বুধবার । ডিসেম্বর ১৭, ২০২৫
ডেস্ক রিপোর্ট বিনোদন ১১ জুলাই ২০২৫, ৯:৩০ অপরাহ্ন
শেয়ার

অবশেষে ‘জালিবি’ অভিনেত্রীর মরদেহ গ্রহণ করেছে পরিবার



পাকিস্তানি মডেল ও অভিনেত্রী হুমাইরা আসগরের মৃত্যু ঘিরে ধীরে ধীরে আরও জটিল হয়ে উঠছে রহস্য। করাচির এক ফ্ল্যাট থেকে তার পচাগলা মরদেহ উদ্ধারের পর প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয়েছিল, অন্তত ১৫ থেকে ২০ দিন আগে তিনি মারা গেছেন। তবে নতুন তদন্ত বলছে, এই মৃত্যু ঘটেছে নয় মাস আগে—গত বছরের অক্টোবরে!

আরব নিউজ-এর প্রতিবেদন অনুসারে, হুমাইরার মরদেহ ছিল এমন অবস্থায় যে তা দেখে বোঝাই যাচ্ছিল দীর্ঘ সময় আগে মৃত্যু হয়েছে। করাচির পুলিশ সার্জন ডা. সুমাইয়া সাঈদ জানিয়েছেন, ময়নাতদন্তে পাওয়া গিয়েছে ‘চরম পচন’-এর আলামত। ফোন রেকর্ড ও ডিজিটাল তথ্য ঘেঁটে দেখা গেছে, তার মুঠোফোন শেষবার ব্যবহৃত হয় ২০২৪ সালের অক্টোবরে। একইভাবে, তার সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টেও সর্বশেষ পোস্ট ছিল গত বছরের সেপ্টেম্বরে।

অভিনেত্রীর মরদেহ উদ্ধারের কয়েকদিন পর অবশেষে তার পরিবার করাচিতে এসে তা গ্রহণ করেছে। যদিও মরদেহ গ্রহণে তার পরিবার অনীহা প্রকাশ করেছিল। হুমায়রার মরদেহটি তার অ্যাপার্টমেন্ট থেকে পচাগলা অবস্থায় উদ্ধার হওয়ার পর হিমঘরে সংরক্ষিত ছিল।

এর আগে ময়নাতদন্ত রিপোর্টে বলা হয়েছিল, তিনি হয়তো এক মাস আগে মারা গেছেন। তবে সাম্প্রতিক তদন্তে সেই সময়সীমা আরও বড় হয়ে দেখা দিচ্ছে। হৃদয়বিদারক এই ঘটনার আরেকটি দিক হলো—হুমাইরার বাবা তার মরদেহ গ্রহণে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। ফলে দাফনের দায়িত্ব নিয়েছেন তার ভাই।

পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বিকেলে ফ্ল্যাটের ভেতর থেকে মরদেহ উদ্ধারের সময় দরজায় বারবার কড়া নাড়লেও কোনো সাড়া না পেয়ে তা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে পুলিশ। তখনই দেখা যায়, মেঝেতে পড়ে আছে হুমাইরার মরদেহ। প্রতিবেশীরাও পুলিশকে জানিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে ওই ফ্ল্যাটে কোনো গতিবিধি দেখা যায়নি।

এক সময়ের আলোচিত মডেল ও অভিনেত্রী হুমাইরা আসগর প্রায় এক দশক ধরে পাকিস্তানি বিনোদন অঙ্গনে কাজ করছিলেন। ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন মডেলিং দিয়ে। পরে টেলিভিশন রিয়েলিটি শো ‘তামাশা ঘর’-এর মাধ্যমে পরিচিতি পান। ২০১৫ সালের আলোচিত সিনেমা ‘জালিবি’-তে তার অভিনয় প্রশংসিত হয়েছিল।

তবে সাম্প্রতিক সময়ে তিনি কাজ কমিয়ে দিয়েছিলেন, কাটাচ্ছিলেন একাকী জীবন। ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে খুব একটা প্রকাশ্যে আসতেন না। তার মৃত্যুতে পাকিস্তানি শোবিজে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, কীভাবে এত দীর্ঘ সময় ধরে তার মৃত্যু কেউ জানতে পারল না?

পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত চলছে এবং মৃত্যুর সঠিক কারণ বের করতে চেষ্টা চলছে। এখন পর্যন্ত এটি স্বাভাবিক মৃত্যু, আত্মহত্যা না হত্যাকাণ্ড—তা নিশ্চিত নয়। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত রহস্য থেকে যাচ্ছে হুমাইরার মৃত্যু ঘিরে।