বিভিন্ন দেশ থেকে সৌদি আরবে জনশক্তি পাঠানো বন্ধ থাকায় ৩ বছর আগে থেকেই গৃহকর্মী সংকটে ভুগছে দেশটির নারীরা। এদিকে রোজার আগে বাংলাদেশ থেকে ৫০ হাজার কর্মী চাইলেও ২০ হাজার কর্মী পাঠাতে পারবে বলে জানিয়েছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। তবে তারও এখনো সুরাহা হয়নি।
ফলে এবারের রমজানেও গৃহস্থালি কাজে সহায়তা ছাড়াই কাঁটাতে হচ্ছে অনেক সৌদি পরিবারের। এসব পরিবারের তরফ থেকে এমন অভিযোগ তোলা হয়েছে।
স্থানীয় একটি দৈনিকে প্রকাশিত খবরের বরাত দিয়ে সম্প্রতি এ তথ্য জানিয়েছে সৌদি আরবের প্রভাবশালী সংবাদ মাধ্যম আরব নিউজ।
প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ৩ বছর আগ থেকেই বেশকিছু দেশ থেকে সৌদি আরবে নারী শ্রমিক পাঠানো বন্ধ রয়েছে। শ্রমিক দিতে এসব দেশের তরফ থেকে নির্দিষ্ট কিছু শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়; যা সৌদি পরিবারগুলো মেনে নিতে পারেনি।
এসব পরিবার অভিযোগ করেছে, গৃহকর্মী দেওয়ার বিষয়ে সৌদিতে একটি কালো বাজারি চক্র গড়ে উঠেছে। যারা রমজান মাসে গৃহকর্মী দেওয়া বাবদ ৫ হাজার রিয়েল পর্যন্ত বেতন দাবি করে থাকে। এই বেতন স্নাতক যোগ্যতাসম্পন্ন একজন কর্মীর বেতনের সমান। তবে নিয়োগের ক্ষেত্রে রিক্রটিং এজেন্সির মাধ্যমেই গৃহকর্মী নেওয়ার কাউন্সিল অব সৌদি চেম্বারস ও শ্রমমন্ত্রণালয়ের সতর্কবার্তা থাকার পরও অনেক পরিবার কালোবাজারের মাধ্যমে গৃহকর্মী খোঁজা শুরু করেছে।
হাসপাতালে নার্স হিসেবে কাজ করেন আমেনা। তিনি জানান, তার ১২ বছরের বাচ্চার জন্য একজন গৃহকর্মী খুব প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। অন্য মাসের চেয়ে রমজান মাসে ইবাদত-বন্দেগী নিয়ে বেশি ব্যস্ত থাকতে হয়। তাই এ সময়ে রোজা রেখে একইসঙ্গে ঘর পরিষ্কার করা, রান্না করা, নামাজ পড়া, কোরআন পড়া, টিভিতে বিশেষ প্রোগ্রাম দেখা একজন গৃহিনীর জন্য আসলেই কঠিন, যোগ করেন তিনি।
আমেনা জানান, তার ইন্দোনেশিয়ান গৃহকর্মী ১০ মাস আগে চাকরি ছেড়ে চলে গেছে। গৃহস্থালির কাজে কোনো ধরনের সহায়তা ছাড়াই এবারের রোজা পার হবে, এটি তার প্রথম ঘটনা।
সুমায়হা আহমেদ নামক একজন সৌদি শিক্ষিকা জানান, রমজানের এক সপ্তাহ আগেই স্কুল ছুটি হয়। কিন্তু এই ছুটি গৃহস্থালির জন্য কোনো কাজে আসে না। ইন্দোনেশিয়ান গৃহকর্মীর আগে তার বাড়িতে কাজ করতো এক ইথিওপিয়ার কর্মী। কিন্তু নানা সমস্যার কারণে তাকেও ছেড়ে দিতে বাধ্য হন তিনি।
সৌদি চেম্বারসের জাতীয় নিয়োগ কমিটির সভাপতি সাদ- আল বাদাহ জানান, সৌদি আরবে শ্রমিক পাঠানো বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইন্দোনেশিয়া। কিন্তু তাদের এই সিদ্ধান্ত দেশটির ওপর কোনো ধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না। সৌদি কতৃপক্ষ অন্যদেশ থেকে গৃহকর্মী নিয়োগ দিতে সক্ষম।