Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

গুগলের বাজারমূল্য কত?

ইন্টারনেট বিশ্বে একটা বিষয় বেশ প্রচলিত হয়ে গেছে যে, গুগল কাউকে ফেরায় না। অর্থাৎ যা-ই লিখে অনুসন্ধান করুন না কেন, সংশ্লিষ্ট কিছু না কিছু ফলাফল পাওয়া যাবেই। গত ১৯ বছরে গুগল শব্দটার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে গেছে সর্বশেষ সব প্রযুক্তি, যা প্রতিষ্ঠানটিকে প্রযুক্তি খাতে বিশেষ করে অনুসন্ধান সেবা খাতে অদম্য করে তুলেছে। বিশ্বের প্রত্যেক পেশার মানুষের নানা প্রশ্ন ও কৌতূহলের সমাধান দিয়ে আসছে এ প্রতিষ্ঠান। কিন্তু ইন্টারনেট জায়ান্ট গুগলের আর্থিক মূল্য কত এবং প্রতিষ্ঠানটি সম্পর্কে কতটুকু জানি?

chardike-ad

১৯৯৮ সালের ৪ সেপ্টেম্বর সের্গেই ব্রিন এবং ল্যারি পেজের হাত ধরে আনুষ্ঠানিক পথচলা শুরু হয় সার্চ ইঞ্জিন গুগলের। গুগল ডটকম ডোমেইন নেম নিবন্ধিত হয় এরও এক বছর আগে ১৯৯৭ সালের সেপ্টেম্বরে। নিত্যনতুন সেবা ও বিভিন্ন ফিচারের সমন্বয়ে এখন বিশ্বের এক নম্বর অনুসন্ধান সেবাদাতা গুগল। মজার বিষয় হলো, এর নামকরণ হয়েছিল একটি ভুল থেকে। অবশ্য পরে ভুল ধরা পড়লেও নিবন্ধিত নাম আর পরিবর্তন করা হয়নি। কারণ ততদিনে এ নামেই বেশ পরিচিত ও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল গুগল— যা এখন ব্যক্তি খাতের প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিশ্বের সবচেয়ে সফল উদ্ভাবনগুলোর একটি।

বর্তমানে গুগলের প্যারেন্ট কোম্পানি অ্যালফাবেটের প্রতি শেয়ারের মূল্য ১ হাজার ৫৬ ডলারে পৌঁছেছে। অ্যালফাবেটের আয়ের সিংহভাগ আসে গুগলের বিভিন্ন সেবা থেকে। কিন্তু ইন্টারনেট পাওয়ার হাউজ খ্যাত গুগলের আর্থিক মূল্য কত?

ফোর্বসের তথ্যমতে, গুগলের বাজারমূল্য ১০ হাজার ১৮০ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। গুগলের পাশাপাশি আরো কিছু প্রকল্পের মাধ্যমে ব্যবসা পরিধি বাড়াতে কাজ করছে অ্যালফাবেট। সামগ্রিকভাবে এর বাজারমূল্য ৬০ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়েছে। বিশ্বের প্রথম ট্রিলিয়ন ডলার মূল্যের কোম্পানি হওয়ার লক্ষ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে প্রতিষ্ঠানটি। তবে এ দৌড়ে এগিয়ে রয়েছে প্রযুক্তি কোম্পানি অ্যাপল।

ক্যালিফোর্নিয়ার মাউন্টেন ভিউতে অবস্থিত প্রধান কার্যালয় গুগলপ্লেক্স থেকে অনুসন্ধান সেবাদাতা গুগলের সব কার্যক্রম পরিচালিত হয়। বিশ্বব্যাপী ৬১ হাজার ৮১৪ জন কর্মী রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির। ২০১৬ সালে গুগলের আয় হয়েছে ২ হাজার ১৫০ কোটি ডলার। একই বছর প্রতিদিন গড়ে প্রতিষ্ঠানটির আয়ের পরিমাণ ছিল প্রায় ৫ কোটি ৮০ লাখ ডলার।

গুগলের প্রতিষ্ঠাতা ল্যারি পেজ এবং সের্গেই ব্রিন এরই মধ্যে শীর্ষ ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন। বর্তমানে বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের তালিকায় যথাক্রমে শীর্ষ ১২ ও ১৩ নম্বরে রয়েছেন প্রযুক্তি খাতের এ দুই উদ্যোক্তা। গুগল প্রতিষ্ঠাতারা দুজনই স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন। যৌথভাবে যাদের মোট সম্পদের পরিমাণ ৮ হাজার ৫০ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে।

গুগল প্রতিষ্ঠার সময় এর উদ্যোক্তা যুগল জানিয়েছিলেন যে, বিজ্ঞাপন দ্বারা অর্থায়নের মাধ্যমে তারা কোনো কোম্পানি সৃষ্টি করতে চায় না। তবে ডিজিটাল বা অনলাইন বিজ্ঞাপন এখন গুগলের আয়ের পথ সম্প্রসারণ করেছে। গত বছর প্রতিষ্ঠানটির আয়ের ৯১ শতাংশ এসেছে বিজ্ঞাপন খাত থেকে।

বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান ব্র্যান্ড তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে গুগল। এটি যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় শীর্ষ চাকরিদাতা কোম্পানি। যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠান তালিকায় যৌথভাবে প্রথম স্থানে রয়েছে অ্যাপল ও কস্টকো নামে একটি প্রতিষ্ঠান।

গুগল সার্চ ফিচার প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটের প্রধান অনুসন্ধান কম্পোনেন্ট। গুগলের এ সেবা এখন বিশ্বব্যাপী এক বাস্তবতায় পরিণত হয়েছে। গুগল এখন যে উপায়ে অনুসন্ধান ফলাফল প্রদর্শন করে, ল্যারি পেজ এবং সের্গেই ব্রিন এর চেয়ে ভালো কিছু প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন।

গুগলের কার্যক্রম এখন শুধু অনুসন্ধান সেবাদানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। ক্রমান্বয়ে এর পণ্য তালিকায় যুক্ত হয়েছে মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম অ্যান্ড্রয়েড, ভিডিও শেয়ারিং সাইট ইউটিউব, জিমইেল, গুগল ডকস, পিক্সেল ফোন, অ্যাডওয়ার্ডস, শিটস, স্লাইডস, গুগল প্লাস, গুগল ম্যাপস, গুগল ট্রান্সলেট ও গুগল ক্রোম। এছাড়া অধিগ্রহণ ও একীভূতকরণের মাধ্যমে এখনো অনলাইন সাম্রাজ্য বিস্তারের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে গুগল।

গুগলের প্যারেন্ট কোম্পানি অ্যালফাবেট এখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই), ভেঞ্চার ক্যাপিটাল, স্মার্টহোম ও স্বচালিত গাড়ি প্রকল্পসহ নানা খাতে কার্যক্রম সম্প্রসারণ করে যাচ্ছে। বণিকবার্তা।