গার্লফ্রেন্ডের মন জয় করতে গিয়ে সৌদি আরবে হাজার তরুণ প্রতিনিয়ত পকেট থেকে কাড়ি কাড়ি টাকা খোয়াচ্ছে। বিপরীতে প্রেমিকারাও খোয়াচ্ছে তাদের অর্থ। কিন্তু সবশেষে উভয়পক্ষের মধ্যেই সম্পর্ক, মূল্যবোধ, বিশ্বাস এক সময় হারিয়ে যাচ্ছে।
সম্প্রতি দেশটিতে পরিচালিত এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। শুক্রবার আরব নিউজের এক খবরে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
গবেষণায় বলা হয়, তরুণরা তাদের প্রেমিকার পেছনে ঘুর ঘুর করে তাদের মন জয়ের চেষ্টা করে। আর এ জন্য প্রেমিকাদের ব্যয়বহুল উপহার দিতে হয়। এ ধরনের তরুণদের ওপর ওই তরুণীরা দিন দিন তাদের দাবি দাওয়াও বৃদ্ধি করে। অন্যদিকে তরুণীরা তরুণদের সন্তুষ্ট করতে কাড়ি কাড়ি টাকা খরচ করতে দ্বিধা করে না।
শিক্ষা ও পরিবার বিষয়ক বিশেষজ্ঞ সাবাহ্ জোহার বলেন, সরলতার কারণেই এ ধরনের প্রবণতার শিকার হয় তরুণীরা। অন্যদিকে তরুণরা প্রেমে প্রলুব্ধ হন বেকারত্ব কাটাতে বা অর্থনৈতিকভাবে স্বচ্ছল হতে।
আরেক বিশেষজ্ঞ বলেন, ভোগবাদিতা থেকে মানুষের মধ্যে মূল্যবোধ হারিয়ে যাচ্ছে। এ ধরনের তরুণ-তরুণীদের মধ্যেও সেটি ঘটেছে; যা তাদের মধ্যে বিশ্বস্ততা নষ্ট করে ফেলছে। একই সঙ্গে তাদের মধ্যে সঠিক নৈতিকতা এবং প্রকৃত ভালোবাসা হারিয়ে যাচ্ছে।
বিষয়টির ওপর সচেতনতা সৃষ্টির উপর জোর দিয়ে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, তরুণীরা যেভাবে ভোগবাদি হয়ে উঠছে তাতে উষ্ণ ভালোবাসা থেকে তারা বঞ্চিত হচ্ছে। শুধু তাই নয় এতে উভয়ের সততা ও ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
মনোচিকিৎসক আব্দুল আজিজ আল ঘামদি বলেন, তরুণীরা অর্থনৈতিকভাবে তরুণদের নির্যাতিত করে। কারণ তারা বিলাস জীবন যাপন করতে চায়। আর এর প্রভাব অন্য তরুণীদের উপরও পড়ে।
এর কারণ দেখিয়ে তিনি বলেন, পরিবারের সঠিক তদারকি না থাকায় এ সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। তাই মূল্যবোধ সম্পর্কে তরুণীদের শিক্ষিত করে তুলতে উচ্চ বিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে সেমিনারের আয়োজন করতে হবে। যাতে করে তারা সহজ, সরল জীবনযাপনে উদ্বুদ্ধ হয়।
এ ধরনের ঘটনার শিকার সৌদ আলি বলেন, মনেপ্রাণেই আমার চেয়ে ৫ বছরের বড় এক ছেলেকে ভালোবেসেছিলাম। ভালোবাসার জন্য সবকিছুই উৎসর্গ করেছিলাম। আমাকে কল দেওয়ার টাকা না থাকায় তাকে মোবাইল ফোন কিনে দিয়েছিলাম। সে কোনো কাজ করতো না। খাদ্য ও সিগারেটের জন্য টাকা চাইতো। তাও দিতাম । প্রতি মাসে তাকে উচ্চ মূল্যের উপহারও দিয়েছিলাম । পরে বুঝতে পারি সে আমাকে ভালোবাসেনি। শুধু আমাকে ব্যবহার করেছে।
সৌজন্যেঃ অর্থসূচক