Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

চলমান ফিফা বিশ্ব কাপে বিভিন্ন গ্রুপে নজর থাকবে যে সকল খেলোয়াড়দের ওপর

সিউল, ১৩ জুন ২০১৪:

গ্রুপ এ

chardike-ad

নেইমার-ব্রাজিল
জন্ম: ৫/২/১৯৯২-৪৮ ম্যাচ
ব্রাজিল দলের স্বীকৃত সেরা খেলোয়াড় ১০০ মিলিয়ন ডলার মূল্যের নেইমার। নিজ মাঠে প্রথম বারের মত বিশ্ব কাপ শিরোপা জয়ের আশা-ভরসার মুর্ত প্রতীক ২২ বছরের এ তারকা খেলোয়াড়।গত বছর ব্রাজিলের কনফেডারেশনস কাপ শিরোপ জয়ের মুল তারকা ছিলেন তরুণ এ স্ট্রাইকার। ব্যক্তিগতভাবে চার গোল করে গোল্ডেন বল জয়সহ টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন তিনি।ইাতোপর্বে বিশ্ব কাপ গ্রেট পেলের পর ব্রাজিল দলের ১০ নম্বর জার্সি জড়ানো সর্বশেষ খেলোয়াড় নেইমার। ১০০ মিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে ব্রাজিলিয়ান ক্লাব সান্তোস থেকে গত বছর বার্সেলোনায় যোগ দেয়ার পর ইউরোপে প্রথম একটি বছর নেইমারের কেটেছে ভাল-মন্দের সংমিশ্রনে।মৌসুমের শেষ দিকে পায়ের ইনজুরির কারেনে কয়েক সপ্তাহ মাঠের বাইরে কাটাতে হয়েছে তাকে। কিন্তু বিশ্ব কাপের আগে ব্রাজিলে তাকে উজ্জ্বল দেখা গেছে।

জাভি হার্নান্দেজ-মেক্সিকো
জন্ম:১/৬/১৯৮৮-৬১ ম্যাচ
ইংলিশ জায়ান্ট ম্যানেচেস্টার ইউনাইটেডে চার বছর কাটানোর পর এবং ২০১০ বিশ্ব কাপে নজর কাড়া পারফরমেন্সের পর মেক্সিকোর সেরা খেলোয়াড় হিসেবে বিবেচিত ২৬ বছর বয়সী হার্নান্দেজ নিজ দেশে ‘চিচারিটো’ হিসেবে খ্যাত।দক্ষিন আফ্রিকা বিশ্ব কাপেই তরুণ খেলোয়াড় হিসেবে নিজকে প্রমান করেন তিনি। সে টুর্নামেন্টে ফান্স ও আর্জেন্টিনা উভয় দলের বিপক্ষেই গোল করেছেন তিনি।ফুটবল নিয়ে গর্ব করার মত একটি পরিবারেই জন্ম হার্নান্দেজের। তার বাবা এবং দাদা উভয়েই মেক্সিকোর হয়ে বিশ্ব কাপ খেলেছেন।ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগ ফাইনালের পথে এবং চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ফাইনালে উঠতে ক্লাবের হয়ে গুরুত্বপুর্ন গোল করে নিজের প্রথম মৌসুমেই ম্যানচেস্টারে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন হার্নান্দেজ।

লুকা মড্রিচ-ক্রোয়েশিয়া
জন্ম: ৯/৯/১৯৮৫-৭৫ ম্যাচ
রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের শিরোপা জয় করে নিজের ক্যারিয়ারের সেরা ফর্ম নিয়েই বিশ্ব কাপ খেলরেত এসেছেন এ আক্রমনাত্মক মিডফিল্ডার। ক্রোয়েশিয়ার নক আউট পর্বে ওঠা-না ওঠা অনেকাংশেই নির্ভর করবে ২৮ বছর বয়সী এ তারকা খেলোয়াড়ের ওপড়। অবশ্য দলীয় কোচ নিকো কোভাচ মাঝে মধ্যে তাকে রক্ষনাত্মক ভুমিকায় ব্যবহার কের থাকেন।২০০৮ সালে ইংলিশ ক্লাব টোটেনহাম হটসপারে যোগ দেয়ার আগে নিজ তেশের ডায়নামো জাগ্রেবে ক্যারিয়ার শুরু করেন ২০০৬ বিশ্ব কাপে অংশ নেয়া মড্রিচ। ইাংলিশ ক্লাবে যোগ দেয়ার মাধ্যমে ইউরোপিয়ান ফুটবলেও যাত্র শুরু করেন তিনি।বলকান যুদ্ধের কারনে মড্রিচের শিশুকাল নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। ক্রোয়েশিয়ান যুদ্ধের কাÍনে তার পরিবার শরনার্থীতে পরিনত হয়।

স্যামুয়েল ইতো- ক্যামেরুন
জন্ম: ১০/৩/১৯৮১-১১৫ ম্যাচ
ক্যামেরুন ফুটবলের ‘দাদু’ ৩৩ বছর বয়সী ইতো ব্রাজিলে তার চতুর্থ বিশ্ব কাপ খেলবেন। নিজের ১৬তম জন্ম দিনের এক দিন আগে কোস্টারিকার বিপক্ষে ৫-০ গোলে পরাজিত ম্যাচে ক্যামেরুনের হয়ে আন্তর্জাতিক অভিষেক ঘটে। মাত্র ১৭ বয়সে ১৯৯৮ বিশ্ব কাপে ফ্রান্সের বিপক্ষে গোল করেন তিনি।চারবার আফ্রিকার বর্ষ সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হওয়া এবং ইউরোপিয়ান ফুটবল ক্যারিয়ারে বার্সেলোনা(২বার) ও ইন্টার মিলানের(১বার) হয়ে তিনবার চ্যাম্পিয়ন্স লীগ শিরোপা জয় করায় ক্যামেরুনের সবচেয়ে সফল খেলোয়াড় তিনি।২০১৩ সালে ইংলিশ দল চেলসিতে যোগ দিয়ে পুনরায় হোসে মরিনহোর সঙ্গে জুটি বাধা ৩৩ বছর বয়সী এ খেলোয়াড় ক্যামেরুন ফুটবলে সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ন ব্যক্তিত্ব। দু’বার তিনি আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে অবসর নেন আবার দেশের রাষ্ট্রপতির অনুরোধে অবসর ভেঙ্গে জাতীয় দলে ফিরে আসেন।

থিয়াগো সিলভা-ব্রাজিল
জন্ম: ২২/৯/১৯৮৪-৪৫ ম্যাচ
বিশ্বের সেরা সেন্টা ব্যাক এবং দলের অধিনায়ক এই দুই ভুমিকা পালন করে ষষ্ঠ বারের মত বিশ্ব কাপ শিরোপা ঘরে তুলতে পারলে নি:সন্দেহে তিনি দেশের জাতীয় বীর-এ পরিনত হবেন। পর্তুগালের এফসি পোর্তোর সঙ্গে চুক্তির সময় রাইট উইঙ্গার হিসেবে খেললেও ব্রাজিলে সেন্টাল ডিফেন্ডারের ভুমিকায় অবতীর্ণ হন সিলভা। তবে এফসি পোর্তোতে সাইড বেঞ্চে বসে থেকে অনেকটাই ক্যারিয়ার নিয়ে শংকিত হয়ে পড়েন এবং এরপর ডায়নামো মস্কোতে যোগ দিয়ে বেশ সমস্যায় পড়েরন তিনি যে কারনে তাকে ছয় মাস মাঠের বাইরে থাকতে হয়। এরপর ব্রাজিলে ফিরে ফ্লুমিনেসে যোগ দিয়ে তারকা ডিফেন্ডার বনে যান তিনি এবং ক্যারিয়ারের স্বর্ন শিখরে পেছে যান। ২০০৮ সালে ১০ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে ইতালির এসি মিলানে যোগ দেন তিনি এবং এরপর ২০১২ সালে ৪২ মিলিয়ন ইউরোতে প্যারিস সেন্ট জার্মেইতে যোগ দিয়ে দলের অধিনায়ক নির্বাচিত হন তিনি।

গ্রুপ বি

সার্জিও রামোস-স্পেন
জন্ম: ৩০/৩/১৯৮০-১১৫ ম্যাচ
আক্ষরিক অর্থেই বিশ্ব কাপ সার্জিও রামেরসোর চামড়ায় মিশে গেছে। রিয়াল মাদ্রিদের এ ডিফেন্ডারের ডান কাফে রয়েছে বিশ্ব কাপ ট্যাট্টু এবং তার বাম কাফে রয়েছে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ট্যাট্টু। সেভিয়ার যুব একাডেমির এক অনন্য সৃস্টি রামোসের বয়স মাত্র ২৮ বছর। কিন্তু ইতোমধ্যে বিশ্ব কাপ, দুই বার ইউরোপিয়ান জ্যাম্পিয়ন এবং নতুন করে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের শিরোপা তার দখলে।

ফার্নান্দো তোরেজ-স্পেন
জন্ম: ২০/৩/১০৯৪-১০৭ ম্যাচ
স্পেনের সর্বোচ্চ গোল দাতা, ম্যাচ সেরার পুরস্কার পাওয়া, এবং ২০০৮ ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশীপ ফাইনালে জার্মানির বিপক্ষে একমাত্র গোল দাতা। এ ছাড়া ২০১২ ইউরো ফাইনালেও গোল দাতা হওয়ায়ায় ফার্নান্দো তোরেসের ক্যারিয়ারটা একেবারেই নিখাদ। এছাড়াও ২০১০ বিশ্ব কাপ শিরোপা জয়ে অসাধারন ভুমিকা রেখেছেন ৩০ বছর বয়সী এ তারকা ফুটবলার। তবে চেলসি তাকে ৫০ মিলিয়ন ইউরো দিয়েছে এমন দাবীর প্রেক্ষিতে আইনগত ঝামেলার কারনে ২০১৩ কনফেডারেশন কাপের পর ১১ মাস তাকে আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে বাইরে থাকতে হয়। কারনে তার ফমেও কিছুটা ঘাটতি দেখা দেয়। তবে ইনজুরির কারনে দিয়েগো কস্তাকে নিয়ে কছুটা সন্দেহ থাকায় ব্রাজিলে অবশ্যই তোরেসকে তার সেরা ফর্ম দেখাতে হবে। স্পেন দলে নিজের ফেরাকে ‘একটি আকাংখিত পুরস্কার’ হিসেবে অভিািহত করেছেন তিনি। তিনি বলেন,‘ গত ম্যাচে আমি বেশ ভাল এবং নিজকে খুবই শক্তিশালী মনে হয়েছে। সুতরাং এ ফর্মটা আমাকে টেনে নিতে হবে।’

