ব্রুনাইয়ের বাংলাদেশ হাইকমিশনের লেবার উইংয়ের কর্মীদের বিরুদ্ধে প্রবাসী শ্রমিকদের নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। দূতাবাসের ভেতরই প্রবাসী বাংলাদেশি শ্রমিকদের বেধরক মারধরের একাধিক ভিডিও সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ব্রুনাইয়ে বর্তমানে ৩০ হাজার বাংলাদেশি শ্রমিক কর্মরত রয়েছে। সম্প্রতি দেশটির সরকার কিছু মেগা প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এতে আগামীতে বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি শ্রমিকের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়েছে। গত এপ্রিলেই দেশটি সফর করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জনশক্তি রপ্তানির বাজার হিসেবে ব্রুনাইয়ে বড় সম্ভাবনা দেখছে বাংলাদেশ। কিন্তু হাইকমিশনের লেবার উইং কর্মীদের বেপরোয়া মনোভাব এবং দূতাবাসের ভেতরই প্রবাসী শ্রমিক নির্যাতনের ঘটনা নেতিবাচক প্রভাব তৈরি করতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
দালাল ও প্রতারকচক্রের কারণে ব্রুনাইয়ে গিয়ে সর্বস্বান্ত হওয়া কয়েকজন বাংলাদেশি শ্রমিক সম্প্রতি দেশটির রাজধানী দারুসসালামসের বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রতিকার চাইতে গিয়ে দূতাবাসের কর্মীদের দুর্ব্যবহারের শিকার হন। এর প্রতিবাদ করায় হাইকমিশনের লেবার উইংয়ের কর্মীরা দূতাবাসের একটি কক্ষে তাদের আটকে বেধরক মারধর করে বলে অভিযোগ ওঠেছে। মারধরের এ ঘটনার কিছু ভিডিও ফুটেজ এরই মধ্যে ফেসবুকে ভাইরালও হয়েছে।
ভিডিও ফুটেজে স্পষ্ট প্রমাণ থাকার পরও ব্রুনাইয়ে বাংলাদেশ হাই কমিশনার অবসরপ্রাপ্ত এয়ার ভাইস মার্শাল মাহমুদ হোসেন শ্রমিক নির্যাতনের এ ঘটনা অস্বীকার করেছেন। জানতে চাইলে তিতি বলেন, দূতাবাসে এধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। মারধরকারীরা হাই কমিশনের কর্মী নয়।
ব্রুনাইয়ের দূতাবাসে নির্যাতনের সর্বশেষ যে ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে, তাতে দেখা যায়, প্রবাসী এক কর্মী দূতাবাস কর্মকর্তার টেবিলের পাশে দাঁড়িয়ে রয়েছেন, ওই কক্ষে আরও পাঁচ-ছয়জন রয়েছেন, যারা একজন একজন করে এসে কর্মকর্তার পাশে দাঁড়ানো প্রবাসী শ্রমিককে কিল-ঘুষি এমনকি লাথিও মারছেন।
প্রবাসী কর্মী ও জনশক্তি রপ্তানির এজেন্টদের মধ্যে দ্বন্দ্বের জের ধরে হাই কমিশনে শ্রমিক নির্যাতনের এ ঘটনাটি ঘটে গত ২১ আগস্ট সকালে। ভিডিওতে নির্যাতনের সময় টেবিলের ওপারে বসা দূতাবাসের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল রশিদকে চিহ্নিত করেছেন একাধিক ফেসবুক ব্যবহারকারী।