Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

মালয়েশিয়ায় জার্মান ভিখারির প্রতারণার ধরন

penang-island-malaysiaপেনাং মালয়েশিয়ার একটি দ্বীপ রাজ্য। যমুনা সেতুর চেয়ে কয়েকগুণ দীর্ঘ দুইটা সেতু স্থাপনের মধ্য দিয়ে মূল ভূমির সঙ্গে পেনাংকে সংযোগ করা হয়েছে। মালয়েশিয়ার দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে পেনাং অন্যতম। ইতিহাস সমৃদ্ধ রাজ্য পেনাং। প্রতি বছর প্রচুর পর্যটক ঘুরতে আসেন এখানে।

পেনাং-এর দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো পেনাং স্ট্রিট আর্ট। শহরের বিভিন্ন জায়গায় লুকিয়ে আছে এসব আর্ট। প্রত্যেকটি আর্টের একেকটা নম্বর আছে। পেনাং পর্যটক মানচিত্রে নম্বরসহ সব স্ট্রিট আর্টের ছবি দেওয়া আছে। মানচিত্র হাতে সব আর্ট খুঁজে বের করে সবগুলোর সঙ্গে যদি ছবি না ওঠাতে পারেন, তাহলে ধরে নিতে হবে আপনার পেনাং ভ্রমণ অসমাপ্ত রয়ে গেল।

chardike-ad

মানচিত্র হাতে নিজ শহরে হাঁটলেও লোকে আপনাকে পর্যটক ভাববে। পেনাং-এ মানচিত্র হাতে আমি একজন পর্যটক, সেটা বুঝতে একটুও কষ্ট হলো না জার্মান এক নারীর। সাদা চামড়ার একদম খাঁটি জার্মান। সঙ্গে তার বছর পাঁচেকের ছেলে। ছুটে এলেন আমার দিকে। জানতে চাইলেন, আমি পর্যটক কিনা? জানালেন, তিনিও পর্যটক।

কয়েক মিনিটের কথাবার্তার মধ্যে আমাদের ভাষার পরিবর্তন হলো, ইংরেজি থেকে জার্মান। আমি ভাঙা ভাঙা জার্মান বলতে পারি। তাতেই তিনি খুশি। কথায় আছে, বিপদে বন্ধু চেনা যায়। জার্মানিতে ভাঙা ভাঙা জার্মান দিয়ে আপনি চাকরি পাবেন না।

জার্মান ছেলের জার্মান মা, বাঙালি পর্যটকের কাছে বলতে লাগলেন বিপদের কথা। বললেন, এটিএম বুথ থেকে টাকা বের করতে গিয়ে এটিএম সাহেব টাকা না দিয়ে বরং উনার এটিএম কার্ডটিই খেয়ে ফেলেছে। ঘটনা ২০১৫ সালের। মহিলাটি বললেন, দয়া করে বাচ্চাটির দিকে চেয়ে একটু সাহায্য করুন। আমি আপনার টাকা ফিরিয়ে দেব।

অনেক সময় এরকম হয়। টাকা উঠাতে এটিএম মেশিনে কার্ড ঢুকালেন, কিন্তু এটিএম মেশিন টাকা না দিয়ে বরং কার্ডটিই গিলে ফেলে। পরে ব্যাংক কর্মকর্তারা এসে সেটি উদ্ধার করে ফিরিয়ে দেন।

যাহোক, আমি পর্যটক মানুষ। ঘুরতে গেছি। দান-খয়রাত করতে নয়। টাকা-পয়সা সঙ্গে যা আছে একদম দরকার অনুযায়ী। বাড়তি টাকা-পয়সা সঙ্গে নাই। বললাম, আজ নাহয় সাপ্তাহিক ছুটির দিন, কাল তো ব্যাংক খুলবে। একদিন অপেক্ষা করুন না, জার্মান ভাষায় ‘চুজ’ বলে আমি বিদায় নেই।

২০১৭ সালে দ্বিতীয়বার পেনাং ঘুরতে গিয়ে সেই একই মহিলাকে একদল পর্যটকের কাছে সাহায্য চাইতে দেখলাম। তার সত্যতার প্রমাণ আর আমার মনের ধান্দা খোলার জন্য আমাকে বেশি বেগ পোহাতে হয়নি।

গুগল সার্চে ‘জার্মান মহিলা সঙ্গে বাচ্চা পেনাং’ এইটুকু টাইপ করতেই আমার মনের পর্দা খুলে যায়। চোখের সামনে ফাঁস হয়ে য়ায় সব ধান্দাবাজি। জার্মান মহিলা বাচ্চা নিয়া মালয়েশিয়ায় ধান্দা করে, ব্যাপারটা শুনতে অদ্ভুতই লাগে। অদ্ভুত হলেও সত্য।

ধান্দাবাজ এই মহিলাকে নিয়ে ইন্টারনেটে পর্যটকদের অনেক আলোচনা-সমালোচনা। পেনাংয়ে অনেকেই দেখেছেন বলে লিখেছেন ধান্দাবাজ এই মহিলাকে। অনেক পর্যটক বড় করে দানও দিয়েছেন। সুন্দরীর ধান্দায় পড়েছেন অনেকেই।

বড় দেশের সুন্দরী মহিলা, সঙ্গে ফুটফুটে সুন্দর বাচ্চা। অবিশ্বাস করার তো কিছু নেই। ইন্টারনেটে একজন লিখেছেন, এই মহিলাটি কয়েক বছর ধরে পেনাং থাকে। সহজে মানুষের বিশ্বাস কুড়ানোর জন্যেই বাচ্চা নিয়ে ধান্দাবাজি করে।

লেখক: নাঈম হাবিব, সৌজন্যে: বিডিনিউজ