এ্যালেক্সিস সানচেজ-চিলি
জন্ম: ১৯/১২ ১৯৮৮-৬৫ ম্যাচ
বার্সেলোনার সেরা উইঙ্গার এ্যালিক্স সানচেজ নিজের দ্বিতীয় বিশ্ব কাপে অংশ নিচ্ছেন। খারার যোগার করতে এক সময় গাড়ী ধোঁয়া-মোছার কাজ করা সানচেজ ইতোমধ্যেই ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, লিভারপুল এবং প্যারিস সেন্ট জার্মেইতে তারকা খ্যাতি অর্জন করেছেন। গত বছর ওয়েম্ব^লিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে একটি প্রীতি ম্যাচে নিজের দক্ষতা দিয়েই জয় এনে দেয়া সানচেজের সম্মানে নিজ শহন টোকোপিল্লায় একটি সড়কের নামকরন করা হয়েছে। ২০১০ বিশ্ব কাপের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক দৃশ্যপটে আসেন ২৫ বছর বয়সী সানচেজ।

মাইল জেডিনাক-অস্ট্রেলিয়া
জন্ম: ৩/৮/১৯৮৪-৪৩ ম্যাচ
নিজের চাচার সিডনি অফিসের কাগজ পত্র ফাইলিং করা থেকে অস্ট্রেলিয়ান প্রিমিয়ার লীগে ক্রিস্টাল প্যালেসের অধিনায়ক বনে যাওয়া মিডফিল্ডার মাইল জেডিনাক শুরু থেকেই অসাধারন ফর্ম দেখিয়ে আসছেন। ক্রিস্টাল প্যালেসের অধিনায়কত্বই আজ তাকে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়কে পরিনত করেছে। টিম চাহিল এবং অস্ট্রেলিয়ার হয়ে তিন বার বিশ্ব কাপ খেলা অভিজ্ঞ মার্ক বেসিয়ানোকে পিছনে ফেলে আজ জেডিনাকই অধিষ্ঠিত হয়েছেন সকারুদের নেতা হিসেবে। ব্রাজিল বিশ্ব কাপে অংশ নেয়া র‌্যাংকিংয়ের সবচেয়ে নিচে থাকা দলটির নেতা হিসেবে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন স্পেন, নেদারল্যান্ড ও চিলির মোকাবেলা করবেন তিনি।

রবিন ভ্যান পার্সি-নেদারল্যান্ড
জন্ম: ৬/৮/১৯৮৩-৮৫ ম্যাচ
হল্যান্ডরা ভাগ্যবান যে চিত্রকর পিতা-মাতার মত রংতুলি ধরেননি রবিন ভ্যান পার্সি। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে ইনজুরি গ্রস্থ একটি মৌসুম শেষে পুরোপুরি সুস্থ হয়েই ব্রাজিলে আসছেন এ বিশ্ব মানের এ ফরোয়ার্ড। ইউরোপিয়ান বাছাই পর্বে সর্বোচ্চ ১১ গোল করেন হল্যান্ডের এ অধিনায়ক। হল্যান্ডের সর্ব কালের সর্বোচ্চ এ গোলদাতা ২০১০ বিশ্বব কাপে নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। সে বছর হ্যান্ড টুর্নামেন্টের ফাইনালে ওঠা সত্বেও তিনি মাত্র ১ গোল করেছিলেন। জাতীয় দলের হয়ে নিজকে প্রমানের জন্য এটাই তার সেরা সময়।

719px-WC-2014-Brasil.svg_গ্রুপ-সি

কেইসুক হোন্ডা-জাপান
জন্ম: ১৩/৬/৮৬, ৫৬ ম্যাচ
চার বছর আগে দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্ব কাপে জাপানের অন্যতম মীর্ষ তারকা ছিলেন কেইসুক হোন্ডা। তার দেয়া দুই গোলের সুবাদে জাপান শেষ ১৬তে পৌঁছতে সক্ষম হয়েছিল এবং এ বছরও ব্রাজিল বিশ্ব কাপে জাতির আশার কেন্দ্র বিন্দুতে পরিনত হবেন তিনি। গত জানুয়ারিতে সিএসকে মস্কো থেকে ইতালিয়ান ক্লাব এসি মিলানে যোগ দেয়ার পর তার সময়টা মোটেই ভাল কাটেনি। তবে পিছনের খারাপ সময়কে ভুলে গিয়ে বিশ্ব কাপে নিজকে তুলে ধরার লক্ষ্য নিয়েই ব্রাজিল এসেছেন ২৭ বছর বয়সী হোন্ডা। অধিকতর আক্রমনাত্মক ফুটবল পছন্দ করা কোচ আলবার্তো জাচ্চেরোনির অধীনে মাঝ মাঠে আরো বেশী ভুমিকা পালন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

