Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

বাণিজ্য ইস্যুতে দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানকে যুক্তরাষ্ট্রের চাপ

Korea-Japan-main

রাজনৈতিক ইস্যুতে দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানকে আশ্বস্ত করলেও বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক ইস্যুতে দেশ দুটির ওপর যুক্তরাষ্ট্রের চাপ অব্যাহত রয়েছে। সফররত মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স জাপানকে বাজার উদারীকরণ ও বিনিয়োগ বাড়াতে বলেছেন। এর আগে তিনি দক্ষিণ কোরিয়াকে বলেছেন, কোরিয়া-যুক্তরাষ্ট্র মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (কোরাস) আশানুরূপ ফল প্রদানে ব্যর্থ হচ্ছে। খবর ব্লুমবার্গ ও রয়টার্স।

chardike-ad

গতকাল মঙ্গলবার থেকে টোকিওতে যুক্তরাষ্ট্র-জাপান অর্থনৈতিক সংলাপ শুরু হয়েছে। জাপানের প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে এ সংলাপ শুরু হয়। মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স এবং জাপানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী তারো আসো সংলাপে নিজ নিজ দেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন। সংলাপ শুরুর আগে সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আজ আমরা অর্থনৈতিক সংলাপের একটি প্রক্রিয়ার সূচনা করতে যাচ্ছি। এর ফলে ভবিষ্যতে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য আলোচনা হতে পারে।’

জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সঙ্গে ভোজসভায় মিলিত হওয়ার পর মাইক পেন্স এ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন। জাপানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী তারো আসো এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন। জাপানের কর্মকর্তারা দুই দেশের অর্থনৈতিক সংলাপকে দ্বিপক্ষীয় মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি আলোচনার ফোরাম হিসেবে কাজে লাগাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স সে সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন।

মাইক পেন্স বলেন, ‘ভবিষ্যতে কোনো একসময়ে আমরা হয়তো অর্থনৈতিক সংলাপে লব্ধ শিক্ষাকে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির আনুষ্ঠানিক আলোচনায় কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারি। তবে আমি বিষয়টি ভবিষ্যতের হাতেই ছেড়ে দিচ্ছি।’

জাপানের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি আলোচনার বিষয়ে মাইক পেন্সের রক্ষণশীল কথাবার্তায় মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রী উইলবার রসের বক্তব্যের প্রতিধ্বনি শোনা যাচ্ছে। উইলবার রস গতকাল সকালে টোকিওতে জাপানের বাণিজ্যমন্ত্রী হিরোশিগে সেকোর সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে সাংবাদিকরা তাকে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি আলোচনার বিষয়ে প্রশ্ন করেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘এ বিষয়গুলো কেমন হবে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। আমরা অবশ্যই জাপানের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক বাড়াতে চাই। একটি চুক্তির মাধ্যমেই আমরা কাজটি করতে চাই।’

যুক্তরাষ্ট্র জাপানকে বাণিজ্য উদ্বৃত্ত হ্রাস এবং কৃষিসহ কয়েকটি সুরক্ষিত খাত উদারীকরণের বিষয়ে চাপ দিয়ে আসছে। উইলবার রস বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র দ্বিমুখী চুক্তির মাধ্যমে টোকিওর সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক বৃদ্ধি করতে চায়।’ টোকিওর কর্মকর্তাদের আশঙ্কা হলো, দ্বিমুখী চুক্তি হলে রাজনৈতিক স্পর্শকাতর খাতগুলো উদারীকরণের জন্য মার্কিন চাপ আরো বাড়বে।

অর্থনৈতিক সংলাপ শুরুর আগে জাপানের উপ-প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে মাইক পেন্স বলেন, ‘সংলাপের ফলাফলের জন্য ওয়াশিংটন অনন্তকাল অপেক্ষায় থাকবে না। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যখন এ সংলাপে সম্মতি দেন, তখন তিনি অদূর ভবিষ্যতে ফলাফল আনয়নকারী একটি প্রক্রিয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দৃষ্টিভঙ্গি ও অধৈর্য মনোভাবের আমিও অংশীদার।’

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে গত ফেব্রুয়ারিতে দুই দেশের অর্থনৈতিক সংলাপের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। ওয়াশিংটনে দুই নেতার বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। সংলাপে যোগ দিতে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স গতকাল দক্ষিণ কোরিয়া থেকে টোকিও পৌঁছান।

এর আগে গতকাল সকালে মাইক পেন্স

যুক্তরাষ্ট্র-দক্ষিণ কোরিয়া মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি পর্যালোচনা ও সংশোধনের ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি হওয়ার পর পাঁচ বছরে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি দ্বিগুণের বেশি হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ায় মার্কিন কোম্পানিগুলোকে অনেক বাধার মুখোমুখি হতে হয়।

সিউলে আমেরিকান চেম্বার অব কমার্সের এক সমাবেশে মাইক পেন্স বলেন, ‘বাণিজ্য ঘাটতির বিষয়টি অপ্রিয় সত্য। বাণিজ্য সম্পর্কের কোথায় খামতি আছে, সে বিষয়ে আমাদের সত্ হতে হবে। আমরা আমাদের সবক’টি বাণিজ্য সম্পর্ক পর্যালোচনা করছি। কোরাসও পর্যালোচনা

করা হচ্ছে।’

মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি পর্যালোচনার ঘোষণায় দক্ষিণ কোরিয়ার গাড়ি প্রস্তুতকারকরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাদের ধারণা, এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রে কোরীয় গাড়ি রফতানির পথ সংকুচিত হবে।

২০১২ সালে যুক্তরাষ্ট্র-দক্ষিণ কোরিয়া মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি কার্যকর হয়।