
নির্মাণাধীন ১৯ তলা ভবন থেকে পড়ে নিহত হন সফিক। ছবি: সংগৃহীত
উন্নত জীবনের স্বপ্ন নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ বাহরাইনে পাড়ি জমিয়েছিলেন চাঁদপুরের কচুয়া পৌরসভার কোয়া-চাঁদপুর গ্রামের মো. সফিকুল ইসলাম (৪০)। কিন্তু সেই স্বপ্ন থেমে গেল এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনায়। সোমবার বাংলাদেশ সময় সকাল ৯টার দিকে নির্মাণাধীন একটি ১৯ তলা ভবনের সেফটি ট্যাংকের কাজ করার সময় নিচে পড়ে গুরুতর আহত হন তিনি এবং হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত সফিকুল ইসলাম স্থানীয় বাচ্চু মিয়ার ছেলে। তিনি স্ত্রী, ১১ বছরের ছেলে সানজিদ আহমেদ রিয়াদ ও ৫ বছরের মেয়ে সায়মাকে রেখে গেছেন। প্রবাস জীবনের দীর্ঘ ২২ বছর কাটিয়েছেন সফিকুল ইসলাম। প্রায় এক বছর আগে তিনি দেশে এসে পরিবারের সঙ্গে কিছু সময় কাটিয়ে আবার জীবিকার তাগিদে বাহরাইনে ফিরে যান। পরিবারের সদস্যরা জানান, আরও এক বছর পর দেশে স্থায়ীভাবে ফেরার পরিকল্পনা ছিল তার।
ঘটনার খবর গ্রামে পৌঁছাতেই শোকের ছায়া নেমে আসে পরিবার ও এলাকায়। নিহতের বাবা বাচ্চু মিয়া অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে বলেন, “আমার ছেলের অনেক স্বপ্ন ছিল—দেশে ফিরে নিজের বাড়ি করবে, সন্তানদের মানুষ করবে। সব স্বপ্ন এখন শেষ। শুধু লাশ ফিরবে দেশে।”
স্থানীয়রা জানান, সফিকুল ইসলাম ছিলেন ভদ্র, পরিশ্রমী ও সবার প্রিয় একজন মানুষ। তার অকাল মৃত্যুতে পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। নিহতের ছোট ভাই ইসমাইল হোসেন বলেন, “সরকার ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রতি অনুরোধ—আমার ভাইয়ের মরদেহ যেন দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হয়। আমরা সরকারি সহযোগিতা কামনা করছি।”
কচুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ হেলাল চৌধুরী বলেন, “পরিবারের পক্ষ থেকে সহায়তার আবেদন করা হলে মরদেহ দেশে আনার জন্য প্রশাসনিক সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হবে।”
সফিকুল ইসলামের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় পরিবার ও এলাকার মানুষ গভীর শোকের ছায়ায় অভিভূত। প্রবাসে তার দীর্ঘদিনের পরিশ্রম, পরিবারের প্রতি তার দায়িত্ববোধ এবং এলাকার মানুষের মধ্যে তার ভালোবাসা গভীরভাবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।









