ইয়া ইয়া তোরে-আইভরি কোস্ট
জন্ম: ১৩/৫/১৯৮৩, ৯৪ ম্যাচ
তিন বার আফ্রিকান বর্ষ সেরা ফুটবলারের পুরস্কার পাওয়া ইয়া ইয়া তোরে হবেন ব্রাজিল বিশ্ব কাপে আইভোরিয়ানদের আশা ভরসার মুর্ত প্রতীক। বিশ্ব কাপ বাছাই পর্বে সলোমন কালুর পরে সাদা হাতিদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা ছিলেন ৩১ বছর বয়সী তোরে এবং ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগে গত মৌসুমে শিরোপা পাইয়ে দিতে ম্যানচেস্টার উইনাইটেডের হয়ে ২০ গোল করেছেন। মাঝ মাঠ থেকে ফরোর্য়্ডা সর্বত্রই সমান ভাবে বিচরন করা তোরে আইভরিয়ান দলের মুল চালিকা শক্তি। আইভরি কোস্টের সোনালী প্রজন্মের প্রতিনিধি হিসেবে সম্ভাব্য নিজের শেষ বিশ্বকাপে ব্রাজিলে শেষ বারের মত প্রতিািষ্ঠত করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ এ মিডফিল্ডার।

জেমস রড্রিগুয়েজ-কলম্বিয়া
জন্ম: ১২/৭/১৯৯১, ২২ ম্যাচ
র্দাামেল ফ্যালকাওয়ের অনুপুস্থিতিতে ব্রাজিলে কলম্বিয়া দলের মুল দায়িত্ব পালন করতে হবে তারকা মিডফিল্ডার জেমস রড্রিগুয়েজকে। মোনাকোতে ধীর গতিতে ক্যারিয়ার শুরু করার পর ফ্রান্সে প্রথম মৌসুমেই লীগ ওয়ানে নিজে ৯ গোল করা ছাড়াও সহায়তা দিয়েছেন আরো ১২ গোলে। তার দারুন পারফরমেন্সেই মুলত দ্বিতীয় স্থানে থেকে মৌসুম শেষ করে ক্লাব। ‘এল নুয়েবো পিব’অর্থাৎ নতুন শিশু নামে পরিচিত রড্রিগুয়েজ কলম্বিয়ার সাবেক তারকা প্রকৃত‘এল পিব’ ভালদেরামার বংশধর। তবে সব কিছু ছাপিয়ে ব্রাজিল বিশ্ব কাপে রড্রিগুয়েজই হবেন কলম্বিয়ার মুল ভরসা।

কস্তাস মিট্রোগলু-গ্রিস
জন্ম: ১২/৩/১৯৮৮, ৩২ ম্যাচ
কস্তাস মিট্রোগলুর অসাধারন নৈপুন্যেই এক নাগারে দ্বিতীয়বার বিশ্ব কাপ খেলা যোগ্যতা অর্জন করে গ্রিস। বাছাই পর্বে রোমানিয়ার বিপক্ষে দ্বিতীয় প্লে অব ম্যাচে তিন গোল করেই দলকে বিশ্ব কাপ খেলার সুযোগ করে দেন তিনি। কিন্তু তারপর সময়টা খুব ভাল যাচ্ছেনা তার। গ্রিক দল অলিম্পিয়াকস থেকে ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের দল ফুলহামে যোগ দেন তিনি। কিন্তু দীর্ঘ দিনের হাঁটুর সমস্যার কারনে মাত্র এক ম্যাচে প্রথম একাদশে খেলার সুযোগ পেলেও কোন গোল তিনি করতে পারেননি। গ্রিক খেলোয়াড়দের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশী ১৫.৩ মিলিয়র ইউরো মূল্য মানের খেলোয়াড় দলের আক্রমন ভাগের মুল চালিকা শক্তি।

ফিজি কাওয়াসিমা-জাপান
জন্ম: ২০/৩/১৯৮৩, ৫৬ ম্যাচ
কখনো কখনো এক জন গোল রক্ষককে একজন গুরুত্বপুর্ন খেলোয়াড় হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। তবে বিশ্ব পর্যায়ে একজন তারকা হওয়ার সক্ষমতা আছে ফিজি কাওয়াসিমার। ইউরোপে এ পর্যন্ত জাপানের মাত্র দু’জন গোলরক্ষক খেলার সুযোগ পেয়েছেন এবং কাওয়াসিমা তারই একজন। গত বিশ্ব কাপে চার ম্যাচে মাত্র দুই গোল হজম করে দারুন পারফরমেন্স দেখানোর পর বেলজিয়ামে পাড়ি জমান ৩১ বছর বয়সী এ গোলরক্ষক। লিয়ের্সে দুইবার মোস্ট ভ্যালুএ্যাবল খেলোয়াড়ের খেতাব পাওয়া কাওয়াসিমার গোল কিপিং সক্ষমতা দুই দলের মধ্যে পার্থক্য গড়ে দিতে পারে এবং এ কারনেই গ্র“প পর্যায় থেকে জাপানকে বিদায় করাটা কঠিন হতে পারে।

গ্রুপ-ডি

স্টেভেন গেরার্ড-ইংল্যান্ড
জন্ম: ৩০/৫/১৯৮০, ১১১ম্যাচ
ব্রেন্ডার রজার্স লিভারপুলের কোচের দায়িত্ব গ্রহনের পর থেকে মিডফিল্ডের দায়িত্ব পালন করে আসেছেন ইংল্যান্ড দলের অধিনায়ক ৩৪ বছর বয়সী এ খেলোয়াড় এবং ব্রাজিল বিশ্ব কাপেও একই পজিশনে খেলবেন বলে ধারনা করা হচ্ছে। ইতালির আন্দ্রে পিরলোর মত সেন্টার ব্যাক থেকে বল নিজ আয়ত্বে নিয়ে ফরোয়ার্ডে পাস করেতে দারুন পারঙ্গম গেরার্ড একমাত্র খেলোয়াড় যাকে ঘিরে ইংল্যান্ডে দলের উত্তেজনা সৃস্টি হতে পারে। লিভারপুলের হয়ে ২০১৩/১৪ মৌসুমটি দারুন কাটিয়েছেন তিনি । ইতোপুর্বে ২০০৬ এবং ২০১০ বিশ্ব সকাপে অংশ নিলেও খুব বেশী ভাল করতে পারেননি তিনি এবং এটাই চলমান বিশ্ব কাপই হতে পারে তার শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ।

