Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

ভারতের ‘হঠকারিতা’ নিয়ে চীনের অভিনব প্রচার

chinaব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনের আসরে চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আদৌ আলাদা কোনো বৈঠক হবে কি? হলে সেই বৈঠক থেকে ডোকলাম সংকটের সমাধান সূত্র বেরোবে কি? সাউথ ব্লকে এই মুহূর্তে এটাই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।

আগামী মাসের ৩ থেকে ৫ সেপ্টেম্বর চীনের শিয়ামেনে এ সম্মেলন বসছে। ঘটনা হলো, মোদির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের সম্ভাবনা নিয়ে চীন এখনো হ্যাঁ বা না কিছুই বলেনি।

chardike-ad

ডোকলামে ভারত ও চীনের অনড় অবস্থানের দুই মাস পূর্ণ হলো। এই দুই মাস ধরে চীন প্রায় নিয়মিত ভারতকে নানাভাবে হুংকার দিয়েছে। ভারতের ‘হঠকারিতা’ নিয়ে তারা অভিনব প্রচারও শুরু করেছে। কিন্তু ভারত নিরুত্তর। ডোকলাম ছেড়ে ভারত পিছু হটেনি। তারা জানিয়েছে, সরে যেতে হলে চীনকেও ডোকলাম ছাড়তে হবে। তারপর সীমান্ত-বিবাদ মেটাতে তিন দেশ আলোচনায় বসুক।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মনে করছে, হুমকি সত্ত্বেও ভারত যে এমন অনড়-অটল থাকবে, চীন তা বুঝতে পারেনি। আন্তর্জাতিক দুনিয়ার সহানুভূতিও যে ভারতের দিকে, চীন সম্ভবত তা অনুধাবন করেছে বলে সাউথ ব্লকের ধারণা। এ কারণে গত কয়েকটি দিন চীন নতুন করে কোনো হুমকি দেয়নি। লাদাখে দুই বাহিনীর মধ্যে ‘হাতাহাতির’ খবরও তারা স্বীকার করেনি। তার বদলে চীনের সরকারি সংবাদ সংস্থা জিনহুয়া এক নতুন ধরনের প্রচার শুরু করেছে, যার মাধ্যমে তারা ভারতের ‘হঠকারিতার’ পরিচয় দিতে চেয়েছে। ইংরেজি ভাষায় তিন মিনিটের ওই ভিডিওতে ডোকলামে ভারতের ‘সাতটি অন্যায়ের’ ফিরিস্তি দিয়ে বলা হয়েছে, ভারত জেগে ঘুমোচ্ছে, তাই তার হুঁশ ফেরানো অসম্ভব। ওই প্রচার চীন করছে টুইটার মারফত।

ভারত মনে করছে, একতরফা ডোকলাম ছেড়ে যাওয়ার শর্ত জুড়ে তারা যে মুশকিলে পড়ে গেছে, চীন তা অনুধাবন করেছে। এখন কীভাবে এই জাঁতাকল থেকে বেরোনো যায়, সেটাই তারা ভেবে চলছে। চীনের কথা ও কাজের মধ্যে সামঞ্জস্যহীনতা এ কারণেই। যেমন এই প্রথম ১ আগস্ট পিএলএর প্রতিষ্ঠা দিবসে তারা ভারতীয় সীমান্তরক্ষীদের আমন্ত্রণ জানায়নি এবং ১৫ আগস্ট ভারতীয় স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানেও হাজির হয়নি। অথচ লাদাখে হাতাহাতির পরের দিন দুই বাহিনী ‘ফ্ল্যাগ মিটিং’ করল এবং চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানাল, সীমান্তে শান্তি রক্ষার লক্ষ্য থেকে দুই দেশের বাহিনীর সরে যাওয়া উচিত নয়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ধারণা, ভারতকে উত্তেজিত করাই চীনের লক্ষ্য। সেই চেষ্টাই তারা নানাভাবে করছে। ভারত কিন্তু কোনো প্ররোচনায় পা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যে কারণে লাদাখে হাতাহাতির বিষয় নিয়েও ভারত আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া দেয়নি।

ভারতের সিদ্ধান্ত দুটি। ডোকলাম থেকে একতরফা সরে না এসে আলোচনার মধ্য দিয়ে উত্তেজনা প্রশমন ও সমাধানের চেষ্টা এবং আন্তর্জাতিক স্তরে বিশেষ করে এশীয় দেশগুলোর সমর্থন আদায়। যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দুনিয়া ইতিমধ্যেই ভারতের প্রতি সহানুভূতিশীল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি চীন থেকে ফেরার পথে মিয়ানমার যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র অনুযায়ী, সেই সফর ৬ ও ৭ সেপ্টেম্বর। আগামী সপ্তাহে নেপালের প্রধানমন্ত্রী শের বাহাদুর দেউবা ভারতে আসছেন। ডোকলাম নিয়ে নেপালকে পাশে পেতে চীন মরিয়া। নেপালের প্রধানমন্ত্রীর সফরকে ভারত তাই বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে।