উগান্ডায় শ্রমিক পাঠানোর নামে অসহায় মানুষদের বনে জঙ্গলে ভয়ঙ্কর জীবনের দিকে ঠেলে দিচ্ছে এক শ্রেণির দালাল প্রতারক চক্র। দেশে-বিদেশি এ প্রতারক চক্রের অন্যতম হোতা মো: জাহাঙ্গীর আলম মিন্টুকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
তার কাছ থেকে বিপুল সংখ্যক পাসপোর্ট ও জাল স্ট্যাম্প উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানায় র্যাব।
র্যাব কর্মকর্তারা জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সকাল সাড়ে ১১টার দিকে পল্টন থানার ৭৮, নয়া পল্টন, মসজিদের গলি, সনজরী টাওয়ারের আল শুভ অভারসিস নামক অফিসে অভিযান পরিচালনা করা হয়। পরে মোঃ জাহাঙ্গীর আলম মিন্টুকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় মানব পাচারে ব্যবহৃত ১৭৪ টি পাসর্পোট, ১০ পাতা জাল ভিসা যুক্ত পাসপোর্টের ফটোকপি, ২৫টি বিভিন্ন ব্যক্তির পাসপোর্ট এর ফটোকপি, ১৮ টি বিভিন্ন দেশের ভিসার ফটোকপি, ০৩ টি প্লাস্টিক ইমিগ্রেশন কিøয়ারেন্স কার্ড, ২ টি সিপিইউ, ২ টি মনিটর, ১ টি প্রিন্টার, ১৬ টি বিবিধ সীল, ১ টি পেনড্রাইভসহ কিছু সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।
র্যাবের বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ২০/২৫টি অভিযোগের ভিত্তিতে র্যাব-৩ জানতে পারে যে, পল্টন থানাধীন এলাকায় একটি দালাল চক্র মানুষকে শ্রমিক হিসেবে বিদেশে পাঠানোর নামে পাচার করে আসছে। চক্রটি রাজধানী ঢাকায় অবস্থান করে তাদের দালাল অথবা এজেন্টের মাধ্যমে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে নি¤œবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির লোকজনকে প্রবাসে উন্নত জীবন যাপনের আশ্বাস দিয়ে ভ্রমণ ভিসায় পৃথিবীর অনুন্নত দেশে পাঠায়। পরবর্তী সময়ে সেসব দেশে তাদের আটকে রেখে মুক্তিপণ দাবি করে। মুক্তিপণ পরিশোধে ব্যর্থ হলে চালানো হয় অমানুষিক শারীরিক নির্যাতন।
মিন্টু ওইসব ব্যক্তিদের ভাল বেতনে চাকরি দেয়ার কথা বলে ১৪ দিনের ভ্রমণ ভিসায় উগান্ডায় পাঠায়। উগান্ডায় অবস্থানরত এই চক্রের আরেক সদস্য মোঃ জাহাঙ্গীর আলম ওরফে আলম বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া ব্যক্তিদের বিমানবন্দরে গ্রহণ করে। এ কাজে সে দেশে জাহাঙ্গীরের কথিত স্ত্রী সুমাইয়াও সহযোগিতা করে থাকে।
আগত ব্যক্তিদের একটি নির্জন পাহাড়ী এলাকায় নিয়ে গিয়ে দুটি স্থানে থাকার জায়গা করে দেয়। তাদের কোন কাজ না দিয়ে ওই স্থানে অর্ধাহারে-অনাহারে আটকে রাখে। ১৪ দিন পরে ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে তারা জাহাঙ্গীরকে কাজ দেয়ার ব্যাপারে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। এসময় জাহাঙ্গীরের সাথে তাদের বাগবিতণ্ডা হয়। বাগবিতণ্ডার এক পর্যায়ে স্থানীয় পুলিশ ওই স্থানে হাজির হয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়।
অবৈধ অভিবাসী হিসবে পরিগণিত হওয়া এই ব্যক্তিদের খবর উগান্ডার মিডিয়ায় প্রচার করা হয়, যা দেশের ভাবমূর্তিও ক্ষুন্ন করে।