লুইস সুয়ারেজ-উরুগুয়ে
জন্ম: ২৪/১/১৯৮, ৭৬ ম্যাচ
ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগে লিভার পুলের হয়ে অসাধারন একটি মোৗসুম কাটানোর পর বিশ্ব ফুটবলের সবচেয়ে ভয়ংকর স্ট্রাইকারদের একজন হিসেবে ব্রাজিল মাতানোর কথা ছিল ২৭ বছর বয়সী সুয়ারেজের। কিন্তু হাঁটুতে একটি অস্ত্রোপচারের কারনে উরুগুয়ে দলের সঙ্গে এখনো অংশ নিতে পারেননি তিনি। এমনকি বিশ্ব কাপে তার অংশ গ্রহন নিয়েও সন্দেহ সৃস্টি হয়েছিল। ৩৩ ম্যাচে ৩১ গোল করে বিস্ময়কর ভাবে ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগে দ্বিতীয় স্থানে তুলে দিতে সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ন ভুমিকা পালন করেছেন সুয়ারেজ । ইংলিশ পিমিয়ার লীগের এবং ফুটবল রাইটার্স এসোসিয়েশনের সেরা খেলোয়াড়ের খেতাব লাভ করেন তিনি। গত বিশ্ব কাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ঘানার ডোমিনিক আদিইয়াহর হেডের একটি বল হাত দিয়ে ফিরিয়ে দিয়ে আন্তর্জাতিক ফুটবলে সকলের নজরে আসেন আয়াক্সের সাবেক এ ফুটবলার। ২০১১ কোপা আমেরিকায় উরুগয়ের সাফল্যের চাবিকাঠি ছিলেন তিনি।

মারিও বালোতেল্লি-ইতালি
জন্ম: ১২/৮/১৯৯০, ৩০ ম্যাচ
এসি মিলানে হয়ে বাজে একটি মৌসুম শেষ করার পর নিজকে প্রমানের জন্য বিশ্ব কাপ বালোতেল্লির একটি সুবর্ন সুযোগ। ক্লাব মৌসুমে পেনাল্টি মিস করার শত ভাগ রেকর্ড গড়ার পর সিরি এ তে দলকে অষ্টম স্থানে থেকে উপড়ে ওঠাতে ব্যর্থ হন ২৩ বছর বয়সী এ স্ট্রাইকার। ম্যানচেস্টার সিটির সাবেক এ খেলোয়াড়ের ব্যক্তি জীবনেও রয়েছে নানা সমস্য। সাবেক বান্ধবীর গর্ভে তারই সন্তানের জন্য ডিএনএ টেস্ট পর্যন্ত করতে হয়েছে ব্যাড বয় খ্যাত এ তারকা ফুটবলারকে। ২০১২ ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশীপে চার গোল করা সহ দারুন পারফরমেন্সের সুবাদে ইতালির এক নম্বর স্ট্রাইকারের স্বীকুতি লাভ করেন তিনি। ফুটবলের মত নিজের বিতর্কিত চরিত্রের জন্য বিশ্ব ব্যাপি পরিচিতি পেয়েছেন তিনি।

জোয়েল ক্যাম্পবেল-কোস্টারিকা
জন্ম: ২৬/৬/৯২, ৩২ ম্যাচ
ব্রাজিল বিশ্ব কাপে ডি গ্র“পে কোস্টারিকা যদি কোন আপসেট ঘটাতে সক্ষম হয়ে তবে সেটা হতে পারে আর্সেনাল ফরোয়ার্ড ক্যাম্পবেলের এক জোড়া পায়ের কারনেই। ২০১১ সালে লন্ডনের এ ক্লাবটিতে যোগ দের ২১ বছর বয়সী এ ফুটবলার। তবে লরিয়েন্ট, রিয়াল বেটিস এবং অলিম্পিয়াকসে ধার হিসেবে খেলার কারণে প্রতিযোগিতামুলক অভিষেকের অপেক্ষায় আছেন তিনি। ২০১৩-১৪ মৌসুমে অলিম্পিয়াকসে ি বশেষ করে চ্যাম্পিয়ন্স লীগে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে ২-০ গোলে জয় পাওয়া ম্যাচে অসাধারন একটি গোল করে দারুন একটি মৌসুম কাটিয়েছেন তিনি। বাম পায়ের দক্ষ খেলোয়াড় অলিম্পিয়াকসে সাধারনত ডান ফরোয়ার্ড হিসেবে খেলে থাকেন । তবে বিশ্ব কাপে সেন্ট্রাল স্ট্রাইকার হিসেবে দেখা যেতে পারে তাকে।

