
জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী হতে হলে জুলাই জাতীয় সনদ মেনে চলা এবং বাস্তবায়নের শপথ বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। দলটির প্রস্তাব অনুযায়ী, প্রার্থী যদি হলফনামা দিতে ব্যর্থ হয়, তবে তার প্রার্থিতা বাতিল হবে। নির্বাচনী প্রচারে জুলাই সনদের বিরোধিতা করলে শুধু প্রার্থিতা বাতিল নয়, রাষ্ট্রদ্রোহ মামলাও করা হবে।
রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) এ বিষয়ে কথা বলেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড. হামিদুর রহমান আযাদ। তিনি জানান, “এটা আমাদের প্রস্তাব মাত্র। এ নিয়ে আলোচনা হতে পারে।”
গত ৬ সেপ্টেম্বর প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বাধীন ঐকমত্য কমিশনে লিখিতভাবে এই প্রস্তাব জমা দেয় জামায়াত। ‘প্রভেশিয়াল সাংবিধানিক আদেশ-২০২৫’-এর মাধ্যমে জুলাই সনদের বাস্তবায়নের কথা উল্লেখ করেছে দলটি।
জামায়াত চাইছে আগামী ফেব্রুয়ারির নির্বাচনেই জুলাই সনদে থাকা ৮৪টি সংস্কার বাস্তবায়ন করতে। তবে বিএনপির অবস্থান ভিন্ন। তারা বলছে, সংসদ ছাড়া সংবিধান সংশোধন সম্ভব নয়।
জামায়াতের মতে, সংবিধানের ৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জুলাই অভ্যুত্থান জনগণের অভিপ্রায়ের পরম প্রকাশ। তাই জুলাই সনদও সংবিধানের সমমর্যাদার হবে। সবার জন্য বাধ্যতামূলক করতে নির্বাচনী প্রার্থীদের শপথ নেওয়ার বিধান যোগ করার প্রস্তাব দিয়েছে দলটি।
প্রশ্ন উঠেছে- কাউকে সনদ মানতে বাধ্য করা কতটা গণতান্ত্রিক? উত্তরে হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, “জুলাই সনদ প্রণীত হয়েছে গণতন্ত্র রক্ষার জন্য। এর বিপরীতে যা আছে, তা ফ্যাসিবাদ।”
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অবস্থানের প্রসঙ্গ টেনে জানতে চাওয়া হয়- কাউকে কি মুক্তিযুদ্ধ মেনে নিতে বাধ্য করা যায়? জবাবে আযাদ বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের অর্জনই বাংলাদেশ ও সংবিধান। জামায়াত তা মেনেই রাজনীতি করছে। বাংলাদেশে রাজনীতি করতে চাইলে জুলাই সনদও মানতেই হবে।”
জামায়াতের লিখিত প্রস্তাবে বলা হয়েছে—
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ উৎখাতের মাধ্যমে জনগণের হাতে সাংবিধান রচনার ক্ষমতা ন্যস্ত হয়েছে।
এই ক্ষমতার ভিত্তিতেই অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছে এবং সাংবিধানিক আদেশ জারির বৈধতা পেয়েছে।
সাংবিধানিক আদেশ বিদ্যমান সব আইনের ওপরে প্রাধান্য পাবে। সংবিধানসহ কোনো আইন অসামঞ্জস্যপূর্ণ হলে তা বাতিল হবে।
নির্বাহী, আইন ও বিচার বিভাগ সাংবিধানিক আদেশের অধীন থাকবে। আদেশ বদল বা বিকৃত করার চেষ্টা রাষ্ট্রদ্রোহ হিসেবে গণ্য হবে।
রাষ্ট্রপতি এই আদেশের অধীন থেকে নির্বাচনের আয়োজন করবেন। প্রার্থী ও রাজনৈতিক দলকে বাধ্যতামূলকভাবে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের শপথনামা জমা দিতে হবে।
নতুন সংবিধান সংসদে তিন-চতুর্থাংশ ভোটে ও গণভোটে অনুমোদন পাওয়ার আগ পর্যন্ত সাংবিধানিক আদেশ বহাল থাকবে।






































