ্রেডের আর্থিক সুবিধা পেলেও সিনিয়র শিক্ষক হিসেবে পদোন্নতি পাবেন না।
বর্তমানে সহকারী শিক্ষক এমপিওভুক্তির পর দশম গ্রেডে ১০ বছরের অভিজ্ঞতা অর্জন করলে বেতন-গ্রেড ৯ (২২,০০০–৫৩,০৬০ টাকা) অনুযায়ী সুবিধা পাবেন।
নতুন নীতিমালার এই বিধানগুলো কার্যকর হলে বেসরকারি শিক্ষকদের বাইরের আয়ের সুযোগ সীমিত হয়ে আসবে—এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
