সিউল, ২২ এপ্রিল ২০১৪:
ভয় ও সিদ্ধান্তহীনতার কারণে দক্ষিণ কোরিয়ায় ডুবে যাওয়া ফেরি থেকে আরোহীদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে বিলম্ব হয়েছে। আর এ খবর প্রকাশিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই দেশটিতে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
সোমবার ডং-এ ইলবো পত্রিকার প্রথম পাতার শিরোনাম করা হয়েছে, ‘মূল্যবান সময় হেলায় নষ্ট করা হয়েছে।’ রোববার প্রকাশিত ফেরির ক্রু ও নৌ-চলাচল নিয়ন্ত্রকদের মধ্যে সর্বশেষ আলাপের ট্রান্সক্রিপ্টে দেখা গেছে, ডুবে যাওয়া ফেরি থেকে লোকদের দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরানো নিয়ে তারা বিতর্ক করছেন। আর এর জবাবে সোমবার ডং-এ ইলবো পত্রিকা এ খবর ছেপেছে।
ট্রান্সক্রিপ্টে দেখা গেছে, অজ্ঞাত পরিচয় এক ক্রু ফেরির আরোহীদের উদ্ধারের জন্য বারবার কোস্টগার্ডের সহায়তা চাচ্ছেন। অন্যদিকে নৌ-চলাচল নিয়ন্ত্রক ক্রুদের তাগিদ দিচ্ছেন, যাত্রীরা লাইফ জ্যাকেট ও অতিরিক্ত কাপড়-চোপড় পরেছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে। এক পর্যায়ে নিয়ন্ত্রক জানান, কেবল ক্যাপ্টেনই আরোহীদের ফেরি ত্যাগের আহবান জানাতে পারেন।
নিয়ন্ত্রক বলেন, ‘অপসারণের প্রয়োজন দেখা দিলে ক্যাপ্টেনই কেবল এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।’
শনিবার ফেরির ক্যাপ্টেন ও দুই ক্রুকে আটক করা হয়। ক্যাপ্টেনের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলা ও সমুদ্রে জাহাজ চলাচল আইন ভাঙার অভিযোগ আনা হয়েছে।
বহুল প্রচারিত দৈনিক চোসান ইলবোর খবরে বলা হয়েছে, ক্রু ও নৌ-নিয়ন্ত্রক উভয়ে অপরাধী। প্রথম প্রষ্টায় শিরোনাম করেছে, ‘উভয়ে দায়িত্বে অবহেলা করেছে।’
বুধবার দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলে ৪শ’ ৭৬ জন আরোহী নিয়ে ফেরিটি ডুবে যায়। বার্তা সংস্থা এএফপি’র খবরে বলা হয়, দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৬৪ জনের প্রাণহানির বিষয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। এছাড়া ২শ’ ৩৮ জন এখনও নিখোঁজ রয়েছেন।
ফেরির আরোহীদের জীবিত উদ্ধারের আশা বাস্তবিক অর্থে নেই। তবে নিখোঁজদের আত্মীয়স্বজনরা এখনই ফেরি টেনে তুলতে ক্রেন ব্যবহারের বিরোধিতা করছেন। তারা চান, আগে ডুবুরিরা সম্ভাব্য সব জায়গা তল্লাশি করুক, তারপর ক্রেন ব্যবহার করা হোক।
কোস্টগার্ডের এক মুখপাত্র সংবাদিকদের জানান, তৃতীয় ও চতুর্থ ডেকের কেবিনগুলোতে অনেক মানুষ ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাই এখন ওইসব জায়গায় তল্লাশি করা হবে।
তিনি বলেন, ‘ডাইনিং হলের দিকে যাওয়ার একটি রাস্তাও আমরা আবিষ্কার করেছি। আমরা এখন ওই দিকে যাওয়ার চেষ্টা করবো।’