নিউ ইয়র্ক সিটির ম্যানহ্যাটানে একটি উচ্চ-নিরাপত্তা অফিস টাওয়ারে আচমকা গুলিবর্ষণের ঘটনায় কমপক্ষে পাঁচজন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে রয়েছেন হামলাকারী নিজেও। এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে সোমবার সকালে পার্ক অ্যাভিনিউর ৩৫৪ নম্বর ঠিকানার একটি বহুতল ভবনে।
এ ঘটনায় নিউ ইয়র্ক পুলিশ বিভাগের এক সদস্যও প্রাণ হারিয়েছেন। নিহত পুলিশ কর্মকর্তা দিদারুল ইসলাম (৩৬) ছিলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত। তার মৃত্যুতে পুরো কমিউনিটিতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
নিউ ইয়র্কের বঙ্কস কাউন্টিতে থাকে দিদারুলের পরিবার। তাঁর মৃত্যুর খবর শুনে আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধুবান্ধব রাতেই রাস্তায় নেমে আসেন। নিউ ইয়র্ক সিটি পুলিশে দিদারুল সাড়ে তিন বছর ধরে কর্মরত ছিলেন।
নিউ ইয়র্ক পুলিশ বিভাগ জানিয়েছে, একজন ব্যক্তি হঠাৎ করেই অফিস ভবনে ঢুকে এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে থাকে। পরে সে নিজেই নিজের বুকে গুলি চালিয়ে আত্মহত্যা করে। পুলিশ কমিশনার জেসিকা টিশ এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, “হামলাকারীর বয়স ২৭ বছর, তিনি লাস ভেগাসের বাসিন্দা এবং মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছিলেন বলে আমরা প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি।”
টিশ আরও জানান, ওই ব্যক্তি কয়েকদিন আগেই গাড়ি চালিয়ে নিউ ইয়র্কে আসে এবং ঘটনার দিন একটি আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে টাওয়ারে প্রবেশ করে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর ফুটেজে দেখা গেছে, সে নিরাপত্তা গেট এড়িয়ে ভবনে ঢোকে এবং পরে একাধিক ফ্লোরে গুলি চালায়।
নিহত বাকি তিনজন সাধারণ নাগরিক বলে পুলিশ নিশ্চিত করেছে, তবে তাদের পরিচয় এখনও প্রকাশ করা হয়নি।
নিউ ইয়র্ক সিটির মেয়র এরিক অ্যাডামস এক বিবৃতিতে বলেন, “এটি আমাদের শহরের জন্য এক ভয়াবহ দিন। পুলিশ সদস্যের আত্মত্যাগ আমাদের নিরাপত্তা রক্ষায় তাদের দায়বদ্ধতার প্রমাণ। হামলাকারীর মৃত্যু হলেও আমরা ঘটনা তদন্তে কোনো ত্রুটি রাখবো না।”
উল্লেখ্য, ৪৪ তলা এই ভবনটিতে মরগ্যান স্ট্যানলি, এনএলএফ ও ব্ল্যাকস্টোনসহ একাধিক আন্তর্জাতিক কর্পোরেট সংস্থার প্রধান কার্যালয় রয়েছে। নিরাপত্তা হুমকির আশঙ্কায় ভবনের সব কর্মচারীকে দ্রুত সরিয়ে নেওয়া হয়।
এই ঘটনার তদন্তে ফেডারেল এবং সিটি পুলিশ যৌথভাবে কাজ করছে। এখনো হামলার সুনির্দিষ্ট কারণ জানা যায়নি, তবে হামলাকারীর মানসিক স্বাস্থ্য এবং গত কিছুদিনের গতিবিধি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনার পর নিউ ইয়র্কজুড়ে বর্ধিত নিরাপত্তা জারি করা হয়েছে।
সূত্র: রয়টার্স ও নিউ ইয়র্ক টাইমস




































