সৌদি আরবের ‘রিয়াদ ফার্নিচার’ কোম্পানিতে ১৪৬ জন বাংলাদেশি, ভারতীয় ও ফিলিপিনো মিলিয়ে অন্তত দুই শতাধিক শ্রমিক কাজ করছেন। একটা সময় খুব নামডাক থাকলেও এই রিয়াদ ফার্নিচার এখন প্রায় দেউলিয়া। যার ফলে শ্রমিকদের ৮ মাস ধরে বেতন বাকি এমন কি এই দীর্ঘ সময় ধরে তাদের খাওয়া খরচের টাকাও দেয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে বিষয়টি অবহিত করার জন্য গত ৫ জুলাই মাসুমের নেতৃত্বে কিশোরগঞ্জের সৌরভ উদ্দিন, চাঁপাই নবাবগঞ্জের সুলাইমান উদ্দিন, টাংগাইলের ইদ্রিস মিয়া, সরোয়ার হোসেন, গৌরনদীর সুমন শিকদার রিয়াদে বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম-কাউন্সেলর মেহেদী হাসানের শরণাপন্ন হয়। এ সময় তারা শ্রমিকদের উপর রিয়াদ ফার্নিচার সংক্রান্ত সমস্যাগুলো তুলে ধরেন।
শ্রমিকরা বলছে, রিয়াদ ফার্নিচার ফ্যাক্টরিতে নিয়মিত কাজ করার পরেও বেতন চাইতে গেলে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। মাস শেষে বেতন না পেয়ে বন্ধুবান্ধব বা পরিচিতদের কাছ থেকে ধারদেনা করে এক রকম মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে তারা।
এদের মধ্যে কুমিল্লার মাসুম জানান, গত আট মাস ধরে কোম্পানি বেতন দিচ্ছে না। খাবারের খরচও পাচ্ছেন না। চাইলে দেই-দিচ্ছি করে দিন পার করছে কর্মকর্তারা। তাদের অভিযোগ, অধিকাংশ শ্রমিকের আকামা (সৌদি পরিচয়পত্র) ও মেডিকেল ইন্স্যুরেন্স শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে পুলিশের ভয়ে ঘরের বাইরে বের হতে পারছে না।
মাসুম জানায়, দেশে যেতে চাইলেও আমাদেরকে দেশে পাঠাচ্ছে না কোম্পানি। তার অভিযোগ, সবকিছু হারিয়ে এখন মানবেতর জীবন যাপন করছে। অন্যদিকে রিয়াদ দূতাবাসের লেবার কাউন্সিলর মেহেদী হাসান সাংবাদিকদের বলেন, শ্রমিকদের সমস্যার কথা শুনেছি। শিগগিরই তাদের অভিযোগের দরখাস্ত নিয়ে আমরা কাজ শুরু করবো। অভিযোগকারী শ্রমিকদের বকেয়া বেতন, সার্ভিস বেনিফিট আদায়ের জন্য সৌদি শ্রম আদালতে মামলা এবং অন্যান্য বিষয়ে দূতাবাসের শ্রমউইং সার্বিক সহযোগিতা করবে। তিনি নিশ্চিয়তা দিয়ে বলেন, এজন্য শ্রমিক স্থানীয় কোনো আইনজীবী নিয়োগের দরকার হবে না, মামলা সরকারিভাবে পরিচালিত হবে।
সৌদি শ্রম আদালতে মামলা করার পর শ্রমিকদের উপর মালিক পক্ষ থেকে হুমকি-ধামকী বা অপ্রীতিকর কিছু ঘটলে করণীয় কী হবে? প্রশ্নের জবাবে মেহেদী হাসান বলেন, আসলে ‘সৌদি ক্রাইসিস ডিপার্টমেন্ট’কে অবহিত করেই মামলা করা হবে যেন এ ধরনের সমস্যা না হয়।