ওয়েইন রুনি-ইংল্যান্ড
জন্ম: ২৪/১/১৯৮৫-৯২ ম্যাচ
সতীর্থ স্টেভেন গেরার্ডের মত গত দুই বিশ্ব কাপে বাজে অভিজ্ঞতা অর্জন কারি খেলোয়াড় রুনি। ২০০৬ বিশ্ব কাপের কয়েক দিন আগে পা ভেঙ্গে যাওয়ায় দল থেকে বাদ পড়তে হয় তাকে। চার বছর পর দক্ষিন আফ্রিকা বিশ্ব কাপে কোন গোলই করতে পারেননি তিনি। ফলে শেষ ১৬ থেকে বিদায় নিতে হয় ইংল্যান্ডেকে। ব্রাজিলে হাইপ্রোফাইল খেলোয়াড়দের মধ্যে একজন হবেন তিনি। তবে ২০০৪ ইউরোতে একজন তরুন খেলোয়াড় হিসেবে নিজকে দৃশ্যপটে উপস্থাপন করা পর থেকে কখনোই নিজের নামরে প্রতি সুবিচার করতে পারেননি তিনি। বর্তমানে ২৮ বছর বয়সী রুনিকে তার সেরা ফর্মে থাকার কথা। কিন্তু আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তার ওপড় অত্যধিক চাপ সে কতটা সামাল দিতে পারবে সেটাই দেখার বিষয়।

গ্রুপ ই

করিম বেনজেমা- ফ্রান্স
জন্ম: ১৯/১২/১৯৮৭, ৬৩ ম্যাচ
ঘনিস্ট বন্ধু ফ্রাঙ্ক রিবেরির পিঠে আঘাতের কারনে অধিক চাপে থাকবেন রিয়াল মাদ্রিদ স্ট্রাইকার করিম বেনজেমা। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিশাল অভিজ্ঞতা থাকা এ তারকা খেলোয়াড়কে সামনে থেকেই দলকে এগিয়ে নিতে হবে। যদি আন্তর্জাতিক একজন স্ট্রাইকার হিসেবে ৬৩ ম্যাচে মাত্র ১৯ গোল খুব ভাল রেকর্ড নয়। বড় ধরনের টুর্নামেন্ট ইউরো ২০১২তে নিজকে মেলে ধরতে ব্যর্থ হন তিনি। কোচ কার্লো আনচেলত্তির অধীনে দারুন একটি মৌসুম কাটানোর ফলে ব্রাজিলে সাফল্য পাবেন বলে আশা করছেন ফ্রান্স কোচ দিয়িার দেশ্যাম।

বালিসে মাতুইদি-ফ্রান্স
জন্ম: ৯/৪/১৯৮৭, ২২ ম্যাচ।
এ্যাঙ্গোলান ইমিগ্রান্ট পিতামাতার সন্তান যুদ্ধের পর কঙ্গো থেকে এসে ফরাসি নাগরিকত্ব লাভ করেন। গত দুই মৌসুমে প্যারিস সেন্ট জার্মেই দুটি শিরোপা লাভের পিছনে গুরুত্বপুর্ন ভুমিকা পালন কে ছে মিডফিল্ডে তার অসাধারন নৈপুন্য এবং প্রতিপক্ষকে বোকা বানাতে দেশ্যামের তুরুপের তাস হতে পারেন মাতুইদি।

এ্যান্টোনিও ভ্যালেন্সিয়া-ইকুয়েডর
জন্ম: ৪/৮/১৯৮৫, ৬০ ম্যাচ
বিশ্ব কাপের চুড়ান্ত পর্বে আসতে উইঙ্গার এ্যান্টোনিও ভ্যালেন্সিয়ার বাহুতে অনেক চাপ সহ্য করতে হয়েছে। গত বছর তার ঘনিষ্ট বন্ধু ক্রিস্টিয়ান বেনিটেজের হঠাৎ মৃত্যুর পর কোচ রেইনালডো রুয়েডা তাকে দলের অধিনায়ক নির্বাচিত করেন। ২০০৬ বিশ্ব কাপে শেষ ১৬তে পৌছা দলের একমাত্র খেলোয়াড়।

উইলসন প্যালাসিও-হন্ডুরাস
জন্ম: ২৯/৭/১৯৮৪, ৯৪ ম্যাচ
উইগান এ্যাথলেটিকসে ভ্যালেন্সিয়ার ঘনিষ্ট বন্ধু। কিন্তু বিশাল অংকের বিনিময়ে টটেনহাম হটসপারে যোগ দিলেও খুব বেশী ভাল কিছু দেখাতে পারেননি তিনি। তবে বর্তমানে স্টোক সিটির হয়ে দারুন ফর্মে থাকা এ মিড ফিল্ডার পর পর দুইবার জাতীয় দলকে বিশ্ব কাপ মঞ্চে এনে দিতে সবচেয়ে বেশী ভুমিকা পালন করেছেন। অপর দুই ভাই জেরি এবং জনিকে নিয়ে ২০১০ বিশ্ব কাপে একই দলে তিন ভাই স্থান পেয়ে ইতিহাস সৃস্টি করেছিলেন।

