আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও তার রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমামের বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এইচটি ইমামকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, দায়িত্বশীল পদে থেকে সরকার ও দলের ক্ষতি হয় এমন বক্তব্য দেয়া ঠিক হয়নি। এদিকে, তার বক্তব্যে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছে আওয়ামী লীগ। এইচ টি ইমামের বক্তব্য বিএনপি ও বিরোধীদের হাতে নতুন অস্ত্র তুলে দিয়েছে বলেও মনে করেন আওয়ামী লীগের নেতারা।
শুক্রবার রাতে গণভবনে দলের সংসদীয় বোর্ডের সভায় প্রধানমন্ত্রী এইচ টি ইমামের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বৈঠকে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সৈয়দ সাজেদা চৌধুরী, উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য তোফায়েল আহমেদ, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, বোর্ডের সদস্য ড. আলাউদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক সূত্র জানায়, গত বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) ছাত্রলীগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এইচ টি ইমামের বক্তব্য নিয়ে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তসহ কয়েকজন সিনিয়র নেতা প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এ সময় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তির এমন ধরনের বক্তব্য কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
অন্যান্য নেতারা বলেন, একের পর এক বিতর্কিত বক্তব্য দিয়ে যারা সরকার ও দলকে বিব্রত করছে তাদের ব্যাপারে সর্তক থাকতে হবে। অতিকথন প্রিয় নেতা ও দায়িত্বশীলদের কথায় নাগাম টানতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন সিনিয়র নেতারা।
প্রসঙ্গত, বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) ছাত্রলীগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এইচ টি ইমাম ৫ জানুয়ারির নির্বাচন সম্পর্কে বলেন, নির্বাচনের সময় আমি তো প্রত্যেকটি উপজেলায় কথা বলেছি, সব জায়গায় আমাদের যারা রিক্রুটেড, তাদের সঙ্গে কথা বলে, তাদেরকে দিয়ে মোবাইল কোর্ট করিয়ে আমরা নির্বাচন করেছি। তারা আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে, বুক পেতে দিয়েছে। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, তোমাদের লিখিত পরীক্ষায় ভালো করতে হবে। তার পরে আমরা দেখব।
এইচটি ইমামের এমন বক্তব্যের পরে দলের ভেতরে-বাইরে নানা গুঞ্জন শুরু হয়েছে। দলের দায়িত্বশীল নেতারা বলছেন, দায়িত্বশীল পদে থেকে এমন বক্তব্য ৫ জানুয়ারি নির্বাচন নিয়ে নতুন করে বির্তকের সৃষ্টি হয়েছে। সাবেক মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর মতোই তিনি দল ও সরকারকে বেকায়দায় ফেলেছেন বলে তারা মনে করেন।
এদিকে শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় এইচ টি ইমামের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত তাকে সতর্ক হয়ে কথা বলার পরামর্শ দিয়েছেন। সুরঞ্জিত বলেন, “আমাদের একজন উপদেষ্টা পাবলিক সার্ভিস কমিশন সম্পর্কে কথা বলেছেন। কিন্তু পাবলিক সার্ভিস কমিশন একটি স্বাধীন ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। এতে সবারই পরীক্ষা দেয়ার সমান সুযোগ আছে। এ নিয়ে একটু সতর্ক হয়ে কথা বলতে হবে।”
একটি সূত্র জানিয়েছে, এই বক্তব্যের জন্য এইচ টি ইমাম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আস্থা হারাতে পারেন। এমনকি এজন্য তার পদও যেতে পারে। নতুনবার্তা।