শুরুটা ছিল হতাশার। মাত্র ২ রানেই ১ উইকেট হারিয়েছিল বাংলাদেশ। এরপর ১৩১ রানের মধ্যেই ৪ উইকেট। তবে মুশফিকুর রহিমের দারুণ সেঞ্চুরি ও সাব্বির রহমানের ফিফটিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে লড়াকু পুঁজি গড়েছে বাংলাদেশ।
পঞ্চম উইকেট জুটিতে মুশফিক-সাব্বিরের ১১৯ রানের সুবাদে ৯ উইকেটে ২৭৩ রান করেছে মাশরাফির দল। জয়ের জন্য জিম্বাবুয়েকে করতে হবে ২৭৪ রান।
শনিবার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক এল্টন চিগুম্বুরা। আর ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই স্বাগতিক দর্শকদের হতাশ করেন লিটন দাস।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে শুরু থেকেই বড় ইনিংস খেলতে ব্যর্থ লিটন তিন নম্বর থেকে এদিন প্রথমবারের মতো ওপেনিংয়ে সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু এদিনও ব্যর্থতার পরিচয় দেন এই ডানহাতি, সাজঘরে ফেরেন উইকেটের প্রকৃতি বুঝে ওঠার আগেই। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে জিম্বাবুয়ের পেসার লুক জংউইয়ের বল ড্রাইভ করতে গিয়ে পয়েন্টে গ্রায়েম ক্রেমারকে ক্যাচ দিয়ে ‘ডাক’ মেরে বিদায় নেন লিটন।
শুরুতেই লিটনের উইকেট হারানোর পর দ্বিতীয় উইকেটে মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে জুটি বেঁধে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন তামিম ইকবাল। তবে বেশিদূর যেতে পারেনি এ জুটি। ইনিংসের নবম ওভারে মাহমুদউল্লাহকে (৯) ফিরিয়ে ২৮ রানের জুটি ভাঙেন তিনাশে পানিয়াঙ্গারা। মাহমুদউল্লাহকে বোল্ড করেন জিম্বাবুয়ের এই পেসার।
৩০ রানেই ২ উইকেট হারানোর পর মাহমুদউল্লাহর ‘ভায়রা ভাই’ মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে জুটি বেঁধে দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন তামিম। এই দুজনের ব্যাটে ভালোই এগোচ্ছিল বাংলাদেশ। সিকান্দার রাজার করা ইনিংসের ২৪তম ওভারে প্রথম বলে সিঙ্গেল নিয়ে দলের স্কোর ১০০ পার করেন মুশফিক। কিন্তু রাজার পরের বলেই ফিরে যান তামিম (৪০)। বল উড়িয়ে মারতে গিয়ে লং অনে লুক জংইয়ের হাতে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন এই বাঁহাতি। তামিম-মুশফিক তৃতীয় উইকেট জুটিতে আসে ৭০ রান।
তামিমের বিদায়ের পর মুশফিক ফিফটি তুলে নিলেও নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে ক্রিজে আসা সাকিব আল হাসান দ্রুতই বিদায় নেন। রাজার বল ক্রিজ থেকে বেরিয়ে এসে মারতে গিয়ে স্টাম্পিংয়ের শিকার হন সাকিব (১৬)। আর তার বিদায়ে ১২৩ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে আবার বিপদে পড়ে স্বাগতিকরা। তবে পঞ্চম উইকেটে সাব্বির রহমানকে নিয়ে দারুণভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন মুশফিক। দুজন মিলে দারুণ ব্যাটিংয়ে ৪১ ওভারে দলের স্কোর ২০০ রান পার করেন।
এরপর ইনিংসের ৪৫তম ওভারে জংউইয়ের পর পর দুই বলে একটি করে ছক্কা ও চার মেরে ফিফটি পূর্ণ করেন সাব্বির। তার পরের ওভারেই মুজারবানির বলে সিঙ্গেল নিয়ে ক্যারিয়ারের চতুর্থ ওয়ানডে সেঞ্চুরি তুলে নেন মুশফিক। ১০৪ বলে ৮টি চার ও এক ছক্কায় সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান।
এরপর দলীয় ২৪২ সাব্বির রানআউটে কাটা পড়লে পঞ্চম উইকেটে মুশফিকের সঙ্গে তার ১১৯ রানের বড় জুটিও ভেঙে যায়। ৫৮ বলে ৪টি চার ও দুটি ছক্কায় ৫৭ রান করেন সাব্বির। সাব্বিরের বিদায়ের পর নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে ক্রিজে এসে ‘ডাক’ মারেন নাসির হোসেন। মুজারাবানির বলে চামু চিবাবার হাতে ধরা পড়েন তিনি। মুজারাবানির পরের বলেই রান আউট হন সেঞ্চুরিয়ান মুশফিক। ১০৯ বলে ৯টি চার একটি ছক্কায় ১০৭ রানের চমৎকার এক ইনিংস খেলেন এই ডানহাতি।
ঘরের মাঠে টানা চারটি ওয়ানডে সিরিজ জয়ের রেকর্ড নিয়ে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খেলতে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ। আত্মবিশ্বাসের চূড়ায় আছে বাংলাদেশ। অন্যদিকে জিম্বাবুয়ে শিবিরে ভিন্নচিত্র। ঘরের মাঠে আইসিসির সহযোগী দেশ আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ হারের স্বাদ নিয়ে বাংলাদেশে এসেছে দলটি। স্বাভাবিকভাবেই নিজেদের ফিরে পাওয়ার লড়াইয়ে নেমেছে অতিথীরা।
বাংলাদেশ আজ সাত ব্যাটসম্যান নিয়ে খেলছে। সৌম্য সরকারের ইনজুরিতে স্কোয়াডে আসা ইমরুল কায়েসের একাদশে জায়গা হয়নি। আজ অভিষেক হচ্ছে না কামরুল ইসলাম রাব্বির। নেই স্পিনার জুবায়ের হোসেন লিখনও। একাদশে আছেন পেসার আল-আমিন হোসেন।