ভ্যালন বেহরামি-সুইজারল্যান্ড
জন্ম: ১৯/৪/১৯৮৫, ৪৮ ম্যাচ
সুইজারল্যান্ড দলে অনেক তরুণ খেলোয়াড় আছে । তবে ধীরে ধীরে দলে নিজের উপস্থিতিকে শক্ত করেছেন তিনি। অবশ্য নাগরিকত্ব পাওয়া দেশটির হয়ে এ পর্যন্ত মাত্র দুটি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাওয়ায় তার কাছ থেকে খুব বেশী গোল আশা করাটা সমিচীন হবেনা। কসোভোতে জন্মগ্রহন করা এ তারকা প্রথমে এ্যাথলেটিকসের প্রতি অনুরাগী ছিলেন। কিন্তু ২০১১ সালে ইতালিতে ফিওরেন্তিনার হয়ে খেলার পর ফুটবলে মনোনিবেশ করেন।

গ্রুপ এফ

লিওনেল মেসি-আর্জেন্টিনা
জন্ম ২৪/৬/১৯৮৭, ৮৫ ম্যাচ
বর্তমান জেনারেশনের খেলোয়াড়দের মধ্যে যে রকম মেধা মেসির মধ্যে রয়েছে সেই অনুপাতে সফলতা জাতীয় দলে এনে দিতে পারেননি তিনি। দিয়াগো ম্যারাডোনার পর মোিসই যে এই মুহুর্তে বিশ্বের একজন সেরা খেলোয়াড় সে ব্যাপারে কোন দ্বিমত নেই। কিন্তু তার ওই সুনামের সঙ্গে এখনো সেই অর্থে উল্লেখযোগ্য পরিচিতি ঘটেনি জাতীয় দলে। আগের বিশ্বকাপেও তিনি ছিলেন অনেকটা নি®প্রভ।
এরপর থেকে অবশ্য তিনি ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে আসছেন। এখন তিনি অনেকটাই পরিপক্ক। ক্রমেই তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনের স্পটলাইটে চলে এসেছেন। ক্লাব সতীর্থ নেইমারের সংস্পর্শটিও তার অনেক কাজে আসছে। মেসির বাঁ পায়ে রয়েছে যাদুর স্পর্শ। তার বল নিয়ে ড্রিবলিং এবং নিখুঁত শট খুবই কার্যকরী।

এডিন জোকো-বসনিয়া
জন্ম ১৭/৩/১৯৮৬, ৬২ ম্যাচ
২০১১ সালে ম্যানচেস্টার সিটিতে যোগ দেয়ার পর থেকে তিনি তার ইচ্ছে মাফিক খেলতে পারেননি। তবে বিশ্বকাপে আলো ছড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে এডিন জেকোর। দু:খজনকভাবে ক্লাব ফুটবলে অধিকাংশ সময় সাইডবেঞ্চে বসে থাকলেও বসনিয়ার আক্রমনভাগের প্রথম পছন্দেও তালিকায় রযেছেন জোকো। উলফসবার্গে থাকার সময় জেকোর আন্তর্জাতিক রেকর্ড ছিল অসাধারন। প্রতিটি দুই ম্যাচের একটিতে গোল রয়েছে তার। ক্লাবটির হয়ে বুরেন্দসলীগার শিরোপা জয় করা জেকোর গোলের গড় হচ্ছে ম্যাচ প্রতি ০.৬। দীর্ঘ দেহের জন্য মাঠের উর্ধস্থানে অধিপত্য বিস্তারকারী এই স্ট্রাইকার শারিরিকভাবেও যথেষ্ঠ ফিট। বসনিয়ার সবচেয়ে ভয়ঙ্কর গোলদাতা হিসেবে তিনি যে কোন দলেরই যে হুমকী সে ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই।

মিরালেম পিয়ানিচ-বসনিয়া
জন্ম: ২/৪/১৯৯০, ৪৮ ম্যাচ
মাত্র ২৪ বছর বয়সেই মিরালেম পিয়ানিচ তার ফুটবল ক্যারিয়ারের সুবর্ণ যুগে প্রবেশ করেছেন। বসনিয়া দলের সফলতার ধারক হিসেবে তিনি নিজেকে পৌছে দিয়েছেন সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ন স্থানে। কুশলী আক্রমনাত্মক মিডফিল্ডার হিসেবে তার মধ্যে রয়েছে সৃষ্টিশীলতা, লক্ষ্য এবং বলকে পরিচালনা করা ও পাস করার অসাধারন দক্ষতা। ২০০৮ সালে তার ক্লাব মেজ কে রেলিগেশনের দ্বাপ্রান্ত থেকে ফ্রান্সের শীর্ষে পৌছে দিয়ে দারুন শোরগোলের সৃষ্টি করেছিলেন পিয়ানিচ। এরপর লিয়ঁ হয়ে রোমায় পৌছান তিনি। সেখানেই তারকা খ্যাতি অর্জন করেন এই বসনিয় খেলোয়াড়। মুলত লুক্সেবার্গে বেড়ে উঠা এবং যুব ফুটবলের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও তিনি সব সময় তার পিতামাতার দেশকেই প্রতিনিধিত্ব করেছেন জাতীয় পর্যায়ে।

