সিউল, ১৫ জুন ২০১৪:
আল কায়দার মদদপুষ্ট বিদ্র্রোহীদের মুহুর্মুহু হামলায় ক্রমেই কোণঠাসা হয়ে পড়ছে ইরাকের শিয়াপন্থী নুরি আল মালিকি সরকার। তিকরিত এবং মসুল কবজা করার পর রাজধানী বাগদাদ দখলের হুমকি দিয়েছে ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড লেভেন্ট (আইএসআইএল) বাহিনী। শেষ পর্যন্ত বাগদাদের উত্তরে দিয়ালা প্রদেশের জালুলা এবং সাদিয়া শহর দুটি দখল করে বাগদাদের উপকণ্ঠে এসে পৌঁছেছে তারা। জালুলা শহরটি বাগদাদ থেকে ১২৫ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে অবস্থিত। অন্যদিকে সাদিয়ার অবস্থান বাগদাদের ৯৫ কিলোমিটার উত্তরে। এর পাশাপাশি বাগদাদ থেকে ১১০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত সামারা শহরটির দখলের পথে অগ্রসর হয়েছে বিদ্রোহীরা।
এদিকে ইরাকে চলমান সহিংসতায় নুরি আল মালিকি সরকারকে সাহায্য করতে দেশটিতে মার্কিন সেনা পাঠাবে না যুক্তরাষ্ট্র। তবে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ইরাক সরকারকে আর কীভাবে সাহায্য করা যাবে তা বিবেচনা করা হচ্ছে। শুক্রবার হোয়াইট হাউসে দেয়া এক ভাষণে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা একথা জানিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট ওবামা বলেন, আমরা ইরাকে যুদ্ধ করার জন্য আবারও মার্কিন সেনাদের সে দেশে পাঠাচ্ছি না। তবে ইরাকের নিরাপত্তা বাহিনীকে অন্যভাবে সাহায্য করার জন্য মার্কিন কর্তৃপক্ষকে প্রস্তুত থাকতে বলেছি। ওবামা বলেন, একটি সার্বভৌম জাতি হিসেবে ইরাকিদেরই নিজেদের সমস্যা সমাধান করতে হবে। এদিকে ইরাকের সর্বোচ্চ শিয়া নেতা সুনি্নদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ইরাকবাসীকে অস্ত্র হাতে তুলে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। শুক্রবার কারবালা শহরে জুমার নামাজের ভাষণে শিয়াদের প্রধান ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লা আলি আল সিস্তানি তার অনুসারীদের অস্ত্র হাতে নেয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড লেভেন্ট (আইএসআইএল) বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ যুদ্ধ শুরু করতে ঐক্যবদ্ধ হওয়া প্রয়োজন।
মঙ্গলবার ইরাকের দ্বিতীয় বৃহত্তম নগরী মসুল দখল করে নেয় তালেবান সংশ্লিষ্ট আইএসআইএল বাহিনী। এ বাহিনী এখন সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের নিজ শহর তিকরিতসহ ইরাকের একের পর এক শহর দখল করে নিচ্ছে। তারা রাজধানী বাগদাদ দখলের হুমকি দিচ্ছে। ইরাকি প্রধানমন্ত্রী নুরি আল মালিকি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জরুরি অবস্থা জারির ক্ষমতা চেয়ে পার্লামেন্টের কাছে আহ্বান জানালেও তা নাকচ হয়ে যায়। গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, দখলকৃত এলাকাগুলো থেকে নুরি আল মালিকি সরকারের সেনা সদস্যরা পালিয়ে যাচ্ছে। তাদের রেখে যাওয়া অস্ত্র ও সাঁজোয়া যানগুলো বিদ্রোহীদের দখলে চলে যাচ্ছে। বুধবার কয়েকটি শহরে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি সাঁজোয়া যানে চড়ে আল কায়দা সংশ্লিষ্ট আইএসআইএল বিদ্রোহীদের রাজপথে কুচকাওয়াজ করতে দেখা যায়। এদিকে ইরানের প্রেসিডেন্ট ড. হাসান রুহানি প্রতিবেশী দেশ ইরাকে সেনা মোতায়েনের খবর নাকচ করে দিয়েছেন। তবে ইরাকে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বাগদাদের অনুরোধে যে কোনো সহায়তা নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার জন্য তেহরান প্রস্তুত আছে বলে জানিয়েছেন তিনি। এএফপি, রয়টার্স, আলজাজিরা