Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

আইনি লড়াইয়ে যাবে মুস্তফা কামাল

mostafa-kamal

মেলবোর্নে আজ বিশ্বকাপের পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে নেই আইসিসির সভাপতি! প্রথম থেকেই বিষয়টি খটকা লেগেছিল সবার মনে। যেখানে অস্ট্রেলিয়া দলের হাতে শিরোপা তুলে দেন আইসিসির চেয়ারম্যান ভারতের এন শ্রীনিবাসন।

chardike-ad

অথচ অস্ট্রেলিয়া দলের হাতে শিরোপা তুলে দেয়ার কথা ছিল আইসিসির সভাপতি আ হ ম মুস্তফা কামালের। আইসিসির গঠনতন্ত্রও তাই বলে। ১৯৯৯ বিশ্বকাপ ফাইনালে লর্ডসে স্টিভ ওয়াহদের হাতে শিরোপা তুলে দিয়েছিলেন ওই সময়ের আইসিসি সভাপতি জগমোহন ডালমিয়া। এরপর এ নিয়মটিই দাঁড়িয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এবার ঘটল ভিন্ন ঘটনা।

আইসিসির গঠনতন্ত্রে বলা আছে, ‘বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় শিরোপা তুলে দেবে সভাপতি।’ প্রশ্নটা এখানে, তবুও কেন মুস্তফা কামালকে দেখা গেল না পুরস্কার মঞ্চে? সেখানে কেন শ্রীনি? তবে এমন ঘটনায় বেশ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন মুস্তফা কামাল। ফাইনাল ম্যাচের পর মেলবোর্নে বাংলাদেশী মিডিয়াদের দেয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেছেন, ‘যা হয়েছে, তা আইসিসির গঠনতন্ত্র বিরোধী। এটা অপরাধ। আমি আইনি লড়াইয়ে নামব’।

কিভাবে এমনটি হলো, তা সবাই অনুমান করতে পারবে। এমসিজিতে কোয়ার্টার ফাইনালে বাজে আম্পায়ারিংয়ের শিকার হয়ে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের হারের পর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন কামাল। কেবল আম্পায়ারদের ওপর ক্ষোভ ঝেড়ে ক্ষান্ত হননি, প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন আইসিসিতে ভারতের একচেটিয়া দাপটের বিরুদ্ধেও। এমনকি আইসিসি থেকে পদত্যাগ করারও হুমকি দিয়েছিলেন তখন।

তারই জেরটা ভালোমতোই নিলেন আইসিসির চেয়ারম্যান শ্রীনিবাসন। মেলবোর্নে উপস্থিত থাকার পর মুস্তফা কামালকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি পুরস্কার বিতরণ মঞ্চে। আইসিসির সভাপতি পদ অবশ্য এখন অনেকটাই অলংকারিক। সব ক্ষমতা ঐ চেয়ারম্যান শ্রীনির হাতে। যা বেশ ভালোমতোই ব্যবহার করছেন তিনি।

এক সাক্ষাতকারে মুস্তফা কামাল বলেছেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী আইসিসির সভাপতি চ্যাম্পিয়ন দলের হাতে ট্রফি তুলে দেবে। কিন্তু এবার তা হলো না। আমি বলব এটা আইনের পরিপন্থী। আমি চুপ করে বসে থাকব না। দেশে ফিরেই আইনি মোকাবেলা করব’।

কোয়ার্টার ফাইনালে বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ঐ ম্যাচে বাংলাদেশের সঙ্গে অবিচার করা হয়েছে। আমি একজন সাধারণ ক্রিকেট ভক্ত হিসাবে কথা বলেছিলাম। এটা বলতেই হবে। আমি ক্রিকেটকে ভালোবাসি। আমি ঐ ম্যাচে ভারতের বিরুদ্ধে কিছু বলিনি। ম্যাচে আম্পায়ারদের পক্ষপাতদুষ্ট সিদ্ধান্ত নিয়ে কথা বলেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আইসিসির সভাপতি হলেই যে কিছু বলা যাবে না, তা নয়। আমি যা বলেছি, তা ক্রিকেটের স্বার্থে। আইসিসি ও বাংলাদেশের স্বার্থেও। কারণ এভাবে চললেতো হবে না। বিশ্বের মধ্যে ক্রিকেট ইভেন্ট ভালোমতো বিকশিত হবে না।’

বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ চলাকালীন জায়ান্ট স্ক্রিনে ‘জিতেগা ভারত জিতেগা; গান বাজানো হয়েছিল। আবার অনেকে ‘আইসিসি মানে ইন্ডিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল’ এমন প্লেকার্ড নিয়ে হাজির হয়েছিল মেলবোর্নে। এ প্রসঙ্গে মুস্তফা কামাল বলেন,‘স্ক্রিনে ‘জিতেগা ভারত জিতেগা’ এমনটি দেখার পরই আমি তা বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিলাম। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা মানা হয়নি। হ্যা অনেকে আইসিসিকে ইন্ডিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল বলেছে। তবে আমি সেদিন বলেছিলাম, আমি আইসিসির প্রেসিডেন্ট, আমি ইন্ডিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের দায়িত্ব পালন করি না। যদি ভালো মতো দায়িত্ব না পালন করতে পারি, তাহলে পদই ছেড়ে দেব’।

ফাইনাল ম্যাচের দিন পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে কেউ আপনাকে আমন্ত্রণ জানায়নি? এমন প্রশ্নের জবাবে মুস্তফা কামাল বলেন, ‘কি বলব, সব কিছুই আগে থেকে সেট করা ছিল। এ নিয়ে অনেক হাঙ্গামা হয়েছে। কি জন্য আমি পু্রস্কার বিতরণ মঞ্চে নাই, তা আমি জানি। কারণ আমি ক্রিকেটের স্বার্থে কথা বলেছি, আমি আইসিসির স্বার্থে কথা বলেছি। এজন্যই এমনটি হলো।’

তিনি আরও বলেন, ‘সভাপতি হিসাবে আইসিসির সব গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্টে পুরস্কার দেয়ার দায়িত্ব আমার। কিন্তু আজ আমার সাংবিধানিক অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে। আমি আইনিভাবে এর বিরুদ্ধে মোকাবেলা করব’।

তিনি আরও বলেন, ‘কারা এমনটি করছে, তা খুজে বের করুন। আমাকে সবাই চেনে। আমি বাংলাদেশের পরিকল্পনা মন্ত্রী। আমি বিসিবির সাবেক সভাপতি। দেশের মানুষ জানে ক্রিকেটের জন্য আমি করেছি’।