Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

আবেগে কেঁদে ফেললেন হ্যাপি

Happy

জাতীয় দলের ক্রিকেটার রুবেল হোসেনকে আদালত কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়ার পরপরই নায়িকা নাজনীন আক্তার হ্যাপি আবেগে কেঁদে ফেলেছেন।

chardike-ad

আদালত থেকে বের হতে হতে হ্যাপি বলেন, ‘আই হ্যাভ ওন দ্য ম্যাচ। আদালত ন্যায়বিচার করেছে। আইনেrর চোখে সবাই সমান, আদালত তা প্রমাণ করেছে।’ এ কথা বলেই হ্যাপি অঝোরে কান্না শুরু করেন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আনোয়ার সাদাতের আদালত রুবেলকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এরপর হ্যাপি আদালত থেকে বেরিয়ে গণমাধ্যমের সামনে এসব কথা বলেন।

রুবেলকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়ার পরপরই আদালত চত্বরে হট্টগোল বেধে যায়। উভয় পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। এমনকি হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে আদালত চত্বরে। একপর্যায়ে হ্যাপি হট্টগোলের মধ্যে পড়ে যান। পরে পুলিশ ও আইনজীবীরা হ্যাপিকে নিরাপদে গাড়িতে তুলে দেন।

এর আগে আইনজীবী মনিরুজ্জামান আসাদ রুবেলের জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় পুনরায় জামিনের আবেদন করেন। হ্যাপির আইনজীবী তুহিন তালুকদার জামিন বাতিলের আবেদন করেন। শুরু হয় শুনানি।

মনিরুজ্জামান আসাদ আদালতে বলেন, এই মামলার কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই। ঘটনার দিন রুবেল মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ছিলেন। সেখানে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে ক্রেস্ট গ্রহণ করেন। বিশ্বকাপ ক্রিকেটের দল ঘোষণা করা হয়েছে। সেই দলে রুবেল ১১ নম্বর খেলোয়াড়। এবারের বিশ্বকাপে পেসার রুবেলের খুবই দরকার রয়েছে। রুবেলকে যেকোনো শর্তে জামিন দেওয়া হোক।

তখন হ্যাপির আইনজীবী তুহিন তালুকদার আদালতকে বলেন, আইনের চোখে সবাই সমান। এটি একটি ধর্ষণ মামলা। সে বিদেশে গেলে আর আসবে না। তাদের ফোনালাপ প্রমাণ করেছে, তাদের মধ্যে সম্পর্ক ছিল। ফরেনসিক প্রতিবেদনেও শারীরিক সম্পর্কের প্রমাণ রয়েছে। সেটি কার, তা প্রমাণ করতে রুবেলের ডিএনএ টেস্টের প্রয়োজন। তাই তাকে কোনোভাবেই দেশের বাইরে যেতে দেওয়া যায় না। রুবেলের জামিন বাতিল করা হোক।

আদালত উভয় পক্ষের শুনানি শেষে কোনো কথা না বলে রুবেলকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

আদালত থেকে বেরিয়ে অ্যাডভোকেট মনিরুজ্জামান আসাদ বলেন, এই মামলার নকল চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। নকল পেলে নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল-৫ আদালতে জামিনের আবেদন করা হবে। আশা করি সেখানে জামিন পাওয়া যাবে।

আজকের (বৃহস্পতিবার) মধ্যেই কি জামিনের আবেদন করবেন- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার মনে হয় সম্ভব হবে না। আগামী রোববার ট্রাইব্যুনালে জামিনের আবেদন করা হবে।

উল্লেখ্য, গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর নাজনীন আক্তার হ্যাপি মিরপুর থানায় গিয়ে ক্রিকেটার রুবেল হোসেনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ৯/১ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে হ্যাপির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন রুবেল। রুবেলের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক হয়েছে বলে দাবি করেন হ্যাপি। আট-নয় মাস ধরে রুবেলের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু হ্যাপি যখনই বিয়ের জন্য চাপ দেন তখন রুবেল টালবাহানা করতে থাকেন। পরবর্তী সময়ে রুবেল হ্যাপির গায়ে হাত তোলেন।

মামলার পরের দিন ১৪ ডিসেম্বর পুলিশ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক বিভাগে তার শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করায়। এরই মধ্যে ১৫ ডিসেম্বর রুবেল হাইকোর্ট থেকে চার সপ্তাহের আগাম জামিন পান। ১১ দিন পর গত ২৪ ডিসেম্বর দুপুরে পুলিশের হাতে ফরেনসিক প্রতিবেদনের কপি তুলে দেন ফরেনসিক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক হাবীবুজ্জামান চৌধুরী।

ফরেনসিক প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মাসুদ পারভেজ ছুটিতে থাকায় ওই দিন প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়নি। তবে মিরপুর থানার ওসি তদন্ত মামলার নোটটি সাংবাদিকদের পড়ে শোনান। সেই নোটে লেখা ছিল, ‘দ্য ভিকটিম হ্যাজ নো ফাউন্ড রিসেন্টলি সেক্সুয়াল ইন্টারকোর্স অন হার বডি।’

গত ২৮ ডিসেম্বর এসআই মাসুদ পারভেজ ছুটি শেষে থানায় যোগদান শেষে পূর্ণাঙ্গ ফরেনসিক রিপোর্ট প্রকাশ করেন। ওই রিপোর্টে হ্যাপির একাধিক শারীরিক সম্পর্কের কথা লেখা ছিল না। একজনের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক হয়েছে, যা ফরেনসিক প্রতিবেদনের প্রথম পৃষ্ঠায় লেখা রয়েছে। তবে কার সঙ্গে হয়েছে তা লেখা ছিল না।

এরই মধ্যে হ্যাপির করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রুবেলের জব্দ করা আলামতগুলোর ক্যামিকেল পরীক্ষার আবেদন মঞ্জুর করেন আদালত। সেগুলি এখন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক বিভাগে পরীক্ষারত অবস্থায় রয়েছে।