Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

প্রেমিককে হত্যা, প্রেমিকার বাড়িতে আগুন

fireবরিশালের উজিরপুরের হারতা ইউনিয়নের জামবাড়ী গ্রামে প্রেমের সম্পর্কের জের ধরেসোমবার রাতে এক যুবককে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার বিক্ষুব্ধ স্বজন ও এলাকাবাসী প্রেমিকার বাড়িতে জড়ো হলে প্রেমিকার পরিবার ধারালো অস্ত্র নিক্ষেপ করায় এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে বসতঘর, রান্নাঘর ও দুটি গরুর খড়ের গাদায় অগ্নিসংযোগ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে থানা পুলিশ ২৫ রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে। হত্যার ঘটনায় প্রেমিকাসহ পরিবারের পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। সুখদেবের পরিবারের দাবি, মিতুর সাথে প্রেম করার অপরাধে সুখদেবকে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে। থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

স্থানীয়সূত্রে জানা যায়, উপজেলার জামবাড়ি গ্রামের সুপেন মিস্ত্রির ছোট ছেলে ঢাকা মধ্যবাড্ডা এলাকায় ইসলামী ব্যাংকে সিকিউরিটি গার্ড সুখদেব মিস্ত্রি (২৩) ও একই গ্রামের দশরথ সমদ্দারের ছোট মেয়ে হাবিবপুর সৈয়দ আজিজুল হক ডিগ্রী কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী মিতু সমদ্দার (১৮) দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্ক চালিয়ে আসছে। গত ২ মার্চ সোমবার সকালে ঢাকা থেকে সুখদেবের কাকাতো বোন অপর্ণার বিয়ের জন্য সুখদেব বাড়িতে আসে। বাড়িতে আসার পরে প্রেমিকা মিতুর সাথে দেখা করতে হাবিবপুর কলেজে যায় এবং দুপুুর পর্যন্ত দু’জনে ঘোরাফেরা করে নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে যায়।

chardike-ad

সন্ধ্যার পরে সুখদেব বাড়ি থেকে বের হয়ে রাতে আর ফিরে আসেনি। স্থানীয় সমীর বলভ মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে ধানেেত পানি দিতে যাবার পথে প্রেমিকা মিতুদের বাড়ির পশ্চিমপার্শ্বের বাগানে সুখদেবের মরদেহ পরে থাকতে দেখে লোকজনদের খবর দেন। সুখদেব হত্যার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পরলে সুখদেবের স্বজনরা ও গ্রামবাসী বিুব্ধ হয়ে উঠে। একপর্যায়ে এলাকাবাসী সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মিতু ও তার পরিবারের অন্যদের দায়ী করে পিতা দশরথ সমদ্দারের বাড়িতে যায়। এসময় মিতুর বোন কনক সমদ্দার (২৫) ও নমিতা সমদ্দার (২০) ঘরের মধ্যে থেকে এলাবাসীর উদ্দেশে ঘরে থাকা দেশীয় ধারালো অস্ত্র ছুঁড়ে মারে এবং অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করে।

একপর্যায়ে বিুদ্ধ এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে বসতঘরে আগুন ধরিয়ে দেয় ও মিতুসহ তার পরিবারের লোকজনের উপর হামলা চালায়। এসময় পুলিশ খবর পেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ও তাদের বাঁচাতে ২৫ রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে। গ্রামবাসীর হামলা ও পুলিশের লাঠিচার্জে দশরথ সমদ্দার (৫০), তার স্ত্রী আলোমতি সমদ্দার (৪৫), কন্যা মিতু, কনক, নমিতা, পুত্র সজল সমদ্দারসহ ১০ জন আহত হয়। গ্রামের একাধিক ব্যক্তি জানান, সুখদেবের সাথে মিতুর প্রেমের সম্পর্ক মেনে নিতে পারেনি তার পরিবার। অনেক আগে থেকেই সুখদেবকে তারা হুমকি দিয়ে আসছিল।

সুখদেবের পরিবারের দাবি, মিতুর সাথে প্রেম করার অপরাধে সুখদেবকে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে। বরিশাল জেলা পুলিশের এডিশনাল এসপি আলমগীর হোসেন, সদর সার্কেল এএসপি সুদীপ্ত কুমার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: সোহরাব হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। উজিরপুর মডেল থানার ওসি মো. নুরুল ইসলাম পিপিএম জানান, খবর পেয়ে হারতা পুলিশ ক্যাম্প ও থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ২৫ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে আহতদের উদ্ধার করে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে এবং ঘটনাস্থল থেকে মেয়েদের ব্যবহৃত কাকড়া ব্যান্ড, গলার চেইন ও নিহত সুখদেবের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনের ভাংচুরকৃত সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। এঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

এবিষয়ে প্রেমিকার বোন কনক সমদ্দার জানায়, সে বরিশাল বিএম কলেজে মাস্টার্সের ও বোন নমিতা বরিশাল পলিটেকনিক্যাল কলেজের ডিপ্লোমার ছাত্রী। হত্যা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি মুখ খুলতে রাজি হননি।