মৃত্যু কি আসলেই আরামদায়ক হয়? মরণ আর যন্ত্রণা শব্দ দুটো তো যুগলবন্দী সৃষ্টিলগ্ন থেকেই। কিন্তু আন্দাজ-অনুমানে পত্রিকার পাতা ভরানোর যুগ গত হচ্ছে বলে। লোকে আজকাল আতশ কাঁচের তলায় ফেলে দেখে না এমন কোন বস্তু বোধহয় নেই। মরণই বা কেন এড়িয়ে যাবে মানুষের অনুসন্ধানী চোখ? আর তাই নির্দিষ্ট কিছু মানদণ্ড নির্ধারণ করে আজ মাপা হচ্ছে মৃত্যুর মানও। এর উপর ভিত্তি করে কোন দেশ তাঁর নাগরিকদের মৃত্যুকে কতোটা আরামদায়ক করতে পারছে তারই একটি ক্রম তৈরি করেছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক গবেষণা সংস্থা দ্য ইকোনোমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট। ৮০টি দেশের ওই তালিকায় দক্ষিণ কোরিয়ার অবস্থান ১৮তম, আর বাংলাদেশ রয়েছে ৭৯তম স্থানে।
গত সোমবার প্রকাশিত ‘কোয়ালিটি অব ডেথ ইনডেক্স-২০১৫’-এ প্রকৃতপক্ষে মূল্যায়নের চেষ্টা করা হয়েছে বিভিন্ন দেশে মৃত্যুকালীন সেবার মান। ২০টি নির্ণায়কের সাহায্যে মাপা হয়েছে মৃত্যুযন্ত্রণা প্রশমন সেবার মান ও সহজলভ্যতা, লোকবল ও জীবনের শেষ দিনগুলো সহজগম্য করতে আশেপাশের মানুষজনের ভূমিকা।
সূচকে দেখা গেছে উচ্চ আয় মৃত্যুর মান নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। এ সূচকে ১০০’র মধ্যে ৯৩.৯ পয়েন্ট নিয়ে সবার উপরে আছে যুক্তরাজ্য। পরের চারটি অবস্থানেই চার বিত্তশালী দেশঃ যথাক্রমে অস্ট্রেলিয়া (৯১.৬), নিউজিল্যান্ড (৮৭.৬), আয়ারল্যান্ড (৮৫.৮), বেলজিয়াম (৮৪.৫)। ৮০.৮ পয়েন্ট নিয়ে নবম স্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্র।
৭৩.৭ পয়েন্ট নিয়ে ১৮তম স্থানে রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। ২০১০ সালে প্রকাশিত একই সূচকের বিচারে এবার ১২ ধাপ এগিয়েছে দেশটি। এশিয়ার মধ্যে তাঁদের অবস্থান চতুর্থ। এশীয় দেশগুলোর মধ্যে ৮৩.১ পয়েন্ট নিয়ে সবার উপরে ৬ নম্বরে আছে তাইওয়ান; দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে আছে যথাক্রমে সিঙ্গাপুর (১২তম) ও জাপান (১৪তম)।
মাত্র ১৪.১ পয়েন্ট নিয়ে তালিকায় নীচ থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে বাংলাদেশ। সবার নীচে থাকা ইরাকের পয়েন্ট ১২.৫। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ ছাড়া তালিকায় স্থান পেয়েছে কেবল ভারত ও শ্রীলংকা। ২৭.১ পয়েন্ট নিয়ে শ্রীলংকার অবস্থান ৬৫তম; ২৬.৮ পয়েন্ট নিয়ে ভারত আছে ৬৭ নম্বরে।