Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

বিদেশ যেতে কড়াকড়ি

shajalal-international-airportসৌদি আরব, কাতার, কুয়েতসহ যেকোনো দেশে পাড়ি জমানো কর্মীদের একক ভিসার ছাড়পত্রে এখন থেকে দূতাবাসের সত্যায়ন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। যাদের ভিসায় দূতাবাসের সত্যায়ন থাকবে না, তাদের বহির্গমন ছাড়পত্র দেয়া হবে না। গত মঙ্গলবার জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাপরিচালকের দফতর থেকে এমন নির্দেশনাই পাঠানো হয়েছে ব্যুরোর বহির্গমন শাখায়।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর বহির্গমন শাখায় প্রতিদিন ব্রুনাই, ওমান, দুবাই, কুয়েত, কাতার, মালদ্বীপ ও সৌদি আরবগামী কর্মীদের বহির্গমন ছাড়পত্র নিতে রিক্রুটিং এজেন্সির মনোনীত প্রতিনিধির মাধ্যমে আবেদন জমা পড়ছে। পরে আবেদনগুলো ব্যুরোর বহির্গমন শাখার সহকারী পরিচালক (এডি), উপপরিচালক (ডিডি) ও পরিচালকরা (বহির্গমন) যাচাই-বাছাই করে চূড়ান্তভাবে ছাড়পত্র দিচ্ছেন।

chardike-ad

সাম্প্রতিক সময়ে সৌদি আরবগামী একক ভিসার কিছু বিচ্ছিন্ন ফাইলের আবেদনে দূতাবাসের সত্যায়ন ছিল না। তারপরও ওই সব ভিসার বিপরীতে বহির্গমন ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এরপরই বিষয়টি নিয়ে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাপরিচালক সেলিম রেজার নজরে আসে। তিনি বিষয়টি নিয়ে কয়েক দিন অনুসন্ধান করেন।

গত সোমবারও তিনি বহির্গমন শাখায় অবস্থান করেছেন বলে দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে। ওই দিনই তার দফতর থেকে একক ভিসায়ও বহির্গমন ছাড়পত্র নিতে প্রত্যেক দেশে থাকা দূতাবাসের সত্যায়ন বাধ্যতামূলক উল্লেখ করে একটি সার্কুলার জারি করে সেটি নোটিশ বোর্ডে টাঙিয়ে দেয়া হয়। যার দরুন গত মঙ্গলবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত একক ভিসায় (ব্যক্তিগত) জনশক্তি ব্যুরোর পুট-আপ সেকশনে যত আবেদন জমা পড়ে তার একটিতেও বহির্গমন ছাড়পত্র দেয়া হয়নি।

গতকাল জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা একক ভিসার ক্ষেত্রেও দূতাবাসের সত্যায়ন বাধ্যতামূলক করার কথা স্বীকার করে বলেন, এখন থেকে দূতাবাসের সত্যায়ন ছাড়া কোনো ভিসার বিপরীতে আমরা বহির্গমন ছাড়পত্র দেবো না। তিনি বলেন, শুধু সৌদি আরবের ক্ষেত্রেই নয়, অন্যান্য যেসব দেশের ক্ষেত্রে ব্যুরোতে আবেদন জমা পড়ছে সেগুলোর ক্ষেত্রেও দূতাবাসের সত্যায়ন লাগবে। এতে শ্রমিক রফতানিতে আরো স্বচ্ছতা ফিরে আসবে বলে মনে করা হচ্ছে।

গতকাল জনশক্তি রফতানিকারকদের সংগঠন বায়রার এক নেতা নাম না প্রকাশের শর্তে তার ব্যক্তিগত মতামত দিয়ে বলেন, যেসব ভিসা সৌদি আরব থেকে ইতোমধ্যে ইস্যু হয়ে স্ট্যাম্পিং হয়েছে সেই সব হাজার হাজার একক ভিসার কী হবে? স্ট্যাম্পিং হওয়া ভিসায় কিভাবে দূতাবাসের সত্যায়ন আনব?

তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় বা জনশক্তি কর্মসংস্থান ব্যুরো যদি রিক্রুটিং এজেন্সির মালিকদের একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা বেধে দিতেন তাহলে মনে হয় ভালো হতো। এখন এসব ভিসার কী হবে তা নিয়েই তো আমরা শঙ্কায় আছি। অনেক এজেন্সির নামে আসা ভিসার মেয়াদও শেষ হয়ে যাচ্ছে।

উল্লেখ্য জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর পরিসংখ্যান ঘেঁটে জানা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বহির্গমন ছাড়পত্র নিয়ে শ্রমিক বিদেশে গেছে ছয় লাখ ৯০ হাজার ৪৬ জন। এর মধ্যে শুধু সৌদি আরবেই গেছেন তিন লাখ ৯২ হাজার ৬০২ জন। এর বাইরে সেপ্টেম্বর মাসের ১৯ তারিখ পর্যন্ত আরো ৩০ হাজারের বেশি কর্মী বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাড়ি দিয়েছেন। ওই হিসাবে সাড়ে আট মাসে সাত লাখ শ্রমিক বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন।