ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, জাতীয় নাগরিকপঞ্জি বা এনআরসির আতঙ্কে রাজ্যে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, এই লজ্জা ঢাকার জায়গা নেই। এত ভয় পাওয়ার কী আছে? গ্রামে-গঞ্জে গিয়ে কে কী প্রচার করল, অপপ্রচার করল সেজন্য দয়া করে নিজেদের মূল্যবান জীবন নষ্ট করবেন না। আজ সোমবার পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কোলকাতায় নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে এক সভায় ভাষণ দেয়ার সময় তিনি এসব কথা বলেন।
তৃণমূল নেত্রী, এনআরসি বাংলায় কেন কোথাও হবে না। অসমে যেটা হয়েছে তা অসম চুক্তি অনুযায়ী হয়েছে। বললেই তো হয় না। কেউ রাজনৈতিকভাবে বলে দিতে পারে হ্যাঁ এনআরসি হবে। সে তো হিন্দু-মুসলিম বিভেদ করছে। হিন্দু-মুসলিম বিভাজন করে অসমে এনআরসিতে ১৩ লাখ হিন্দুর নাম বাদ। মুসলিমও বাদ, অসমীয়া বাদ, হিন্দিভাষী বাদ। আর বাংলায় মনে রাখবেন কোনোদিনই ওরা এনআরসি করতে পারবে না। এনআরসি করবে কীভাবে? এটা করতে হলে রাজ্য সরকারের অনুমতি চাই। আমরা তো কোনোদিন তা করতে দেব না। এটা মাথায় রাখবেন। চিন্তা করার কী আছে? কে বলেছে আপনাকে ১৯৭১ সালের কাগজ খুঁজে বের করুন? কে বলছে এসব? যারা বলছে সেই টিভি চ্যানেল কেউ দেখবেন না।
মমতা বলেন, ‘কোনও কোনও গণমাধ্যমে এনআরসি নিয়ে খুব অপপ্রচার করা হচ্ছে। বিজেপির লোকেরা কথা বলছে তাঁদের রাজনৈতিক প্রয়োজনে। সেটা নিয়ে আপনারা টকশো করে করে এত উত্তেজিত করছেন মানুষকে যে ৬ জন মারা গেল আজ বাংলায়। এই লজ্জা ঢাকার জায়গা নেই! আমি সেদিনও অনুরোধ করেছি মিডিয়ার কাছে ও অন্যান্য রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের কাছে যে প্ররোচনামূলক কথাবার্তা আমরা বলব না।’
তিনি আরও বলেন, ‘এনআরসি নিয়ে ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই। আমরা সবাই আছি না! নাকি আমরা নেই, মরে গেছি সব? যে ৬ জন মারা গেছে সেসব জায়গায় আমাদের দলের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ করা হবে। আমি পরিষ্কার আপনাদের বলি ভোটার লিস্টে নাম তুলতে অসুবিধা হলে আমাদের দলের কর্মীদের বলবেন সে তুলে দেবে। সে যদি না তোলে তাহলে ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিতে আমাকে অভিযোগ জানাবেন। আমি ঘাড় ধরে তোলাবো। সুতরাং, নিজের জীবন এভাবে নষ্ট করবেন না। ’