Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

ফুলকপি ছুঁড়ে ড্রোন নামালেন কৃষক!

dronশত্রুপক্ষের ড্রোন গুলি করে নামানোর কথা শোনা যায়, কিন্তু ফুলকপি ছুঁড়ে ড্রোন নামানো! তাও আবার দেশের ‘সরকারি ড্রোন’! এমনটাই ঘটিয়েছেন কলকাতার অদূরে বক্সীগঞ্জে পদ্মাপাড়ের এক কৃষক।

ঘটনাটি গেল শুক্রবারের। এখানে সপ্তাহে একদিনই হাট বসে। বাজার ভালো গেলে অন্য দিনও বসে মাঝে মাঝে। এদিন হাট ছিল জমজমাট। এসেছিল প্রচুর ফুলকপি, বাঁধাকপি আর ওলকপি। কৃষিদপ্তরের কর্মকর্তারা ছিলেন হাটের একটু বাইরেই, আর হাটের ওপর বোঁ বোঁ করে উড়তে উড়তে ছবি তুলছিল একটা ড্রোন। মানে, চালকবিহীন আকাশযান। আকাশ থেকে অমন একটি আজব বস্তুকে কাছাকাছি নেমে আসতে দেখে আচমকাই হাতে থাকা কপি ছুঁড়ে সেটাকে মাটিতে নামিয়ে আনেন এক কৃষক।

chardike-ad

ঘটনাটি এ পর্যন্ত থেমে থাকেনি। মাটিতে পড়ার পর থেকেই উধাও ড্রোনের ক্যামেরাটি! তারপর মন্ত্রী-সান্ত্রী-থানা-পুলিশ… একেবারে হইহই কান্ড, রইরই ব্যাপার। ভারতের মিডিয়াতে বিষয়টি আরো ভাইরাল হয়েছে যখন জানা গেছে ড্রোনটি আসলে কার? এর কর্তৃপক্ষ কারা?

দক্ষিণ ২৪ পরগনার পুলিশ সুপার সুনীল চৌধুরী বললেন বলেন, ‘ড্রোনটি কার তা আমরা বলতে পারবো না।’ কাশীপুর থানা অবশ্য জানিয়েছে, ‘ড্রোনটি উদ্যান পালন মন্ত্রণালয়ের। স্থানীয় পঞ্চায়েতের কাছেও সে রকমই খবর। কিন্তু উদ্যান পালন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরীর বক্তব্য, ‘আমার মন্ত্রণালয়ের ‌ড্রোন-টোন নেই। তাছাড়া, আমি তো আজকেই কলকাতায় অফিসারদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। এমন ঘটনার কথা কেউ জানাননি তো।’

গ্রামবাসীদের একাংশের বক্তব্য, ‘ড্রোনটি কৃষি মন্ত্রণালয়ের।’ কৃষিমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু বলেন, ‘এই ঘটনাটি জানা নেই। তবে কৃষি মন্ত্রণালয়ে চাষের বিকাশে অনেক আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে।’

কিন্ত্ত কেন কপি ছুঁড়ে নামানো হল ড্রোনটা? একজন চাষি বললেন, ‘একে তো কপির দাম পাচ্ছি না, তার উপরে মাথার কাছে ঘড়ঘড় করে উড়ে বেড়চ্ছে৷ তাই রাগের বশে কপি ছুড়ে মেরেছে লোকটা।’

আর একজন বললেন, ‘না না, রাগ নয়। আসলে আচমকা কী একটা উড়ে মাথার উপরে এসেছে দেখে ঘাবড়ে গিয়ে কপি ছুড়ে মেরেছে।’ কিন্তু কে ছুড়ে মারল? ‘গরুখোঁজা’ খোঁজা হচ্ছে তাকে। কারণ ড্রোন পাওয়া গেলেও, তাতে লাগানো ক্যামেরাটা গেল কোথায়?ঘটনার খবর পেয়েই পুলিশকর্মীদের নিয়ে ক্যামেরা খুঁজতে চলে আসেন কাশীপুর থানার ওসি সুভাষ ঘোষ।

জানা গেছে, ভোটের আগে সাফল্য নিয়ে তথ্যচিত্র বানাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। কৃষি কর্মকর্তারা, যারা বাজারের বাইরে ল্যাপটপ নিয়ে বসেছিলেন, তারা এ নিয়ে স্পিকটি নট। ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষ আবদুর রহিম বলেন, ‘এমন একটি ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি। কৃষিপণ্যের বাজার নিয়ে একটি ভিডিও শ্যুটিং হচ্ছিল উদ্যানপালন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে। কপিটি যিনি ছুঁড়েছিলেন, তাকে চিহ্নিত করা গেছে। ক্যামেরাটি উদ্ধারের চেষ্টা হচ্ছে।’

ইতিমধ্যে পুলিশও মাইকে করে প্রচার শুরু করে দিয়েছে। মাইকে ঘোষণা হয়, ‘সরকারি একটি ক্যামেরা হারিয়ে গেছে। কেউ পেয়ে থাকলে ফেরত দিন। না হলে কড়া ব্যবস্থা নেয়া হবে…।’ এখন প্রশ্ন দাঁড়িয়েছে কার বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা?