Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

নিজে কষ্ট করে পরিবারের মুখে তো হাসি ফুটিয়েছি

qatarমধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ দেশ কাতার। পারস্য উপসাগরের ছোট একটি দেশ, আছে প্রচণ্ড গরম, মরুভূমিও। আয়তন ১০ হাজার বর্গ কিলোমিটারের তুলনায় সামান্য বেশি, বিশ্বে অবস্থান ৯০তম। বাংলাদেশের তুলনায় প্রায় ১৩ গুণ ছোট দেশটির মাথাপিছু আয়ে বর্তমানে পৃথিবীর সবচাইতে ধনী দেশও কাতার।

দেশটিতে কর্মরত আছেন পাঁচ লাখের মতো বাংলাদেশি। কাতার বর্তমানে বাংলাদেশের দ্বিতীয় শীর্ষ শ্রমবাজার। নির্মাণশ্রমিক, গৃহকর্মী, রেস্তোরাঁ, মৎস্যজীবী, ইমামতি, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ বিভিন্ন খাতে সুনামের সঙ্গে দেশটিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছেন বাংলাদেশিরা।

chardike-ad

কাতারের ব্যবসা-বাণিজ্যে অন্যতম খাত হচ্ছে কনস্ট্রাকশন ওয়ার্ক। কনস্ট্রাকশন, মেশন, কারপেন্টার, স্টিল ফিক্সার, টাইলসসহ বিভিন্ন নির্মাণকাজে শ্রমিকের পেশায় কাজ করে অনেক বাংলাদেশি ভাগ্য পরির্তন করেছেন।

qatarপরিবারের অভাব দূর করার স্বপ্ন নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতারে শ্রমিকের চাকরি নিয়ে ১৯৮৩ সালে মাত্র ১৫ বছর বয়সে প্রবাসজীবন শুরু করেন মীর আবুল হোসেন। কাতারের স্বনামধন্য কোম্পানি আলী বিন আলী, আল হেকমী কোম্পানির ড্রাইভিং ভিসায় কাতার আসেন তিনি। কিন্তু বয়সে ছোট দেখে কাতারি মালিক তাকে চাকরি দেন ফলের দোকানে। একটানা ১২ বছর মালিকের ফলের দোকানে চাকরি করেন। পাশাপাশি রাজধানী দোহা আল মুনছুরায় সানজিদা সুপার মার্কেট নামে তার একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন।

মীর আবুল হোসেনের বয়স এখন ৫২। বাবার নাম মীর শামসুউদ্দিন। ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার যন্ত্রাইল ইউনিয়নের পূর্বপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। আবুল হোসেনের এক ছেলে ও তিন মেয়ে। সবাই বাংলাদেশে থাকেন।

qatarমীর আবুল হোসেন বলেন, বাংলাদেশি উদ্যোক্তারা এগিয়ে আসলে কাতারে আরও বেশি বাংলাদেশির কর্মসংস্থান হবে। কাতারে বাংলাদেশি উদ্যোক্তা যত বেশি সৃষ্টি হবে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার তত ঘটবে। দেশও এগিয়ে যাবে।

নিজ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান সম্পর্কে তিনি বলেন, কাতারের প্রবাসী বাংলাদেশি শ্রমজীবীদের সহজ ও সুলভ মূল্যে নানামুখি মানবিক সেবা ও ভোগ্যপণ্য সামগ্রী দেয়ার প্রত্যয় নিয়ে কাজ করছি। ইতোমধ্যে সানজিদা সুপার মার্কেট প্রবাসী বাংলাদেশিদের আস্থার স্থল হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে। আমরাও তাদের সেভাবে সেবা দিয়ে যাচ্ছি।

qatarদীর্ঘ প্রবাসজীবনে নিজের চাওয়া-পাওয়া প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, যদি প্রবাসজীবনের ৩৭ বছরের হিসাব মিলিয়ে দেখি, দেখা যাবে হয়তো কিছু পেয়েছি বা কিছু পায়নি- এটা বড় বিষয় নয়। তবে সবচাইতে বড় ব্যাপার হলো, একটা জিনিস পেয়েছি। সেটা হলো, আমার পরিবারের সবাইকে খুশি রাখতে পারা। মা-বাবা, ভাই-বোন, ছেলে-মেয়ে, স্ত্রী- তাদের সবাইকে সুখে রাখতে পেরেছি।

প্রবাসজীবনে নিজে কষ্ট করে পরিবারের মুখে হাসি ফুটিয়েছি- এর চেয়ে বড় আনন্দের আর কী হতে পারে। কাতারের বাংলাদেশ কমিউনিটিতে তেমন পরিচিত মুখ নন ব্যবসায়ী আবুল হোসেন। তবে সুযোগ পেলে স্থানীয় কমিউনিটি, রাজনীতি, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হতে চান তিনি।

সৌজন্যে- জাগো নিউজ