বৃষ্টি উপেক্ষা করে তিন দফা দাবিতে এখনও কাকরাইল মোড়ে অবস্থান করছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস রাস্তার মাঝখানে দাঁড় করিয়ে বিক্ষোভ করায় কাকরাইল থেকে মৎস্য ভবন সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
এ সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ‘কথা বলো যমুনা, খালি হাতে যাবো না’; ‘যেই হাত ছাত্র মারে, সেই হাত ভেঙে দাও’ — স্লোগান দিতে শোনা যায়। বৃষ্টি মাথায় নিয়েও আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বাড়তে দেখা যাচ্ছে।
সকাল থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আন্দোলনে যোগ দিতে ঢাকায় আসছেন। সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের একাত্তরের গণহত্যা ভাস্কর্যের সামনে থেকে অন্তত ২৪টি বাস কাকরাইল মোড়ের উদ্দেশে রওনা দেয়।
প্রতিটি বাসেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অবস্থান করছেন। চলমান আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে অনেক সাবেক শিক্ষার্থীও যুক্ত হচ্ছেন এই কর্মসূচিতে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, সিলেট, ময়মনসিংহসহ দেশের নানা প্রান্ত থেকে তারা ঢাকায় এসে আন্দোলনে অংশ নিচ্ছেন।
এ অবস্থায় পুলিশ ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন। বিক্ষোভকারীদের সামনে ব্যারিকেড দিয়ে রাখা হয়েছে।
গতকাল রাতভর কাকরাইল মসজিদের সামনে রাস্তায় অবস্থান করেন জবি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। আজ বৃহস্পতিবার (১৫ মে) সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, কেউ রাস্তায় শুয়ে, কেউ বসে, আবার কেউ ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে গল্প করছেন। তাদের পাশেই শতাধিক পুলিশ সদস্য ব্যারিকেড দিয়ে অবস্থান করছিলেন।
পুলিশের ব্যারিকেডের সামনে চেয়ারে বসে নিজেদের মধ্যে আলাপ করছিলেন পাঁচ আন্দোলনরত শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে মনোবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী রাইসুল ইসলাম বলেন, “আমরা গতকাল থেকে এখানে অবস্থান করছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব।”
উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ওপর বোতল নিক্ষেপের বিষয়ে রাইসুল বলেন, “এটাকে আমরা বড় কিছু মনে করি না। কারণ তিনি আমাদেরই প্রতিনিধি হয়ে সরকারে গিয়েছেন। শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের গতকালের হামলার তুলনায় এটা কিছুই না।”
এর আগে, বুধবার (১৪ মে) তিন দফা দাবিতে কাকরাইলে বিক্ষোভ শুরু করেন জবি শিক্ষার্থীরা। শিক্ষকদের একটি অংশও শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিতে একাত্মতা প্রকাশ করে যোগ দেন।