কঠিন সংকটময় সময় পার করছে কোরিয়ার রাজনীতি। সংকট নিরসনে সরকারী দল এবং বিরোধী দলগুলো আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। সব দলের মত নিয়ে ছোয়ে সুন সিলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ইতিমধ্যে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে থাকা অবস্থায় সোমবার রাতে গ্রেফতার করা হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার চলমান রাজনৈতিক কেলেঙ্কারির মূলে থাকা ছোয়ে সুন সিলকে। প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সম্পর্কের প্রভাব খাটিয়ে রাষ্ট্রীয় বিষয়ে হস্তক্ষেপের অভিযোগে ছোয়ে সুন সিলকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
ছোয়ে সুন সিলের ব্যক্তিগত নোটবুক থেকে পাওয়া তথ্য কোরিয়ার টিভি চ্যানেল জেটিবিসি প্রচার করার পর থেকেই সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে খারাপ সময় পার করছে কোরিয়ার রাজনীতি। সাধারণ মানুষের আস্থা হারিয়েছেন প্রেসিডেন্ট পার্ক। গত সোমবার করা এক জরিপে প্রেসিডেন্ট পার্কের প্রতি সমর্থন প্রায় ১০শতাংশে নেমে গেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সিউল এবং তার আশেপাশে এলাকায় প্রেসিডেন্ট পার্কের সমর্থন কমে ৯ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে।
এদিকে প্রধান দুই বিরোধী দল ডেমোক্রেটিক পার্টি এবং পিপলস পার্টি প্রেসিডেন্টকেও বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে। অস্থিরতা সরকারী দল সেনুরি পার্টির মধ্যেও। বেশিরভাগ পার্লামেন্ট মেম্বার প্রেসিডেন্ট পার্কের বিরোধীতা করছেন। পার্কের ঘনিষ্ঠরাও পার্কের সংগ ত্যাগ করছেন। প্রেসিডেন্ট পার্ক পদত্যাগ করলেও সমস্যা সহজে সমাধান হবে না বলে মনে করছেন কোরিয়ার রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
অভিযোগ রয়েছে, প্রেসিডেন্ট পাক কুন হের প্রিয়ভাজন ছোয়ে সুন-সিল বিভিন্ন সময়ে অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে বেশ কয়েকটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করেছেন। এছাড়া সরকারি সিদ্ধান্ত প্রণয়নে এবং প্রেসিডেন্টের ব্যক্তিগত ও দাপ্তরিক বিষয়ে মাত্রাতিরিক্ত প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। কৌঁসুলিরা জানান, ছোয়ে সুন সিলের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখছেন তারা।
প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্তে ছোয়ে সুন সিলের অবৈধ প্রভাব বিস্তারের বিষয়টি জনসমক্ষে আসার পর থেকেই হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের পাশাপাশি ছোয়ে সুন সিলকে গ্রেফতারের দাবি জানায় বিক্ষোভকারী জনতা। এদিকে গত সপ্তাহান্তে পদত্যাগ করেছেন পাকের শীর্ষস্থানীয় আট সহযোগী।
হাতকড়া ও সার্জিক্যাল মাস্ক পরিয়ে ৬০ বছর বয়সী ছোয়ে সুন সিলকে গতকাল সকালে আদালতে হাজির করা হয়। তবে একজন কৌঁসুলি ও ছোয়ে সুন সিলের আইনজীবী জানান, সোমবার রাতেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে আটক করা হয়েছে।
আদালত আটটি ব্যাংককে ছোয়ে সুন সিলের আর্থিক লেনদেন-সংক্রান্ত নথিপত্র পেশ করার আদেশ দিয়েছেন। আলামত ধ্বংস করার সম্ভাবনা থাকায় ছোয়ে সুন সিলকে আটক রাখার কথা জানানো হয়েছে।