Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

সিঙ্গাপুরে এক মাসে ৫০০ বাংলাদেশি করোনায় আক্রান্ত

singapore-banকরোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধ করার ক্ষেত্রে সিঙ্গাপুরকে একটি সফল উদাহরণ হিসেবেই এতদিন মনে করা হচ্ছিল। করোনা শব্দটি যখন অনেকের কাছেই পরিচিত হয়ে ওঠেনি, তখনই সিঙ্গাপুর ভ্রমণের ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়। লকডাউনে না গিয়ে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন নির্দেশনাও জারি করে দেশটি। প্রাথমিকভাবে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করেছিল তারা।

ইদানিং সিঙ্গাপুরে করোনাভাইরাস সংক্রমণ বেশ দ্রুত গতিতে বিস্তার লাভ করছে। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী- শুক্রবার নতুন করে ১৯৮ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৮৫ জনই বাংলাদেশি। বৃহস্পতিবার নতুন করে ১৪২ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়। এর মধ্যে ৫৫ জনই বাংলাদেশি।

chardike-ad

গত বুধবার ১১৬ জন আক্রান্ত ছিল। যার মধ্যে ৪৭ জন বাংলাদেশি পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন। গত ২০ মার্চ থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে এখন পর্যন্ত সিঙ্গাপুরে ২ হাজার ১০৮ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে, মারা গেছেন সাতজন। বাংলাদেশি আক্রান্ত হয়েছে ৫০০ জন। এদের মধ্যে বেশিরভাগ বাংলাদেশিরা একসঙ্গে একই আবাসিক ভবনে থাকতেন।

সিঙ্গাপুরে অভিবাসী শ্রমিকের সংখ্যা ২০ লাখের বেশি। বেশিরভাগই এসেছেন দক্ষিণ এশিয়া থেকে এবং কাজ করছেন মূলত নির্মাণ শিল্পে। আক্রান্তদের মধ্যে বেশিরভাগই হচ্ছে বিভিন্ন দেশ থেকে আসা। করোনা সংক্রমণের ঝুঁকির কারণে ইতোমধ্যে সিঙ্গাপুরে অন্তত ৫০ হাজার প্রবাসীকর্মীকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। এদের মধ্যে বাংলাদেশি শ্রমিকদের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি বলে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রকাশ করে তথ্যে দেখা যাচ্ছে।

সিঙ্গাপুরে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের একটি বড় অংশ বাংলাদেশি হওয়ার কারণে এখন এই প্রশ্ন উঠছে যে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ছোট এই দেশটিতে এত বেশি সংখ্যক বাংলাদেশি কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন কেন।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, সম্প্রতি একটি সেনাঘাঁটিতে কিছু কর্মীকে সরিয়ে নেয়া হয়। তবে তাদের একই বাসে খুব কাছাকাছি বসিয়ে নেয়া হয়েছিল এবং নামার সময়ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখেনি কেউই। সিঙ্গাপুরের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ফেসবুক পেজেই একটি ভিডিওতে একদল কর্মীকে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।

দেশটির দু’টি সেনাঘাঁটিতে অন্তত ১ হাজার ৩০০ কর্মীকে পৃথকভাবে রাখা হয়েছে। আগামী ৪ মে পর্যন্ত তাদের সেখানেই বিশেষ নজরদারিতে থাকতে হবে। বাকি কর্মীদেরও বিভিন্ন খালি স্থাপনা, প্রদর্শনী কেন্দ্রসহ নানা জায়গায় সরিয়ে নেয়া হয়েছে। সেখানে তাদের আর ডরমিটরির মতো গাদাগাদি করে থাকতে হচ্ছে না।

গত সপ্তাহে করোনার বিস্তার মোকাবিলায় চার সপ্তাহের জন্য অতিরিক্ত কড়াকড়ি আরোপ করেছে সিঙ্গাপুর সরকার। ৪ মে পর্যন্ত বন্ধ করে দেয়া হয়েছে সব স্কুল, অনাবশ্যক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ডরমেটরিগুলোতে খুবই কষ্টকর পরিবেশে দিন যাপন করেন প্রবাসীরা। গাদাগাদি করে ছোট ঘরে থাকেন, একই টয়লেট ব্যবহার করেন অনেকে। কোনো কোনো আবাসিক ভবনে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে একটা ঘরে গাদগাদি করে ঘুমান ১২ জন করে শ্রমিক।

বেশ কিছু ডরমেটরিতে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় সেখানে শ্রমিকদের ভেতরে থাকতে বলা হয়েছে। সিঙ্গাপুরে শুরু হয়েছে এক মাসের লকডাউন। কর্মকর্তারা স্কুল ও অফিস বন্ধ ঘোষণা করেছেন করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে। সরকার এসব ব্যবস্থা আরও আগে নিলে করোনাভাইরাস এভাবে ছড়িয়ে পড়তো না।