Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

বেড়েছে এইচআইভি সংক্রমণ : হুমকি প্রবাস ফেরত শ্রমিকরা

aidsদেশে গত এক দশকে নতুন এইচআইভি সংক্রমণের হার শতকরা ২৫ ভাগ বেড়েছে। জাতীয়ভাবে এইচআইভি সংক্রমণের হার মোট জনসংখ্যার শতকরা মাত্র শূন্য দশমিক ১ ভাগ দাবি করা হলেও আন্তর্জাতিক উদারাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর’বি) পরিচালিত এক নতুন জরিপ প্রতিবেদনে প্রবাস ফেরত শ্রমিক ও তাদের সন্তানদের মধ্যে এইচআইভিতে সংক্রমণের হার শতকরা ৬ দশমিক ২ ভাগ পাওয়া গেছে।

গবেষকরা বলছেন, প্রবাস ফেরত শ্রমিকরা দেশে এইচআইভিসহ নানা জটিল সংক্রমণজনিত রোগব্যাধির জন্য বড় ঝুঁকি। এইচআইভিসহ বিভিন্ন সংক্রমণজনিত জটিল রোগব্যাধি প্রতিরোধে তাদের নিয়ে কাজ করতে হবে। মঙ্গলবার এ জরিপ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।

chardike-ad

জানা গেছে, গবেষকরা ২০০২ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত দেশের তিনটি এইচআইভি টেস্টিং অ্যান্ড কাউন্সিলিং ক্লিনিকে মোট ৮ হাজার ৯৭৩ জন ব্যক্তির নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পরিক্ষীত মোট নমুনার মধ্যে প্রবাস ফেরত শ্রমিকদের শতকরা ৭৫ ভাগের মধ্যে সংক্রমণজনিত বিভিন্ন জটিল রোগব্যাধি শনাক্ত হয়।

আশঙ্কাজনক তথ্য হলো- প্রবাস ফেরত শ্রমিকদের ৫৫৮ জন অর্থাৎ শতকরা ৬ দশমিক ২ ভাগের এইচআইভি পজিটিভ শনাক্ত হয়। তাদের মধ্যে ৩৩ জন ছিল শিশু।

গবেষণায় দেখা যায়, এইচআইভি পজিটিভ রোগীরেদর অধিকাংশই মধ্যেপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের শ্রমিক। তাদের কেউ বাসাবাড়িতে কাজ করতেন কেউ দীর্ঘ সময় বিদেশে কাটিয়ে দেশে ফিরে অধিক বয়সে বিয়ে করেন।

জয়েন্ট ইউনাইটেড নেশনস প্রোগ্রাম অন এইচআইভি এইডস এর তথ্য মতে, ২০০১ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত সময় দেশে এইচআইভি সংক্রমণের হার শতকরা ২৫ ভাগ বেড়েছে। ভ্রমণ বা চাকরির জন্য এ সময়ে স্বল্প বা দীর্ঘ মেয়াদের জন্য বিদেশ গমন বেড়েছে। সৌদি আরবে ৫ লাখ শ্রমিক কাজ করছে। এছাড়াও মধ্যেপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশেও বিপুল সংখ্যক শ্রমিক চাকরি সূত্রে অবস্থান করছে।

আইসিডিডিআরবি’র প্রোগ্রাম অন এইচআইভি অ্যান্ড এইডস বিভাগের পরিচালক ও নতুন গবেষণার প্রধান গবেষক বলেন, গতানুগতিক হিসেবে দেশে সংক্রমণজনিত উচ্চ ঝুঁকির বাহক হিসেবে পতিতা, রক্তশিরায় ইনজেকশনের মাধ্যমে মাদক গ্রহণকারী ও এমএসএম (পুরুষের সাথে পুরুষের যৌনমিলন) কে বলা হয়।

তিনি বলেন, এখনও পর্যন্ত প্রবাস ফেরত শ্রমিক ও তাদের পরিবারের সদস্যদের ঝুঁকির বিষয়টি গুরত্বসহকারে দেখা হয়না। এ গবেষণায় প্রবাস ফেরত শ্রমিক ও তাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য পৃথক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের বিষয়টি গুরত্ব পেয়েছে।

তিনি বলেন, গবেষণায় সব বিদেশ ফেরত শ্রমিকদের এইচআইভি পরীক্ষার আওতায় আনা সম্ভব না হওয়ায় প্রকৃত চিত্র ফুটে উঠেনি। এখনও গ্রামীণ এলাকায় মানুষের মধ্যে কুসংস্কার থাকায় স্বেচ্ছায় পরীক্ষায় উৎসাহিত হন না।

গত এক বছরে দেশে নতুন এইচআইভি রোগী ৪৬৯ জন শনাক্ত হয়। একই সময়ে মারা গেছেন ৯৫ জন। বর্তমানে দেশে এইচআইভি সংক্রমণে আক্রান্তের মোট সংখ্যা ৪ হাজার একশ’ ৪৩ জন।