লেবাননের জনশক্তি রফতানিকারক সব দেশের পুরুষ কর্মীর (ক্যাটাগরি-৩) ভিসা বন্ধ করে দিয়েছে। শুধু নারীকর্মীর ভিসা আগের মতোই চালু থাকবে। লেবাননে বাংলাদেশ দূতাবাস এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
চরম ডলার সংকট নিরসনে বৈদেশিক মুদ্রা স্থানান্তরের পরিমাণ কমাতে এবং দেশের উচ্চ বেকারত্ব ঘোচাতে লেবানিজদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্যই দেশটির সরকার ভিসা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়। লেবাননের শ্রম মন্ত্রণালয় অতি সম্প্রতি বিবৃতি জারির মাধ্যমে এই সিদ্ধান্তের কথা জানায়।
লেবাননের হাতেগোনা কয়েকটি সংবাদমাধ্যম এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন মিডিয়ায় আসা ভিসা-সংক্রান্ত খবরে ক্যাটাগরির উল্লেখ না থাকায় এ নিয়ে ধোঁয়াশা দেখা দেয়। দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ে বাংলাদেশি কর্মীরা। সকলে ধরে নেয়, সবার জন্যই দেয়া হয়েছে ভিসা নিষেধাজ্ঞা।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বৈরুতে বাংলাদেশ দূতাবাসের কাউন্সিলর (শ্রম) আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘ভিসা বন্ধের সরকারি সিদ্ধান্তের দাফতরিক কোনো আদেশপত্র দূতাবাসের কাছে এখনও আসেনি। মিডিয়ায় এ সংক্রান্ত খবর আসার পর দেশটির শ্রম মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে জানতে পারি যে, শুধুমাত্র পুরুষকর্মীর জন্য ভিসা বন্ধ করা হয়েছে। নারী কর্মীর ভিসা চালু রয়েছে।’
ভিসা নিষেধাজ্ঞা বাংলাদেশের জন্য শুধু নয়, লেবাননে পাঠানো বিশ্বের সব দেশের জনশক্তির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য বলে জানান শ্রম কাউন্সিলর।
দেশটির শ্রম মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে ভিসা বন্ধের ব্যাখ্যা দেয়া হয় এবং সে সঙ্গে জানানো হয়, জরুরি ঘোষণা ছাড়া বিদেশিকর্মী নিয়োগের জন্য আবেদন অনুমোদন করবে না শ্রম মন্ত্রণালয়।
বিবৃতিতে শ্রম মন্ত্রণালয় দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে দেশীয় সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে যতটা সম্ভব লেবাননের শ্রমশক্তির ওপর নির্ভর করার আহ্বান জানিয়েছে।
বর্তমানে লেবাননে বাংলাদেশ, সুদান, সিরিয়া, মিশর, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, তুরস্কসহ প্রায় ১০টি দেশের কর্মী নিয়োজিত আছে। এর মধ্যে শীর্ষে আছে বাংলাদেশ।
সঠিক কোনো পরিসংখ্যান না থাকলেও ধারণা করা হয়, প্রায় দেড় লাখ বাংলাদেশি কর্মী রয়েছে ভূমধ্যসাগর পাড়ের পশ্চিম এশিয়ার এই দেশটিতে।
এর আগে ১৯৯৯ সালে একবার ভিসা বন্ধ করা হয়েছিল লেবাননে। সেবারও শুধু পুরুষকর্মীর জন্য ভিসা বন্ধ করা হয়। আট বছর বন্ধ থাকার পর ২০০৭ সালে আবার চালু হয় এবং এ পর্যন্ত অব্যাহত ছিল।