ভিক্টর মসেস-নাইজেরিয়া
জন্ম: ১২/১২/১৯৯০, ১৭ ম্যাচ
দ্রতগতি, শক্তিশালী এবং যে কোন খেলোয়াড়ের মোকাবেলায় আগ্রহের কারণে ভিক্টর মসেস আক্রমনভাগে খেলার জন্য খুবই উপযুক্ত। নাইজেরিয়ায় জন্মগ্রহন করলেও ১১ বছর বয়সে ইংল্যান্ডে চলে যান তিনি। নিজ মাতৃভুমিতে সৃষ্ঠ দাঙ্গায় পিতামাতা হারানো মসেস সেখানে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেন। এক পর্যায়ে দক্ষিন লন্ডনের জুনিয়র ফুটবলে দারুন জনপ্রিয়তা লাভ করেন তিনি। এরপর তিনি যুব ফুটবল পর্যায়ে আশ্রিত দেশটির প্রতিনিধিত্ব করেন। দুই বছর আগে চেলসিতে যোগ দেয়ার পর তিনি তার ক্যারিয়ারকে আরো পরিপক্ক করেন। যে কারণে ইংল্যান্ড সিনিয়র দলের নির্বাচকরা তার প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠলেও শেষ পর্যন্ত নিজ মাতৃভুমির হয়েই আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শুরু করেন মসেস। নানান চড়াই উৎরাই সত্বেও সুপার ঈগলসদেও সঙ্গ ত্যাগ করেননি তিনি।

আশখান দেজাগহ- ইরান
জন্ম: ৫/৭/১৯৮৬, ১৩ ম্যাচ
দ্বৈত নাগরিকত্ব এবং ভিন্ন দেশে খেলার সুযোগ পাওয়ার পরও জার্মানীর সঙ্গে না থেকে মাতৃভুমি ইরানকেই বেছে নিয়েছেন আশখান দেজাগহ। তেহরানে জন্ম নেয়া দেজাগহ তার পিতা মাতার সঙ্গে মাত্র এক বছর বয়সেই জার্মানীতে চলে আসেন। শাহ এবং ইসলামি বিপ্লবিদের মধ্যে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব শুরু হওয়ায় দেশ ত্যাগ করেছিলেন তারা। অনুর্ধ একুশ বছর পর্যন্ত জার্মানী যুব দলে ফুটবল খেলেছেন তিনি। তবে জাতীয় দলের হয়ে খেলার সুযোগ ঘটেনি তার। যে কারণে ২০১২ সালে ২৫ বছর বয়সে ইরান জাতীয় দলে ডাক পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সুযোগটি লুফে নেন তিনি। এ জন্য ফিফার নিয়মের কারণে জাতীয়তারও পরিবর্তন করেছেন তিনি। এতে অবশ্য তার ক্ষতি হয়নি। খুব দ্রুতই পুর্তগীজ কোচ কার্লোস কুইরোজের দলের গুরুত্বপুর্ন অনুষঙ্গ হয়ে ওঠেন তিনি।

গ্রুপ জি

ফিলিপ লাম-জার্মানি
জন্ম: ১১/১১/১৯৮৩, ১০৬ গোল
গত বিশ্ব কাপের আগ মুহুর্তে মাইকেল বালাকের ইনজুরির কারনে জার্মান দলের অধিনায়ক করা হয় ফিলিপ লামকে এবং তার পর থেকেই আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি এ রাইট ব্যাককে। জার্মান কাপ ফাইনালে বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে খেলার সময় পায়ের গোড়ালির আঘাতের কারনে ব্রাজিল বিশ্বকাপের প্রস্তুতিতে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটেছে লামের। তবে পর্তুগালের বিপক্ষে নিজেদের প্রথম ম্যাচে মরনপন লড়াইয়ে দলের নেতৃত্ব দেবেন ৩০ বছর বয়সী এ তারকা ফুটবলার। এ বছর বায়ার্নে রাইট ব্যাক থেকে ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডারের ভুমিকা পালন করে সফল হয়েছেন লাম। অবশ্য জার্মান কোচ জোয়াচিম লো পরীক্ষামুলকভাবেই তাকে এ ভুমিকায় খেলিয়েছেন। ২০০৬ বিশ্ব কাপে নিজের প্রথম গোল করা লাম এ পর্যন্ত মোট ৫ গোল করে জার্মান দলের মুল স্ট্রাইকারে পরিনত হয়েছেন। ২০০৮ ইউরো ফাইনালেও তুরস্কের বিপক্ষে শেষ মিনিটে গোল করেছিলেন লাম।

ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো-পর্তুগাল
জন্ম: ৫/২/১৯৮৫, ১১০ ম্যাচ
২০১৩ ব্যালন ডি’অর জয়ী এ তারকা খেলোয়াড়কে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেবার মত কিছু নেই। তবে বিশ্ব কাপের আগে সামান্য ইনজুরি নিয়ে চিন্তিত ছিলেন তিনি। চ্যাম্পিয়ন্স লীগ জয়ী রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে ফাইনালে হ্যামস্ট্রিং এ হাটুতে সামান্য আঘাত পাওয়ায় রোনাল্ডোর প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল বিশ্ব কাপের আগে ফিট হয়ে ওঠা। গত নভেম্বরে বাছাই পর্বে সুইডেনের বিপক্ষে তার হ্যাট্রিকের সুবাদেই পাওলো বেনেটোর দল আজ বিশ্ব কাপ ে খলার সুযোগ পেয়েছে। ক্যামেরুনের বিপক্ষে ৫-২ গোলে জয় পাওয়া প্রস্তুতি ম্যাচে নিজে ২ গোল করে দেশের হয়ে সর্বোচ্চ গোলের মালিক এখন তিনি। দলগতভাবে পর্তুগাল খুব বেশী শক্তিশালী না হলেও একই গ্র“পে থাকা জার্মানি রোনাল্ডোকেই বেশী সমীহ করছে।