Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

কোরিয়ান নারীদের যৌনদাসী বানাত জাপানী সেনারা!

korean-womenদ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় কোরিয়ার অনেক নারীকে জোর করে ধরে নিয়ে নিজেদের যৌনদাসী করে রাখেন জাপানের সেনাসদস্যরা। ওই নারীদের সে সময় ‘কমফোর্ট উইমেন’ বা স্বস্তিদাতা নারী বলা হতো। প্রায় ৭৩ বছরের পুরোনো সেই ছবি ও ভিডিও চিত্র প্রথমবারের মতো প্রকাশ করেছে দক্ষিণ কোরিয়া সরকার।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়, দক্ষিণ কোরিয়ার সরকারি অর্থায়নে সিউল ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক প্রায় দুই বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল আর্কাইভ ঘেঁটে এই ভিডিও চিত্র উদ্ধার করেছেন।

chardike-ad

এক বিবৃতিতে গবেষকেরা বলেন, ১৯৪৪ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পটভূমিতে তোলা ভিডিও চিত্রটি চীনের ইউনান প্রদেশ থেকে মার্কিন সেনারা ধারণ করেছিল। এ সময় ইউনান প্রদেশ জাপানি সেনাদের দখলে ছিল।

গবেষক দলের সদস্য কাঙ সুং-হিউন বলেন, ‘কমফোর্ট উইমেনের ভিডিও চিত্রটি দক্ষিণ কোরিয়ার নিজস্ব কোনো উপাত্ত নয়। এ গুলো জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের তথ্য। এ বিষয়ে আমাদের নিজস্ব কোনো তথ্য নেই।’

১৮ সেকেন্ডের সাদাকালো প্রিন্টের ওই ভিডিও চিত্রে দেখা গেছে, সাতজন নারী একটি ভবনের সামনে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছেন। সেখানে চীনের একজন সেনাসদস্যের সঙ্গে এক নারীকে কথা বলতে দেখা যায়।

গবেষকেরা বলেন, চীনের ওই সেনাসদস্যের সঙ্গে কথা বলা নারী মার্কিন সেনাদের কাছে নিবন্ধিত ছিলেন। ভিডিও চিত্রে দেখানো আরও দুজন নারী এর আগে কমফোর্ট উইমেনদের প্রকাশিত ছবিতেও ছিলেন। যুদ্ধের সময় জাপানের সেনারা দক্ষিণ কোরিয়া, চীন, ইন্দোনেশিয়া, তাইওয়ান, ফিলিপাইনসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে তরুণী ও নারীদের ধরে এনে নিজস্ব যৌনপল্লিতে রাখতেন। পরে তাঁদের ওপর জোর করে যৌন নির্যাতন করতেন।

দক্ষিণ কোরিয়ার মানবাধিকারকর্মীদের ধারণা, জাপানের সেনাসদস্যরা তাঁদের মনোরঞ্জনের জন্য কোরিয়ার প্রায় দুই লাখ নারীকে যৌনদাসীর শিকার হতে হয়েছিল।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, জাপানের সেনারা যে কোরিয়ার নারীদের যৌনদাসী হিসেবে ব্যবহার করতেন, তার উপযুক্ত প্রমাণ হলো এসব ছবি এবং যৌন নির্যাতনের শিকার জীবিত নারীদের বক্তব্য।

গবেষকেরা বলেন, ১৯৪৪ সালে জাপানি সেনাদের যৌনপল্লিতে আটক থাকা সাত নারীকে মুক্ত করে দেয় চীন-যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ বাহিনী। ভিডিও চিত্রে থাকা ওই সাত নারীকেই সম্ভবত মুক্ত করে দেওয়া হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, কোরিয়ার নারীদের জোর করে যৌনদাসী করে রাখার বিষয়ে ক্ষতিপূরণ না দেওয়া ও ক্ষমা না চাওয়ায় দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে জাপানের সম্পর্কে টানাপোড়েন ছিল। ২০১৫ সালে এ ব্যাপারে দেশ দুটি একমত হয়। দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চায় জাপান। এ ছাড়া যৌন নির্যাতনের শিকার নারীদের সহায়তায় ৮৮ লাখ ৪০ হাজার মার্কিন ডলার দিতে প্রতিশ্রুতি দেয় জাপান। এরপরও দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের তেমন একটা উন্নতি হয়নি। দক্ষিণ কোরিয়ার বুশান শহরে জাপান কনস্যুলেটের সামনে কমফোর্ট উইমেনের ভাস্কর্য সরানোর জন্য কোরিয়া সরকারের কাছে দাবি করেছে জাপান। দেশটির দাবি, বুশানে জাপান কনস্যুলেটের সামনে কমফোর্ট ওমেনের ভাস্কর্য দুই দেশের মধ্যে ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত চুক্তির পরিপন্থী। যদিও দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে-ইন তাঁর নির্বাচনী প্রচারণার সময় জানিয়েছিলেন, আগের সরকারের করা চুক্তি তাঁরা প্রত্যাখ্যান করবেন। প্রয়োজনে নতুন করে চুক্তি হতে পারে।