অবশেষে পরমাণু উৎক্ষেপণ স্থাপনা ধ্বংস করতে উত্তর কোরিয়া কাজ শুরু করেছে বলে মনে করা হচ্ছে। উত্তর কোরিয়ার সোহায়ি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ কেন্দ্রের পাঠানো ছবি থেকে দেখা গেছে, উত্তর-পূর্বের রকেট সাইট ধ্বংস করতে শুরু করেছে দেশটি। আজ মঙ্গলবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
মহাকাশ থেকে সোহায়ির পাঠানো ছবির আলোকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক পর্যবেক্ষণ গ্রুপ ‘৩৮ নর্থ’ জানিয়েছে, গত জুনে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, সে অনুসারে কাজ করতে শুরু করেছে পিয়ংইয়ং।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন একটি ইঞ্জিন পরীক্ষাকেন্দ্র ধ্বংসের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে ঠিক কোনটি, তা নির্দিষ্ট করে বলেননি ট্রাম্প।
সোহায়ি উৎক্ষেপণ কেন্দ্রের কাজ নিয়েও বিতর্ক ছিল যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে। পিয়ংইয়ং বরাবরই জানিয়ে আসছে যে সোহায়ি একটি উপগ্রহ উৎক্ষেপণ কেন্দ্র। তবে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা সন্দেহ করতেন যে এটি ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার জন্য ব্যবহার করছে উত্তর কোরিয়া।
গত ১২ জুন সিঙ্গাপুরে ট্রাম্প ও কিমের ঐতিহাসিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে দুই নেতা কোরিয়া উপদ্বীপকে পুরোপুরি পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ করতে চুক্তি সই করেন। তবে চুক্তিটি নিয়ে কিছুটা বিতর্ক তৈরি হয়। কারণ, ওই বৈঠকের পর কীভাবে ও কখন উত্তর কোরিয়া পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ কাজ শুরু করবে, সে বিষয়ে কিছু বলা হচ্ছিল না। তবে ওই সমালোচনার এবার জবাব দিল উত্তর কোরিয়া।
অবশ্য গত সপ্তাহে ট্রাম্প বলেন, উত্তর কোরিয়ার পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ করার জন্য ‘কোনো সময়সীমা নেই’ এবং এতে তাড়াহুড়ার কিছু নেই। তবে উত্তর কোরিয়া গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে—যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দারা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য ফাঁস করেন।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, উত্তর কোরিয়া তাদের ইয়ংবিয়ন পরমাণু চুল্লি আরও আধুনিক করেছে। তবে ওই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করা যায়নি। ২০০৭ সালে ইয়ংবিয়ন পরমাণু চুল্লি বন্ধ করে দিয়েছিল উত্তর কোরিয়া। কিন্তু ২০১৩ সালে তৃতীয় পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার পর চুল্লিটি আবার চালু করার কথা বলে দেশটি। এতে কোরীয় উপদ্বীপসহ আশপাশের এলাকায় তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এ চুল্লি উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচিতে প্লুটোনিয়াম জোগান দেয়।
গত নয় মাসে কোনো ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করেনি পিয়ংইয়ং। উল্লেখ্য, উত্তর কোরিয়া এ পর্যন্ত মোট ছয়টি পরমাণু অস্ত্রের পরীক্ষা চালায়। সর্বশেষটি ছিল গত সেপ্টেম্বরে।
সৌজন্যে- প্রথম আলো