Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

316ঢাকা-আবুধাবির মধ্যে বাণিজ্য, বিনিয়োগসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদারের লক্ষ্যে তিন দিনের সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামীকাল শনিবার সকালে সংযুক্ত আরব আমিরাত যাচ্ছেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী আজ শুক্রবার তাঁর দপ্তরে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান। প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন সফরের পাশাপাশি আগামী ২৮ থেকে ৩০ অক্টোবর দুবাইয়ে অনুষ্ঠেয় ১০ম বিশ্ব ইসলামিক অর্থনৈতিক ফোরামে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের যোগদান উপলক্ষে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

chardike-ad

সফরকালে দুবাইতে অনুষ্ঠেয় এক্সপো-২০২০ সামনে রেখে বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি সংখ্যায় দক্ষ ও আধাদক্ষ শ্রমিকের কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য প্রধানমন্ত্রী মধ্যপ্রাচ্যের দেশটির নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন।

প্রধানমন্ত্রী আগামী রোববার আবুধাবিতে ইউএইর যুবরাজ সশস্ত্র বাহিনীর উপ–সর্বাধিনায়ক শেখ মুহাম্মাদ বিন যায়েদ আল নাহিয়ান ও জাতির মাতা শেখা ফাতিমার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। এ ছাড়া দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ আবদুল্লাহ বিন যায়েদ আল নাহিয়ান প্রধানমন্ত্রীর সাথে সৌজন্যসাক্ষাৎ করবেন।

প্রধানমন্ত্রী ২৭ অক্টোবর ইউএইর ভাইস প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন রাশেদ আল মাকতুমের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠকে মিলিত হবেন। একই দিন প্রধানমন্ত্রী দেশটির অন্যতম অঞ্চল রাস-আল-খাইমাহ সফর করবেন ও সেখানকার শাসক সৌদ বিন সাকার আল কাসিমীর সঙ্গে মতবিনিময় ও মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেবেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে দুদেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট দ্বিপক্ষীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে। এ আলোচনায় জনশক্তি রপ্তানি ও মানবসম্পদ উন্নয়ন, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, উচ্চশিক্ষা, সংস্কৃতি, পর্যটন, জ্বালানি, জলবায়ু পরিবর্তন ও নিরাপত্তাসহ সহযোগিতার বিভিন্ন বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকবে বলে আশা করা যায়।

প্রধানমন্ত্রীর এ সফরের মধ্য দিয়ে ২০১২ সালের আগস্টে বন্ধ হওয়া শ্রমবাজার খুলবে কি না, জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী স্পষ্ট করে কিছু বলেননি। শুধু মন্তব্য করেন, ‘এ ব্যাপারে আমরা চেষ্টা করছি, সফরের পর বলা যাবে।’

ঢাকা-আবুধাবির সম্পর্কোন্নয়ন প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত সরকারের এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা আজ বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, শ্রমবাজার ও ভিসা উন্মুক্ত হওয়ার ব্যাপারে ইউএই কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা অনেক দূর এগিয়েছে। তবে চূড়ান্তভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না। সর্বশেষ পরিস্থিতি ৬০:৪০ অনুপাতে বাংলাদেশের পক্ষে রয়েছে।

ওই কর্মকর্তা আভাস দেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরের পুরো বিষয়টি ইউএইর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সমন্বয় করছিল। শেষ মুহূর্তে তা দেশটির যুবরাজের দপ্তর সমন্বয়ের দায়িত্ব নিয়েছে। সেখানকার এ সিদ্ধান্তের ফলে প্রধানমন্ত্রীর সফরের ফলাফল নিয়ে বাংলাদেশ আশাবাদী হয়ে উঠেছে।

দুবাই এক্সপো-২০২০-এর ভোটাভুটিকে কেন্দ্র করে ইউএইর সঙ্গে বাংলাদেশের জটিলতা কেটে গেছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এই যে সফরটা, একটার পর একটা সফর, প্রধানমন্ত্রীর সফরের পর রাষ্ট্রপতির সফর হচ্ছে। এটা দেখে কি আপনাদের মনে হচ্ছে না, যে জটিলতা ছিল তা কেটে গেছে। যদি জটিলতা নিরসন না হতো , তবে তো এ সফর হতো না।’

প্রসঙ্গত, বৈশ্বিক বাণিজ্যিক মেলা বা ওয়ার্ল্ড এক্সপোর স্বাগতিক শহরের ভোটাভুটিতে বাংলাদেশ প্রাথমিক পর্যায়ে রাশিয়ার একাতেরিনবার্গ শহরের পক্ষে ভোট দেয়। ইউএইর অনুরোধ সত্ত্বেও বাংলাদেশের এ অবস্থানে দেশটি মনঃক্ষুণ্ন² হয়। শেষ পর্বের ভোটাভুটিতে বাংলাদেশ দুবাইয়ের পক্ষে ভোট দিলেও বিষয়টি ভালোভাবে নেয়নি ইউএই। আর জনশক্তি রপ্তানির বাজার পুনরায় চালু ও ভিসা শিথিলের ক্ষেত্রে এটি প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে।

শেখ হাসিনার সফরে কয়টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হবে? জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নিরাপত্তা সহযোগিতা, বন্দীবিনিময় ও ঢাকায় ইউএই দূতাবাস নির্মাণের জন্য জমি হস্তান্তরের চুক্তি ও নিয়মিত দুই দেশের পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠক এবং জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) সঙ্গে দুবাইভিত্তিক আমালা গ্রুপের গৃহস্থালি কাজের শ্রমিক নিয়োগের ব্যাপারে দুটি সমঝোতা স্মারকের ব্যাপারে আলোচনা চলছে। সই না হওয়া পর্যন্ত বলা যাবে না কী কী সই হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মো. মুজিবুল হক সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) যাচ্ছেন।

তিন দিনের এ সফরে প্রধানমন্ত্রী ৬৯-সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন। এঁদের মধ্যে তিন কূটনীতিক সংযুক্ত আরব আমিরাত ও লেবানন থেকে প্রতিনিধিদলের সঙ্গে যুক্ত হবেন। তবে প্রধানমন্ত্রীর অন্যান্য সফরে ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল সঙ্গে গেলেও এবার তার ব্যতিক্রম ঘটছে।