Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

জর্দানে বিয়ের নামে ২০ লাখ টাকা নিয়ে পালালো বগুড়ার প্রতারক

taherul-islamজর্দানে কর্মরত সিরাজগঞ্জের গার্মেন্টসকর্মী নাজমা খাতুনকে সংসার করার প্রলোভনে মওলানা দিয়ে বিয়ে পড়িয়ে ২০ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিয়ে বগুড়ার শিবগঞ্জের চন্দনপুর গ্রামের বাড়িতে পালিয়ে এসেছে তাহেরুল ইসলাম (৩২) নামে এক প্রতারক।

অনেক সন্ধান করে বাড়িতে গেলেও প্রতারকরা ওই নারীকে তাড়িয়ে দিয়েছেন। বাধ্য হয়ে তিনি (নাজমা) রোববার দুপুরে শিবগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। পুলিশ তৎক্ষণাৎ অভিযান চালিয়ে বাড়িতে কাউকে পায়নি। অভিভাবকরা পুলিশের কাছে আগামী শুক্রবার পর্যন্ত সময় নিয়েছেন।

chardike-ad

সিরাজগঞ্জ সদরের পশ্চিম গুপিরপাড়া গ্রমের মৃত আবদুল আজিজের মেয়ে নাজমা খাতুন (৩০) জানান, তিনি আগে ঢাকার গার্মেন্টসে চাকরি করতেন। ২০০৬ সালে জর্ডানে গিয়ে একটি বেসরকারি গার্মেন্টসে চাকরি নেন। সেখানে চাকরি করাকালে সহকর্মী বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার আটমুল ইউনিয়নের চন্দনপুর গ্রামের মৃত আবদুল কুদ্দুসের ছেলে তাহেরুল ইসলামের সাথে পরিচয় হয়। একই গার্মেন্টসে কাজ করায় দু’জনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০০৭ সালে স্থানীয় মওলানার মাধ্যমে কবুল পড়িয়ে দাম্পত্য জীবন শুরু করেন। দেশে ফিরে তাহেরুল তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে করে ঘরে তুলে নেবার প্রলোভন দেন। কিছুদিন আগে বাড়ি করার জন্য তার কাছে টাকা নিয়ে তাহেরুল শিবগঞ্জের চন্দনপুর গ্রামে মামার বাড়ির কাছে জায়গা কেনেন।

তিনি আরো জানান, গত কয়েক বছরে তাহেরুল তার উপার্জিত প্রায় ২০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। গত ৭ নভেম্বর তাহেরুল দেশের বাড়িতে ফিরে আসেন। ২২ নভেম্বর তিনিও (নাজমা) সিরাজগঞ্জে বাপের বাড়িতে ছুটিতে আসেন। ফেরার পর থেকে তাহেরুল তার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। গত ২৩ নভেম্বর বিকালে ভাতিজা রাজু মিয়া ও আনিসুর রহমানকে সাথে নিয়ে তিনি বগুড়ার শিবগঞ্জের চন্দনপুর গ্রামে এলে জানতে পারেন, ওটা তাহেরুলের মামা নেহারুল ইসলামের বাড়ির ঠিকানা। বিষয়টি মামা শ্বশুর নেহারুল ইসলামকে জানালে তিনি তাকে উল্টো হুমকি দিয়ে তাড়িয়ে দেন।

বিষয়টি আটমুল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোজাফফরকে জানালে তিনিও এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেবার পরামর্শ দেন। বর্তমানে প্রতারক তাহেরুল ইসলাম দ্বিতীয় বিয়ের চেষ্টা করছেন।

নাজমা খাতুন জানান, তাহেরুল তাকে দেশে ফিরে ধুমধামের সাথে বিয়ে করে ঘরে তোলার আশ্বাস দিয়েছিলেন। মওলানা দিয়ে কলেমা পড়িয়ে গত ১০ বছর সংসার করেছেন। কাউকে না জানিয়ে প্রতারক তাহেরুলকে বিয়ে ও উপার্জনের সর্বস্ব দেয়ায় বাবা-মার পরিবার তাকে আশ্রয় দিচ্ছেন না। স্বামীও তাকে ঘরে নিচ্ছেন না। এ অবস্থায় তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। সংসার ফিরে না পেলে তার আত্মহত্যা ছাড়া আর কোনো পথ থাকবে না। তাই তিনি প্রতিকার পেতে রোববার দুপুরে বগুড়ার শিবগঞ্জ থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।

তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মোকাম্মেল জানান, অভিযোগ পাবার পর তাহেরুলের বাড়িতে গিয়েছিলেন। তার বাবা-মা নেই। তিনি মামা নেহারুলের সংসারে মানুষ। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা সটকে পড়েন। বিষয়টি সুরাহা করতে তাহেরুলের মামা আগামী শুক্রবার পর্যন্ত সময় নিয়েছেন। ওইদিন দু’পক্ষকে নিয়ে থানায় বসা হবে। সমাধা না হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।