অনলাইন প্রতিবেদক, ১১ অক্টোবর ২০১৩:
দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার ও বিরোধী দল দেশটিতে সাপ্তাহিক সর্বোচ্চ কাজের সময় ৬৮ ঘণ্টা থেকে কমিয়ে ৫২ ঘণ্টা করার বিষয়ে একমত হয়েছে। নতুন কর্মপদ্ধতি ২০১৬ সাল থেকে কার্যকর হবে। সম্প্রতি জাতীয় সংসদে ক্ষমতাসীন স্যানুরী পার্টি এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় কর্তৃক আয়োজিত এক বৈঠকে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। বৈঠকে প্রেসিডেন্ট পার্কের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে কর্মঘণ্টা কমানো ও কর্মসংস্থানের হার ৭০ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্যে বর্তমান শ্রম নীতিমালা পর্যালোচনা করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
উল্লেখ্য, ওইসিডি (অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সহযোগিতা সংস্থা) ভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে কোরিয়ায় কর্মঘণ্টা সবচেয়ে বেশী। একজন কোরিয়ান কর্মজীবী বছরে গড়ে ২১৯৩ ঘণ্টা কাজ করেন যেখানে উল্লেখিত সংস্থার অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোতে বার্ষিক কাজের সময় গড়ে ১৭৪৯ ঘণ্টা।
প্রস্তাবনায় সাপ্তাহিক কাজের সময় ৪০ ঘণ্টা ও ওভারটাইম ১২ ঘণ্টার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার সুপারিশ করা হয়েছে। নতুন খণ্ডকালীন কাজের সুযোগ তৈরি করার লক্ষ্যে প্রস্তাবিত নতুন নীতিমালায় শনি ও রবিবারও কর্মক্ষেত্র খোলা রাখার কথা বলা হয়েছে।
তবে নতুন এ নীতিমালা একইসাথে সবাইকে পালন করতে বাধ্য করা হবে না। এক হাজারের উপর কর্মী রয়েছে এমন প্রতিষ্ঠানগুলোকে এ নিয়ম ২০১৬ সাল থেকে মানতে হবে। ১০০ থেকে ১০০০ কর্মী রয়েছে এমন প্রতিষ্ঠানগুলোতে ২০১৭ ও একশ’র কম কর্মী নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠানে ২০১৮ সাল থেকে নতুন নিয়ম কার্যকর হবে।
বৈঠকে নতুন কর্মঘণ্টা বাস্তবায়নের পর ন্যূনতম মজুরী বাড়ানোর বিষয়েও সরকার ও বিরোধী দল একমত হয়েছে।
এদিকে প্রত্যাশিতভাবেই ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো নতুন নীতিমালার বিরোধিতা করছে। তাদের আশংকা, এর ফলে অতিরিক্ত খন্ডকালীন কর্মী নিয়োগ দিতে হবে যা তাদের খরচ বৃদ্ধি করবে এবং উৎপাদন কমিয়ে দেবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, নিয়মিত চাকুরেদের উপর চাপ কমিয়ে খণ্ডকালীন কাজের সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে কর্মসংস্থানের হার সাময়িকভাবে বাড়ানো সম্ভব হলেও দেশের বেকারত্ব হ্রাসে তা কোন কার্যকর ভূমিকা রাখবে না।