myanmar-armedরোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক অঙ্গন যখন মিয়ানমারের বিপক্ষে আওয়াজ তুলছে, ঠিক তখনই ভারত দেশটির কাছে অস্ত্র সরবরাহের কথা ভাবছে। এর মাধ্যমে ভারত যে মিয়ানমারকে শক্তভাবে সমর্থন করছে, তা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

ভারতের বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার বার্তাসংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হচ্ছে, মিয়ানমারের নৌবাহিনীর প্রধান ভারত সফরকালে অস্ত্র বিক্রির বিষয়টি আলোচনা হয়েছে। এসময় ভারতের শীর্ষস্থানীয় প্রতিরক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে মিয়ানমারের নৌ- বাহিনীর সদস্যদের প্রশিক্ষণের বিষয়টি নিয়েও উভয় পক্ষের মধ্যে কথাবার্তা হয়।

chardike-ad

রয়টার্সের খবরে বলা হয়, মিয়ানমারের সঙ্গে ভারতের সামরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত মূলত এ অঞ্চলে চীনের প্রভাবের বিপরীতে নিজেদের অবস্থানের জানান দেওয়া।

এমন একটি সময়ে ভারত এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, যখন রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের জন্য বিশ্বব্যাপী সমালোচনা চলছে। রোহিঙ্গাদের প্রতি সহিংসতা বন্ধে মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনীর পদক্ষেপ চেয়ে দেশটির সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণ কর্মসূচি স্থগিত করেছে যুক্তরাজ্য।

mayanmar-armyব্রিটিশ সরকারের একজন মুখপাত্র মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বলেন, বার্মার রাখাইন প্রদেশে চলমান সহিংসতা, এর কারণে সৃষ্ট মানবিক সংকট এবং সেখানে মানবাধিকার লংঘনের যেসব ঘটনা ঘটছে তা নিয়ে আমাদের গভীর উদ্বেগের কারণে সেখানকার বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে গ্রহণযোগ্য কোনো সমাধানে না আসা পর্যন্ত বার্মিজ সেনাবাহিনীর সব শিক্ষা কোর্স স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা।

মিয়ানমার নৌবাহিনীর কমান্ডার-ইন-চিফ অ্যাডমিরাল তিন অং সান বুধবার ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ এবং দেশটির সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর প্রধানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

প্রসঙ্গত, গত ২৪ আগস্ট রাখাইন রাজ্যের ‘বিদ্রোহী রোহিঙ্গা’রা ২৪টি পুলিশ চেকপোস্টে সমন্বিত হামলা চালায় বলে মিয়ানমারের দাবি। এ হামলায় অন্তত ১২ জন সেনা নিহত হয়। ওই হামলার পরই মিয়ানমারের সেনারা অভিযান শুরু করে। রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতন, ধর্ষণ ও হত্যাযজ্ঞ শুরু করে।

প্রাণে বাঁচতে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। জাতিসংঘের তথ্য মতে, ২৫ আগস্টের পর ৪ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছে। এ অভিযানকে মিয়ানমারের জাতিগত নিধন বলে উল্লেখ করে সংস্থাটি।

এ ইস্যুতে কঠোর সমালোচনার মুখে আন্তর্জাতিক চাপে পড়েছে মিয়ানমার। ‘সেনাশাসিত’ দেশটির কার্যত নেতা অং সান সু চির নোবেল প্রত্যাহারেরও দাবি উঠেছে।