পদোন্নতি পাচ্ছেন ঢাবির আওয়ামীপন্থী বিতর্কিত কর্মকর্তা শারমিন?

 

chardike-ad

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ডেপুটি রেজিস্ট্রার পদে পদোন্নতির জন্য আসন্ন সিলেকশন বোর্ডের সভা নিয়ে আলোচনা চলছে। আজ রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৪টায় অনুষ্ঠিতব্য এই বৈঠকে ২৪ জন সহকারী রেজিস্ট্রারের মধ্য থেকে ডেপুটি রেজিস্ট্রার পদে পদোন্নতি দেওয়া হবে। তবে এই তালিকায় অন্যতম আলোচিত নাম আওয়ামীপন্থী কর্মকর্তা শারমিন জাহান (প্রশাসন-১), যিনি অতীতে আওয়ামী লীগের সময়ে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে বরখাস্ত হয়েছিলেন।

বিতর্কিত অতীত ও নিয়ম ভঙ্গের অভিযোগ

সরকারি চাকরি বিধির তোয়াক্কা না করে শারমিন জাহান বিনা ছুটিতে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফরে সঙ্গী হন। দেশে ফেরার এক মাস পর নিয়ম বহির্ভূতভাবে সেই ছুটির অনুমোদন নেন। এছাড়া, তার শিক্ষা ছুটি নিয়েও রয়েছে গুরুতর প্রশ্ন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী, সর্বোচ্চ ৬ বছরের মধ্যে শিক্ষা ছুটির আওতায় ডিগ্রি সম্পন্ন করতে হয়। কিন্তু শারমিন জাহান ৮ বছরেও ডিগ্রি শেষ করতে পারেননি। সম্প্রতি তিনি ‘মানবিক বিবেচনায়’ সনদ জমা দেওয়ার সময় বৃদ্ধির আবেদন করেছেন। এর মধ্যে দুই বছর তিনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃত ছিলেন।

২০২০ সালে করোনা মহামারির সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্ক কেলেঙ্কারিতে জড়িত থাকার অভিযোগে তিনি কারাবরণ করেন। এ ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক ক্ষতি

শিক্ষা ছুটির নিয়ম অনুযায়ী, সর্বোচ্চ ৫ বছর বেতনসহ ও ১ বছর বেতনবিহীন ছুটি নেওয়া যায়। কিন্তু শারমিন জাহান ৮ বছরেও ডিগ্রি সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হন। গত বছরের ২৫ জুন ছিল তার সনদ জমা দেওয়ার শেষ সময়, যা তিনি পার করতে পারেননি। নিয়ম অনুসারে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সনদ জমা না দিলে ভোগ করা বেতনের অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাগারে ফেরত দিতে হয়। এই হিসাবে, তার কাছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রায় ৪০ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে বলে জানা গেছে।

তবুও কি পদোন্নতি নিশ্চিত?

শিক্ষা ও প্রশাসনিক নিয়ম ভঙ্গ, বহিষ্কারাদেশ, বিতর্কিত কর্মকাণ্ড ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক ক্ষতির মতো গুরুতর অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও শারমিন জাহান কীভাবে পদোন্নতির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

জানতে চাইলে মুঠোফোনে ঢাবির ভিসি ও রেজিস্ট্রারকে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি। তাছাড়া প্রো-ভিসিকে (প্রশাসন) মুঠোফোনে কল দেওয়া হলে তিনি মিটিংয়ে আছেন বলে খুদেবার্তা পাঠিয়েছেন এই প্রতিবেদককে।