বুধবার । ডিসেম্বর ১৭, ২০২৫
বাংলা টেলিগ্রাফ ডেস্ক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ৫ জানুয়ারী ২০১৬, ৬:২০ অপরাহ্ন
শেয়ার

রাজস্ব বাড়ানোর উপায় খুঁজছে স্যামসাং


samsungকোম্পানির রাজস্ব আয় বাড়ানোর নতুন উপায় খুঁজছে স্যামসাং ইলেকট্রনিকস। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহীদের একজন গতকাল জানান, প্রচলিত উপায়ের বাইরে গিয়ে নতুন উদ্ভাবনী উপায়ে রাজস্ব বাড়ানোর দিকে আরো মনোযোগী হয়ে উঠেছে প্রতিষ্ঠানটি। খবর কোরিয়া টাইমস।

নতুন বছরের শুরুতে প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে এক বক্তব্যে প্রতিষ্ঠানটির ভাইস চেয়ারম্যান কোয়ান ও-হিউন বলেন, বাজারে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে টেক্কা দিতে প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়ানোর লক্ষ্যে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে স্যামসাং। বৈশ্বিক প্রযুক্তি শিল্পের গঠন বদলে যাওয়ায় নতুন করে বাজার-কৌশল নিয়ে ভাবতে হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটিকে।

স্যামসাংয়ের তিন যুগ্ম প্রধান নির্বাহীর অন্যতম কোয়ান। অন্য দুজনের মধ্যে ইয়ুন বু-কিউন প্রতিষ্ঠানটির হোম অ্যাপ্লায়েন্স বিভাগের প্রধান। আরেকজন প্রধান নির্বাহী শিন জং-কিউন স্যামসাংয়ের সেলফোন বিভাগের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

দক্ষিণ সিউলের ইউমিয়ন-ডংয়ে অবস্থিত স্যামসাংয়ের গবেষণা কেন্দ্রে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে কোয়ান বলেন, ‘স্যামসাংয়ের উচিত নিজেকে খাপ খাওয়ানোর উপযোগী করে তোলা। বাজারের গঠনে প্রতিনিয়তই পরিবর্তন আসছে। একই সঙ্গে বিভিন্ন প্রযুক্তির মধ্যে দূরত্বও ঘুচে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। নতুন কিছু করা সম্ভব না হলে আমাদের টিকে থাকাই মুশকিল হয়ে দাঁড়াবে।’

স্যামসাং জানিয়েছে, এ অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৫০০ কর্মকর্তা-কর্মচারী অংশ নেন। তবে প্রতিষ্ঠানে কার্যকর প্রধান লি জায়ে-ইয়ং এতে উপস্থিত হতে পারেননি। উল্লেখ্য, স্যামসাংয়ের চেয়ারম্যান লি কুন-হি হূদযন্ত্রে অস্ত্রোপচারের জন্য সিউলের একটি হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর থেকে প্রতিষ্ঠানটির বড় ধরনের কোনো সমাবেশ হচ্ছে না।

কোয়ান আরো জানান, স্যামসাং ইলেকট্রনিকসের জন্য আরেকটি চ্যালেঞ্জপূর্ণ বছর হয়ে উঠতে যাচ্ছে ২০১৬ সাল। বিশেষ করে বাজার অনিশ্চয়তা বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে আরো কৌশলী হয়ে উঠতে হবে প্রতিষ্ঠানটিকে।

স্যামসাংয়ের অন্যতম জ্যেষ্ঠ নির্বাহী আরো বলেন, আমাদের আশঙ্কা ২০১৬ সালেও বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধিতে শ্লথতা বজায় থাকবে। আরেকটি বড় ইস্যু হলো, উদীয়মান বাজারগুলোয় অনিশ্চয়তা বাড়বে অনেক। স্মার্টফোন, টেলিভিশন ও মেমোরি চিপের বাজার দখলের লড়াইয়ে স্যামসাংকে আরো শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতার সম্মুখীন হতে হবে।

কোয়ানের ভাষ্য অনুযায়ী, পরিবর্তিত বাজার পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক প্রযুক্তি ও সেলফোনভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবা শিল্পের ব্যাপক প্রসারণের সম্ভাবনা রয়েছে। প্রধানত নতুন ও উদীয়মান হওয়ায় প্রযুক্তি শিল্পের পরিবর্তিত অবস্থায় লাভবান হতে যাচ্ছে খাত দুটি। প্রতিদ্বন্দ্বীদের মোকাবেলায় স্যামসাংকে নতুন চিন্তা ও ধারণার উদ্ভাবন ও উন্নয়ন ঘটানো এ মুহূর্তে জরুরি হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন উদ্ভাবনী মডেলের জনপ্রিয়তা বাড়ার পাশাপাশি বৈশ্বিক হার্ডওয়্যারনির্ভর বাজারও এখন বেশ দুর্বল হয়ে পড়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা বাড়লেই উদ্ভাবনী চিন্তার প্রসার ঘটবে, যা স্যামসাংকে অন্যদের চেয়ে আলাদা হিসেবে প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখবে।

উল্লেখ্য, বৈশ্বিক স্মার্টফোন উৎপাদনে শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান স্যামসাং ইলেকট্র্রনিকস। ধারণা করা হচ্ছে, গত বছরের শেষ প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) প্রতিষ্ঠানটির পরিচালন মুনাফা কমে দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ কোটি দক্ষিণ কোরীয় ওনে (৫৮৮ কোটি ১৯ লাখ ডলার)। প্রধানত, প্রযুক্তিনির্ভর পণ্যের চাহিদা কমে আসার পাশাপাশি বিভিন্ন চিপ ডিসপ্লে পণ্যের দরপতনই প্রতিষ্ঠানটির পরিচালন মুনাফা কমার কারণ। এ পণ্যগুলো নির্মাণের দিক থেকেও এখন পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী শীর্ষস্থান দখলে রেখেছে স্যামসাং ইলেকট্র্রনিকস।

অন্যদিকে স্থানীয় ফান্ড ট্র্যাকার প্রতিষ্ঠান এফএনগাইড ২৫টি বাজার প্রতিনিধি প্রতিষ্ঠানের পূর্বাভাসের মধ্যমা নির্ণয়ের মাধ্যমে জানিয়েছে, ২০১৫ সালের শেষ প্রান্তিকে স্যামসাংয়ের পরিচালন মুনাফা দাঁড়াতে পারে ৬ লাখ ৬৮ হাজার কোটি ওনে (৫৭৮ কোটি ১১ লাখ ডলার)।

উল্লেখ্য, আগামী শুক্রবার প্রতিষ্ঠানটির এ-সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশের কথা রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত বছর স্যামসাংয়ের মোট বিক্রি হয়েছে ২০০ ট্রিলিয়ন দক্ষিণ কোরীয় ওন (১৬ হাজার ৮০৫ কোটি ৪০ লাখ ডলার)। প্রত্যাশিত মোট বার্ষিক পরিচালন মুনাফার পরিমাণ ২৭ ট্রিলিয়ন ওনের (২ হাজার ২৬৮ কোটি ৭৩ লাখ ডলার) চেয়ে সামান্য কম।