Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

রাশিয়ার কারণে দুশ্চিন্তায় ভারতের বিমান সংস্থা

air-indiaদুশ্চিন্তায় পড়েছে ভারতের দুই বিমানসংস্থা, জেট ও এয়ার ইন্ডিয়া। আশঙ্কার কারণ, রাশিয়া। মঙ্গলবার তুরস্কের আকাশে ‘অনধিকার’ প্রবেশের অভিযোগে রাশিয়ার একটি যুদ্ধ-বিমানকে গুলি করে নামিয়েছে তুরস্কের সেনাবাহিনী।

তুরস্ক সীমান্ত ঘেঁষা উত্তর সিরিয়ার লাতাকিয়া প্রদেশের যে রুট দিয়ে ওই যুদ্ধবিমানটি উড়ে যাচ্ছিল, ঠিক ওই রুট দিয়েই দিল্লি ও মুম্বই থেকে নিয়মিত ইউরোপ ও আমেরিকায় উড়ে যায় এয়ার ইন্ডিয়া ও জেট-এর বিমান।

chardike-ad

যুদ্ধবিমানটি উড়ে যাচ্ছিল মাটি থেকে ১৮ হাজার ফুট উপর দিয়ে। আর যাত্রী বিমান যায় ৩৪ থেকে ৩৬ হাজার ফুট উপর দিয়ে।

আশঙ্কা, এবার বদলা নিতে পাল্টা হানা দিতে পারে রাশিয়া। সে আশঙ্কার কথা ভারতের দুই বিমানসংস্থাকে জানিয়েছে তুরস্কের সরকার। জানিয়েছে, রাশিয়ার নৌসেনার একটি বড় বাহিনী ঘাঁটি গেড়ে বসে রয়েছে তুরস্কের সীমান্ত ঘেঁষা ভূমধ্যসাগরে।

বেশ কয়েকদিন আগে শক্তি প্রদর্শনের জন্য সেই নৌবাহিনী থেকে একটি ক্ষেপনাস্ত্র ছোঁড়া হয়েছিল। তা গিয়ে পড়ে ইরানে। ক্ষমা চেয়ে নেয় রাশিয়া।

কিন্তু, এবার যে কোনো দিন সেখান থেকে তুরস্কের দিকে ক্ষেপনাস্ত্র ছুঁড়তে পারে তারা। আর সে রকম কিছু হলে ওই আকাশ দিয়ে যাত্রী বিমান নিয়ে আর উড়ে যাওয়া যাবে না।

ইরাক যুদ্ধের পরে সে দেশের উপর দিয়ে যাত্রী বিমান উড়ে যাওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছে অনেকদিন আগেই। এই মূহূর্তে ভারত থেকে ইউরোপ ও আমেরিকা যাওয়ার জন্য তুরস্কের উপর দিয়ে ওটাই সংক্ষিপ্ততম রাস্তা। আকাশেই ওই রুটে উড়ে গেলেই সবচেয়ে কম জ্বালানি পুড়িয়ে পৌঁছে যাওয়া যায় ইউরোপ ও আমেরিকায়।

কিন্তু, ওই এলাকার পরিস্থিতি প্রতি দিন বদলাচ্ছে। ফ্রান্সে আইএসআইএস এর হামলার পরে ফ্রান্স পাল্টা হানা দিয়েছে সিরিয়ায়। আইএসআইএসদের শায়েস্তা করতে রাশিয়াও সিরিয়ায় হানা দিতে যাচ্ছিল বলে জানা গিয়েছে।

অভিযোগ তুরস্কের অনুমতি ছাড়াই রাশিয়ার যুদ্ধবিমান ঢুকে পড়েছিল তুরস্কের আকাশে। আর সেই কারণেই তাকে গুলি করে নামানো হয়েছিল।

কিন্তু, সেই ঘটনার সরাসরি জের পড়তে চলেছে বহু দূরের দুই বিমানসংস্থার উপরেও। সূত্রের খবর, তুরস্ক সরকারের তরফে এই দুই বিমানসংস্থার কাছে একটি সতর্ক বার্তা এসেছিল কয়েকদিন আগেই।

সতর্ক বার্তায় বলা হয়েছিল, এই মূহূর্তে যাত্রী বিমান নিয়ে তেমন কোনো চিন্তার কারণ নেই। কিন্তু, পরিস্থিতি ক্রমশই খারাপ হচ্ছে।

শুধু তো জেট বা এয়ার ইন্ডিয়া নয়, দেশ বিদেশের বহু বিমানসংস্থাই জ্বালানি বাঁচাতে ওই রুট ব্যবহার করে। সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়ার মতো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ এবং অস্ট্রেলিয়া থেকে যে বিমানগুলি ইউরোপ উড়ে যায় তারাও প্রধানত ওই রুটই নেয়। সমস্যায় পড়েছে তারাও।

মঙ্গলবারে রুশ বিমান গুলি করে বিমান নামানোর ঘটনার পরে আরো বড় মাত্রা পেয়েছে বিষয়টি। সূত্রের খবর, মঙ্গলবারের পর থেকে এই ঘটনা নিয়ে ভারতের দুই বিমানসংস্থার উচ্চপদস্থরা বৈঠকে বসেন। পরবর্তী পদক্ষেপের কথা নিয়ে আলোচনা হয়।

জেট এয়ারওয়েজের এক কর্তার কথায়, ‘যাত্রীদের নিরাপত্তা আমাদের কাছে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এখন তো দেখছি ওই রুট দিয়ে উড়ে যাওয়াটা আর নিরাপদ নয়। যে কোনো দিন যা কিছু হতে পারে’।

তা হলে উপায়? সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই বিকল্প রুটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কথা হয়েছে জর্জিয়া ও রাশিয়া সরকারের সঙ্গে। তবে, ওই দুই দেশের আকাশ দিয়ে উড়ে গেলে অনেক বেশি জ্বালানি পোড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

সূত্র : আনন্দবাজার