এক সময় প্লেনভ্রমণ ছিল শুধুই বিলাসিতা। কিন্তু সময়ের পরিবর্তনে এটি এখন বহু মানুষের দৈনন্দিন জীবনের অপরিহার্য অংশে পরিণত হয়েছে। অফিসের কাজে, ছুটির দিনে বেড়াতে, প্রিয়জনের সঙ্গে দেখা করতে কিংবা উচ্চশিক্ষার জন্য—নানান কারণেই প্রতিবছর কোটি কোটি মানুষ আকাশপথে যাতায়াত করেন।
বিশ্বজুড়ে প্লেনযাত্রীর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। তবে কিছু দেশ রয়েছে, যেখানে এই সংখ্যা তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি। সাধারণত দেশের আয়তন, জনসংখ্যা, বাণিজ্যিক কার্যক্রম ও পর্যটনখাতের ব্যাপকতা এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
ওয়ার্ল্ড পপুলেশন রিভিউয়ের সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের যেসব দেশে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক যাত্রী প্লেনে ভ্রমণ করেন, সেগুলো হলো-
১. যুক্তরাষ্ট্র – বছরে ৬৬ কোটি ৬১ লাখ যাত্রী: বিশাল ভৌগোলিক আয়তনের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে প্লেনই সবচেয়ে দ্রুত ও কার্যকর যানবাহন। আটলান্টা, ডালাস ও লস অ্যাঞ্জেলেসের মতো ব্যস্ততম বিমানবন্দরগুলো দেশটির আকাশপথকে বিশ্বের সবচেয়ে ব্যস্ততম করে তুলেছে।
২. চীন – ৪৪ কোটি ৩ লাখ যাত্রী: চীনের বিপুল জনসংখ্যা ও প্রবৃদ্ধিশীল অর্থনীতি বিমানভ্রমণকে দৈনন্দিন জীবনের একটি অংশ করে তুলেছে। বেইজিং, সাংহাই ও গুয়াংঝুর মতো শহরগুলো নিয়মিত যাত্রীচাপে সরব থাকে।
৩. রাশিয়া – ৯ কোটি ৬৮ লাখ যাত্রী: বিশাল ভূখণ্ডের দেশ রাশিয়ায় অনেক জায়গায় রেল বা সড়কপথে যাতায়াত সম্ভব নয়, তাই প্লেনে যাত্রা অপরিহার্য। বছরে প্রায় ৯ কোটি ৭০ লাখ যাত্রী রাশিয়ার অভ্যন্তরে বা আন্তর্জাতিকভাবে যাতায়াত করেন।
৪. ভারত – ৮ কোটি ৪০ লাখ যাত্রী: ভারতের আকাশ পরিবহন শিল্প দ্রুত বিকশিত হচ্ছে। টিকিটের দাম কমে আসা ও নতুন শহরের সঙ্গে সংযুক্তির ফলে প্লেনযাত্রা সাধারণ মানুষের জন্য সহজতর হয়েছে।
৫. আয়ারল্যান্ড – ৭ কোটি ৪১ লাখ যাত্রী: জনসংখ্যায় ছোট হলেও আন্তর্জাতিক সংযোগ ও ট্রানজিট হাবে পরিণত হওয়ার কারণে আয়ারল্যান্ড প্রতি বছর বিপুল সংখ্যক যাত্রী সামাল দেয়।
৬. ব্রাজিল – ৬ কোটি ১৯ লাখ যাত্রী: বড় শহরগুলোর মধ্যে দূরত্ব বেশি হওয়ায় প্লেনই ব্রাজিলে ভ্রমণের সবচেয়ে সহজ উপায়। সাও পাওলো ও রিও দে জেনিরো দেশটির প্রধান বিমানযাত্রা কেন্দ্র।
৭. মেক্সিকো – ৫ কোটি ৪২ লাখ যাত্রী: পর্যটন ও নগরায়ণের মিশ্র প্রভাব মেক্সিকোর আকাশ পরিবহনকে সারা বছরই ব্যস্ত রাখে। ক্যানকুন, গুয়াদালাহারা ও মেক্সিকো সিটির বিমানবন্দরগুলো প্রতি বছর লাখো যাত্রী বহন করে।
৮. জাপান – ৪ কোটি ৫৪ লাখ যাত্রী: বুলেট ট্রেনের দেশ জাপানেও প্লেন ভ্রমণ, বিশেষ করে দ্বীপগুলোর মধ্যে যোগাযোগের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বছরে সাড়ে চার কোটির বেশি যাত্রী জাপানের আকাশপথ ব্যবহার করেন।
৯. স্পেন – ৪ কোটি ৩৪ লাখ যাত্রী: পর্যটনের জন্য জনপ্রিয় দেশ স্পেনে মাদ্রিদ, বার্সেলোনা ও মায়োর্কার মতো গন্তব্যগুলো প্লেনযাত্রীদের চাপে সারা বছরই ব্যস্ত থাকে।
১০. দক্ষিণ কোরিয়া – ৩ কোটি ৪০ লাখ যাত্রী: ছোট দেশ হওয়া সত্ত্বেও, বিশেষ করে সিউল–জেজু দ্বীপ রুটের কারণে দক্ষিণ কোরিয়ায় প্লেন ভ্রমণের সংখ্যা অনেক বেশি।
সূত্র: ওয়ার্ল্ড পপুলেশন রিভিউ




































