
জুলাই ঘোষণা এবং জুলাই সনদকে আইনি ভিত্তি দিয়ে নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে রাজধানীতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর বিক্ষোভ সমাবেশ
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, আমরা ইলেকশন চাই, সিলেকশন চাই না। জামায়াত নির্বাচনে যেতে চায় কিন্তু তার আগে রাষ্ট্রের সংস্কার, সকল গণহত্যার বিচার নিশ্চিত এবং লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে হবে।
বুধবার (১৩ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর বিজয়নগরে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ‘জুলাই ঘোষণা’ ও ‘জুলাই সনদ’কে আইনি ভিত্তি দিয়ে নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে এ বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ জামায়াত।
সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, জামায়াত নির্বাচন চায়। যে তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে- তাতে কোনো আপত্তি নেই। ডিসেম্বরে হলেও আমাদের কোনো আপত্তি ছিলো না। তবে তার জন্য একটি সুন্দর পরিবেশ হতে হবে।
তিনি আরো বলেন, স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও জনগণ অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দেখেনি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নিয়েও সংস্কারের প্রতিশ্রুতি ভুলে গেছে। তিনি অভিযোগ করেন, সংস্কারের নামে সরকার রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে মাসের পর মাস আলোচনা করে শেষ পর্যন্ত জাতির সঙ্গে তামাশা করেছে।
আবদুল্লাহ তাহের বলেন, মাসের পর মাস সংস্কারের নামে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে ডেকে নিয়ে পরিশেষে সংস্কারের আইনি ভিত্তি দিতে পারবে না বলে সরকার জাতির সাথে তামাশা করেছে। জুলাই ঘোষণাপত্রের সাংবিধানিক উপায় আলী রীয়াজ দেখাতে না পারলেও আমরা দেখাতে পারবো মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমাদের সেই দায়িত্ব দেন, আমাদের সাথে বসেন। মানুষকে বোকা বানানোর চেষ্টা না করতে তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
দেশের ৭১ শতাংশ জনগণ পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন চাইলেও, একটি দল জনগণের মতের বিপক্ষে উল্লেখ করে সাবেক এমপি ডা: তাহের বলেন, অধিকাংশ জনগণের মতামত মেনে নেয়ার নামই ডেমোক্রেসি। সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) কর্তৃক পরিচালিত জরিপে উঠে এসেছে দেশের ৭১ শতাংশ মানুষ পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন চায়। যেই রাজনৈতিক দলের নেতারা পিআর বুঝে দাবি করে তিনি ওই নেতাদের দেশের রিকশা চালক, ভ্যান চালক, চা-পান বিক্রেতার কাছ থেকে পিআর বুঝে নিতে অনুরোধ করেন।
তিনি বলেন, দেশের সাধারণ জনগণ পিআর পদ্ধতি বুঝলেও একটি মাত্র দল দাবি করে তারা পিআর বুঝে না। আসলে তারাও পিআর বুঝে! কিন্তু মেনে নিতে চায় না। কারণ পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে ভোট চুরি করতে পারবে না, ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা করে জনগণকে শোষণ করতে পারবে না। এজন্যই তারা পিআর পদ্ধতির বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে।
তিনি আরো বলেন, যারা পার্লামেন্টে গিয়ে সংস্কার করবে বলতেছে, এখন সংস্কারের আপত্তি কেন প্রশ্ন রেখে বলেন, ক্ষমতায় গিয়ে সংস্কার করবে বলা দল কিভাবে নিশ্চিত হয়েছে তারাই এবার ক্ষমতায় বসবে? তাদের এই কথায় জনমনে সংশয় তৈরি হয়েছে। এতে বুঝা যায়, তারা হাসিনা মার্কা যেনতেন একটি তামাশার নির্বাচন করতে চায়।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের সেক্রেটারি শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল। সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান, আবদুল হালিম, ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়াতের আমির সেলিম উদ্দিন প্রমুখ।
সমাবেশ শেষে বিজয়নগর থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি কাকরাইল ও মৎস্য ভবন হয়ে শাহবাগে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় নেতা-কর্মীদের হাতে প্রয়োজনীয় মৌলিক সংস্কার, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা, পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচনসহ বিভিন্ন দাবিসংবলিত প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।








































