শাড়ি চুরির অভিযোগে ভারতে এক ব্যক্তিকে কথিত ঘটনার ৪২ বছর পর গ্রেফতার করা হয়েছে। ১৯৭৬ সালের ২৫শে ডিসেম্বর গুজরাটের সুরাট শহর থেকে ট্রেনে কলকাতা আসছিল এক বান্ডিল শাড়ি। মালগাড়িটি কলকাতার লাগোয়া শালিমার রেল ইয়ার্ডে আসার পরে দেখা যায় ৮৯টি শাড়ির খোঁজ নেই।
তদন্তে নেমে রেল পুলিশ জানতে পারে যে ছত্তিশগড়ের (তখন মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের অঙ্গ ছিল) রায়পুরে চুরি হয়েছে ওই শাড়ির বান্ডিলটি। রেল সুরক্ষা বাহিনী আরও জানতে পারে যে কয়েকজন রেল কর্মীই ওই চুরির সঙ্গে জড়িত। অভিযুক্তদের মধ্যেই ছিল রামাধর পান্ডের নাম। বাকি ৮জনকে গ্রেপ্তার করতে পারলেও রামাধর পান্ডের আর কোনও খোঁজ পাওয়া যায় নি। চাকরি ছেড়ে দিয়ে কোথায় যে উধাও হয়ে গিয়েছিল, তা জানা যায় নি অনেক বছর।
রায়পুরের রেল সুরক্ষা বাহিনীর অফিসার ইন-চার্জ দিবাকর মিশ্র বিবিসি বাংলাকে জানাচ্ছিলেন, “প্রায় ২২ বছর ধরে মামলা চলার পরে স্থায়ী জামিন অযোগ্য পরোয়ানা জারি করে আদালত। এর অর্থ, যে কোনও সময়েই গ্রেপ্তার করা যেতে পারে। আমরা অনেক খোঁজ করে জানতে পারি যে রামাধর পান্ডে বিহারে তার গ্রামের বাড়িতেই আছে। তাকে গ্রেপ্তার করতে দুই তিনবার অভিযান চালানো হয়েছে, তবে ধরা যায় নি।”
ছাপরা জেলায় নিজের গ্রামের এক মাতব্বর রামাধর। তাই পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করতে গেলেই গ্রামসুদ্ধু লোক বাধা দিত। তাই বারে বারে ফিরে আসতে হয়েছে রেল সুরক্ষা বাহিনীকে।
“তাই এবার আমরা আর ঝুঁকি নিই নি। বিহার পুলিশের সঙ্গে আগে থেকে কথা বলে প্ল্যান করা হয় যে দিনের বেলা যখন ধরা যাচ্ছে না, তখন রাত্রে অভিযান চালাব,” বলছিলেন মি. মিশ্র।
পরিকল্পনা অনুযায়ী গ্রাম থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার দূরে পুলিশের গাড়িগুলো রেখে দেওয়া হয়েছিল। বাকি পথটা পায়ে হেঁটে রওনা দেয় বাহিনী। পরে মি. পান্ডের বাড়িটা ঘিরে ফেলে পুলিশ। এবার আর পালাতে পারেন নি রামাধর পান্ডে।
মি. মিশ্র বলছিলেন, “চুরির অভিযোগটি যখন দায়ের হয়েছিল ওই রেল কর্মীর বিরুদ্ধে, তখন বয়স ছিল প্রায় ৩০। সেই যুবক এখন ৭০ পেরিয়ে গেছে। তবুও শেষ পর্যন্ত ধরা পড়লেনই।”