Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

চাকরি হারানোর শঙ্কায় বিমানের দুই ডজন কর্মকর্তা

biman-dudokবিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিভিন্ন শাখায় চলছে সংস্কার অভিযান। একই সঙ্গে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বিমানের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা গত দুই মাস দুদকের নজরদারিতে। ইতোমধ্যে সদ্য বিদায়ী ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ (এমডি) ১০ জনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে গত মাসেই। ওএসডি করা হয়েছে দুই শীর্ষ কর্মকর্তাকে। দুদকের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, বিমানের বিভিন্ন খাতে দুর্নীতির মাধ্যমে শত শত কোটি টাকা লোপাটের একটি অভিযোগ অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে বিমানের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক (বিপণন) আশরাফুল আলম ও লন্ডন থেকে আসা কান্ট্রি ম্যানেজার শফিকুর রহমানের বিরুদ্ধে তদন্ত শেষ হয়েছে।

এছাড়া পরিচালক মোমিনুল ইসলাম ও মহাব্যবস্থাপক (জিএসই) তোফাজ্জল হোসেন আকন্দকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন দুদকের সহকারী পরিচালক সালাহ উদ্দিন। কমার্শিয়াল অফিসার মাহফুজুল করিম সিদ্দিকী ও তার স্ত্রীর সম্পদের হিসাব চেয়ে নোটিশ দেয়া হয়েছে। মাহফুজুল সম্পদের হিসাব জমা দিয়েছেন দুদকে। অন্যদের সম্পদের হিসাব চেয়ে নোটিশ দেয়া হবে বলে জানা গেছে। অনেকের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগেও অনুসন্ধান চলছে। এ তালিকা আরও দীর্ঘ হচ্ছে।

chardike-ad

ইতোমধ্যে আরও চারটি সংস্থাকে বিমানের বিভিন্ন শাখার দুর্নীতি অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। দলগুলো প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতির পাশাপাশি দুর্নীতির সঙ্গে যুক্তদের সম্পদেরও অনুসন্ধান করবে। বিমানের অন্তত ২০০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হয়েছে বলে দুদক সূত্র জানিয়েছে।

দুদকের প্রাতিষ্ঠানিক দলের যে প্রতিবেদন গত ৩ মার্চ বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলীর কাছে হস্তান্তর করা হয় তাতে বিমানের দুর্নীতির আট খাতকে চিহ্নিত করা হয়। খাতগুলো হলো- এয়ারক্রাফট কেনা ও ইজারা নেয়া, রক্ষণাবেক্ষণ-ওভারহোলিং, গ্রাউন্ড সার্ভিস, কার্গো আমদানি-রফতানি, ট্রানজিট যাত্রী ও লে-ওভার যাত্রী, অতিরিক্ত ব্যাগেজের চার্জ আত্মসাৎ, টিকিট বিক্রি ও ক্যাটারিং খাতের দুর্নীতি।

ক্ষমতার অপব্যবহার, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে ঘুষ নিয়ে ক্যাডেট পাইলট নিয়োগসহ জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অনুসন্ধান করছেন সহকারী পরিচালক সাইফুল ইসলাম। গত ২ মে ১০ জনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা চেয়ে পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক বরাবর চিঠি পাঠিয়েছেন। এসবির বিশেষ পুলিশ সুপার (ইমিগ্রেশন) এবং শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ওসি (ইমিগ্রেশন) বরাবর চিঠির অনুলিপি পাঠানো হয়।

বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে বিমানের সদ্য পদত্যাগী মোসাদ্দিক আহম্মেদ, জুনিয়র গ্রাউন্ড সার্ভিস অফিসার, বিমান শ্রমিক লীগের সভাপতি ও বিমানের সিবিএ নেতা মশিকুর রহমান, গ্রাউন্ড সার্ভিস সুপারভাইজার জিএম জাকির হোসেন, মিজানুর রহমান, কমার্শিয়াল সুপারভাইজার রফিকুল আলম ও গোলাম কায়সার আহমেদ, জুনিয়র কমার্শিয়াল অফিসার মারুফ মেহেদী হাসান এবং কমার্শিয়াল অফিসার জাওয়েদ তারিক খান ও মাহফুজুল করিম সিদ্দিকী। ওই দশজনসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে।

বিমানের নন-শিডিউলিং কার্গো হ্যান্ডেলিং চার্জের ৭২০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদকের উপ-পরিচালক নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বে একটি দল। বিগত ১০ বছরে এ অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে অভ্যন্তরীণ তদন্তে কার্গো শাখায় ৪১২ কোটি টাকা লোপাটের তথ্যের প্রমাণ মিলেছে বলে জানিয়েছেন বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন সচিব মহিবুল হক। তিনি বলেন, বিমানের সব অনিয়ম দূর করা হবে। বিমানকে জনগণের আস্থায় ফিরিয়ে আনা হবে।