সফররত চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং উই ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সরকারের অংশীদার হতে রোববার তার দেশের আগ্রহের কথা প্রকাশ করেছেন।
চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রী তিনদিনের সরকারি সফরে এখন বাংলাদেশে আছেন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলীর সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের সময় তিনি এই অভিমত ব্যক্ত করেন।
সকাল ১০ টায় শুরু হয়ে তিন ঘন্টাব্যাপী চলে এই বৈঠক। এতে দ্বি-পাক্ষিক ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণ, বিশেষ করে যোগাযোগে সড়ক ও রেল খাত, জ্বালানি ও শিল্প খাত এবং ঢাকা ও বেইজিংয়ের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৪০ বছর উদযাপনের বিষয় স্থান পেয়েছে।
দুই পররাষ্ট্র মন্ত্রী এছাড়াও গত জুন মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফরের সময় দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত কিছু সমঝোতা স্মারকের (এমওইউ) অগ্রগতি পর্যালোচনা সংশ্লিষ্ট পত্রবিনিময় করেন।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, বৈঠকে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনার জন্য মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) উপর আলোচনা শুরু করার প্রস্তাব দিয়েছেন।
সংযোগ সড়কের ব্যাপারে মো. শহীদুল হক জানান, চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী চট্টগ্রাম থেকে কুনমিং পর্যন্ত বৃহত্তর আঞ্চলিক যোগাযোগ গড়ে তুলতে কক্সবাজার ও মিয়ানমারের সংযোগ সড়ক নির্মাণে আগ্রহ প্রকাশ করেন।
পররাষ্ট্র সচিব আরো জানান, ওয়াং উই বাংলাদেশ, চীন ও মিয়ানমারের এই সংযোগ সড়কের ব্যাপারে ত্রি-পক্ষীয় বৈঠক করতে একমত হয়েছেন।
বাংলাদেশ, ভারত, চীন ও মিয়ানমারের অর্থনৈতিক করিডোর (বিসিআইএম-ইসি) প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে পররাষ্ট্র সচিব জানান, চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী আর্থ-সামাজিক সহযোগিতা ও মানুষের সঙ্গে মানুষের যোগাযোগ বৃদ্ধি জন্য এই বিষয়ে তার দেশের আগ্রহ দেখিয়েছেন।
শহীদুল হক জানান, চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী এদেশে চীনের জন্য একটি স্বতন্ত্র অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলতে বাংলাদেশের সিদ্ধান্তে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি সাংবাদিকদের জানান, ২০১৫ সালে দুই দেশের মধ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
বৈঠকে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এবং পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে তার মন্ত্রণালয়ে অভ্যর্থনা জানান, আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরুর আগে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নীচতলায় অবস্থিত ঐতিহাসিক রুমের “বাংলাদেশ ফরেন পলিসি জেনেসিস: এ পিকটোরিয়াল এক্সিবিশন” পরিদর্শন করেন।
দুই দেশের মধ্যে দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ক আরও উন্নয়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলীর আমন্ত্রণে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রী শনিবার ঢাকায় আসেন।–বাসস