ভারতের স্বঘোষিত আধ্যাত্মিক গুরু গুরমিত রাম রহিম সিং তার দুই নারী ভক্তকে ধর্ষণের অভিযোগে আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। পাঞ্জাব ও হরিয়ানা রাজ্য জুড়ে টান টান উত্তেজনা আর নিরাপত্তার ব্যাপক কড়াকড়ির মধ্যে শুক্রবার চণ্ডিগড়ের পাঁচকুলার একটি বিশেষ আদালত এই রায় ঘোষণা করে বলে এনডিটিভির খবর।
আগামী ২৮ আগস্ট তার বিরুদ্ধে সাজা ঘোষণা করা হবে। তাকে আদালত থেকেই পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয় এবং আম্বালা কারাগারে পাঠানো হচ্ছে।
আদালতের রায় ঘোষণার পর গুরমিত রাম রহিম সিংয়ের ভক্তদের বেপরোয়া তাণ্ডব শুরু হয়েছে। এ পর্যন্ত ৩০ জনের নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। অন্তত ২০০ জন্য আহত হওয়ায় নিহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষ চলছে। অন্তত ১০০০ দুর্বত্তকে আটক করা হয়েছে।
স্বঘোষিত ধর্মগুরুকে আদালত কমপক্ষে ৭ বছরের সাজা ঘোষণা করতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। নিয়ম অনুসারে ৫ বছরের উপরে কারাদণ্ড ঘোষণা হলে হাইকোর্ট থেকে জামিন নিতে হবে। জামিন না পাওয়া পর্যন্ত অভিযুক্তকে কারাগারে থাকতে হবে।
আজ আদালতের রায় ঘোষণার পর গুরমিত রাম রহিম সিংয়ের সমর্থকরা বিভিন্নস্থানে ব্যাপক ভাঙচুর এবং আগুন ধরিয়ে দিয়ে তাণ্ডব শুরু করেছে। সমর্থকরা শতাধিক গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়ে সহিংস বিক্ষোভ দেখাচ্ছে। পাঞ্জাবের বেশ কয়েকটি রেল স্টেশনে আগুন ধরানো হয়েছে। ওই ঘটনায় পাঞ্জাবের ভাটিন্ডা, মনসা এবং ফিরোজপুরে কারফিউ জারি করা হয়েছে।
পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং রাজ্যবাসীকে শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানিয়েছেন। হরিয়ানার বেশ কয়েকটি শহরে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছে। পঞ্চকুলাতে সেনাবাহিনী ফ্ল্যাগমার্চ করছে। ওই ঘটনার পর দিল্লি এবং উত্তরাখণ্ডে উচ্চসতর্কতা জারি করা হয়েছে।
পনেরো বছর আগে নিজের আশ্রমেই দুজন ভক্ত মহিলাকে ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির চিঠির সূত্র ধরে ২০০২ সালে এই ধর্মগুরুর বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করে সিবিআই। সেখানে বলা হয়, ১৯৯৯ সালে নিজের আশ্রমে দুই শিষ্যাকে ধর্ষণ করেন রাম রহিম।
২০০৭ সালে শুনানি শুরুর পর দশ বছরের মামলাটি রায়ের পর্যায়ে আসে। বিচারের পুরোটা সময় নিজেকে নির্দোষ দাবি করে এসেছেন ডেরা সাচ্চা সওদার প্রধান।